শিরোনাম :
প্রেমিকার বাড়ির সামনে বিষপানে প্রেমিকের মৃত্যু; বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য ‘শাড়ি ক্যানসার’ কেন হয়? তার উপসর্গই বা কী? জানালেন চিকিৎসক ডায়াবেটিকেরাও ভাত খেতে পারেন, তবে মানতে হবে কিছু নিয়ম মল্লিকার সঙ্গে চুমু বিতর্ক, মুখ দেখাদেখি বন্ধ কুড়ি বছর, সাক্ষাৎ পেয়ে কী করলেন ইমরান? ক্যাটরিনার জন্যই সলমনের সঙ্গে সম্পর্কে দূরত্ব, ইদে স্বামীকে নিয়ে ভাইজানের বাড়িতে আলিয়া! রাজশাহী মহানগরীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ২৬ ১৬ মাসের মেয়েকে বাড়িতে একা রেখে ছুটি কাটাতে যান মা, না খেয়ে, জল না পেয়ে মৃত্যু! সাজা যাবজ্জীবন রাজশাহীতে ট্রাকে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি, আটক ২ পুঠিয়ায় পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে গ্রেফতার ৩ ঈদের সাথে যুক্ত হওয়া নববর্ষের উচ্ছ্বাসে বিনোদন স্পট পরিপূর্ণ
বিনা অনুমতিতে রু‌মে ব‌সায় রোগীর মাথা ফাটালেন চিকিৎসক

বিনা অনুমতিতে রু‌মে ব‌সায় রোগীর মাথা ফাটালেন চিকিৎসক

মতিহার বার্তা ডেস্ক : চিকিৎসা নিতে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ বোধ করায় বিনা অনুমতিতে চিকিৎসকের কক্ষে বসার কারণে এক রোগীর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসক। সোমবার দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দন্ত বিভাগে এমন নির্মম ঘটনা ঘটে।

আহত অবস্থায় রোগীকে পুলিশ ও স্বজনরা উদ্ধার করে একই হাসপাতালে ভর্তি করে। জানা গেছে, নিষ্ঠুর এ চিকিৎসকের নাম একেএম আনিসুর রহমান বাবলু। সে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দন্ত বিভাগের আবাসিক সার্জন। আহত রোগীর নাম তরুন মিয়া (২৩)।

জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা থেকে দাঁতের চিকিৎসার জন্য সোমবার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দন্ত বিভাগে আসে এ তরুন। ঈশ্বরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী বলে স্বজনেরা জানান।

তরুন মিয়া অভিযোগ করেন, ‘সোমবার সকাল ১০টার দিকে হাসপাতালের দন্ত বিভাগের টিকিট কেটে লাইনে দাঁড়াই। ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ওই চিকিৎসক লাইনের ১৫-২০ জন রোগী দেখে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যান। এ সময় আমি লাইনে অপেক্ষমান রোগীদের সিরিয়ালে প্রথম রোগী আমিই ছিলাম। আধা ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও ডাক্তার না আসায় দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে অসহনীয় ব্যথা নিয়ে অবশেষে ওই চিকিৎসকের কক্ষে রোগীর চেয়ারে বসে অপেক্ষা করি।’

‘এরপর বেলা ১২টার দিকে ডা. বাবলু আসেন এবং আমি ভেতরে কেন বসে আছি, জানতে চান। আমি বলি, দাঁতের ব্যথা সহ্য করতে না পেরে আপনার রুমে এসে বসেছি। এক দুই কথায় তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় এবং আমার সাথে দুর্ব্যবহার শুরু করে। এক পর্যায়ে চিকিৎসক একেএম আনিসুর রহমান বাবলু তার কক্ষের দরজা বন্ধ করে আমাকে কিল-ঘুষি মারে। আমি দরজা খুলে রুম থেকে বের হয়ে যেতে চাইলে চেম্বারে কাঠের গোল টুল দিয়ে আঘাত করে মাথা ফাঁটিয়ে দেয়।’

‘পরে হাসপাতালে কর্তব্যরত আনসার, পুলিশ সদস্য ও রোগীর লোকজন আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালের ৮নং ওয়ার্ডে ভর্তি করে। আমার মাথায় দুটি সেলাই লেগেছে এবং হাতে ও বুকে আঘাত পেয়েছি। রক্তাক্ত অবস্থায় বিষয়টি হাসপাতালের উপ-পরিচালকে জানাই। উপ-পরিচালক আমাকে শান্তনা দিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন।’

রোগীর মাথা ফাঁটানোর অভিযোগ অস্বীকার করে ডা. একেএম আনিসুর রহমান বাবলু বলেন, ‘রোগী দেখার ফাঁকে বেলা ১১টার দিকে মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীদের একটি ক্লাস নিতে পাশের বিল্ডিংয়ে গেছিলাম। এসে দেখি সব রোগী লাইনে দাঁড়িয়ে আছে, অথচ ওই রোগী আমার কক্ষের ভেতরে বসে আছে। এ নিয়ে ওই রোগীর কাছে জানতে চাইলে সে প্রথমে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে।’

চিকিৎসক আরও বলেন, ‘এরপর কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সে খুব বাজে আচরণ করে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এবং শার্ট-প্যান্ট ছিঁড়ে যায়। ধাক্কাধাক্কির সময় আমার কক্ষের টেবিলের কোণায় লেগে আমার আঙ্গুল কেটে যায় এবং ওই রোগীও মেঝেতে পড়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরে আনসার ও পুলিশ ডেকে তার চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগে পাঠনো হয়।’

দন্ত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘কর্মচারীদের মাধ্যমে ঘটনার খবর শুনে আমি ওই চিকিৎসকের কক্ষে যাই। এ সময় ডা. বাবলু ঘটনাটি আমাকে বলেন।’ ঘটনাটি আসলেই অনাকাঙ্খিত বলেও তিনি জানান।

এমনটি হওয়া কাম্য নয় জানিয়ে বিভাগীয় প্রধান বলেন, ‘চিকিৎসক ও রোগীর মধ্যে হাতাহাতির একপর্যায়ে ওই রোগী পাকা মেঝেতে পড়ে গেলে তার মাথা ফেঁটে যায় বলে ডা. বাবলু জানায়।’

এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. লক্ষ্মী নারায়ণ মজুমদার বলেন, ‘মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়ে তরুন নামে এক রোগী ও তার স্বজন সোমবার দুপুর ১টার দিকে আমার কাছে এসে তাকে দন্ত বিভাগের চিকিৎসক ডা. বাবলু মারধর করেছে বলে অবহিত করেছেন। পরে তাকে শান্তনা দিয়ে পাঠিয়ে দেই।’

ওই চিকিৎসকের বিচার সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেলে ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

রোগীর চাচাতো ভাই মহিদুল ইসলাম জানান, পুলিশ সদস্যদের ফোন পেয়ে হাসপাতালে ছুটে এসে তরুনকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পাই। ডাক্তারের রুমে বসার অপরাধে একজন চিকিৎসক এভাবে রোগীদের গাঁয়ে হাত তুলতে পারে, এটা অকল্পনীয়। তিনি ওই চিকিৎসকের বিচার দাবি করেন। এ ঘটনায় তারা থানায় মামলা দায়ের করবেন বলেও জানান।

 মতিহার বার্তা ডট কম-০৯ জুলাই  ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply