মতিহার বার্তা ডেস্ক : একটি গুজবকে কেন্দ্র করে গত বেশ কয়েকদিন যাবৎ দেশে ব্যাপক হারে বেড়ে গিয়েছে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির সংখ্যা। সংবাদ পর্যালোচনায় দেখা যায়, এই গণপিটুনির ঘটনাগুলোতে মারা পড়ছেন প্রায় বেশিরভাগ নিরপরাধ মানুষ। যাদের প্রায় প্রত্যেকেই মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন। সন্দেহের বশেই তাদেরকে পিটুনি দিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে। তবে নেত্রকোণায় একজন ব্যক্তির হাতে থাকা ব্যাগ থেকে একটি বাচ্চার কাটা মাথা উদ্ধারকে কেন্দ্র করে গণপিটুনি দেয়া হয় তাকে। কাটা মাথা উদ্ধার করলেও প্রমাণ হয়নি যে তিনি এই বাচ্চার মাথাটি কেটেছেন। তাকেও তুমুল পিটুনি দিয়ে মেরে ফেলা হয়। এই ঘটনা বাদে আরো যাদেরকে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ছেলেধরার অভিযোগের সত্যতা মেলেনি।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সরকারের সবচেয়ে বড় বাজেটের প্রকল্প পদ্মা সেতুকে নিয়ে এই গুজব রটানো হয়। গুজবে বলা হয়, পদ্মা সেতুর জন্য লক্ষাধিক মানুষের কাটা মাথা লাগবে। যা পুরোটাই গুজব, কুসংস্কার। আর এই গুজবে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী শুরু হয় তোলপার। দেশের বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে খবর আসতে শুরু করে বিভিন্ন এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়েছেন অনেকেই। অনেকের আবার বিভিন্ন স্থান থেকে কাটা মাথা উদ্ধার করা হয়েছে। পরবর্তীতে এই ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই কাটা মাথার খবরগুলো বিভিন্ন দেশের সহিংস হামলার ঘটনার। আর সেই নিউজগুলো দেদারসে চালিয়ে দেয়া হয়েছে বাংলাদেশের মাথা কাটা ঘটনার নামে।
সম্প্রতি এই ঘটনার জের ধরে ২২ জুলাই বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সকল ইউনিট ও জেলা পুলিশ সুপারকে গুজবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ছেলেধরা সন্দেহে আইন নিজের হাতে তুলে কাউকে গণপিটুনি দেওয়া থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেছে সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়েছে, গণপিটুনি দিয়ে মানুষকে হত্যা করা ফৌজদারী অপরাধ। এই বিষয়ে দেশের সকল নাগরিকদের উদ্দেশ্যে করে সতর্ক বার্তা জারি করেছে সরকার। এছাড়াও ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনার পর আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে সদা সজাগ থাকার নির্দেশ জারি করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। দেশের সাধারণ জনগণকে উদ্দেশ্য করে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি না দিয়ে দ্রুত ৯৯৯ এ ফোন দেয়ার অনুরোধ করেছে সরকার।
মতিহার বার্তা ডট কম – ২৩ জুলাই, ২০১৯
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.