নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী জেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে পদ্মা নদীর চরশ্যামপুর ও চরখিদিরপুর বালুমহাল বন্ধ করে দেয়ার প্রতিবাদে সংশ্লিষ্ট ইজারাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স আমিন টেডার্সের প্রোপাইটার ও আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুল আলম বেন্টু। বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ প্রতিবাদ জানান। এসময় তিনি বলেছেন, ‘জেলা প্রশাসকের এই বেআইনী অভিযানের বিরুদ্ধে আমি উচ্চ আদালতে যাবো।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আজিজুল আলম বেন্টু বলেন, ‘চলতি বছর দরপত্র প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স আমিন টেডার্স’ পদ্মা নদীর চরশ্যামপুর ও চরখিদিরপুর মৌজার ১২০ একরের বালুুমহাল দুই কোটি দুই লাখ টাকায় ইজারা পায়। দরপত্রের নিয়ম অনুযায়ী ইজারার অর্থ জেলা প্রশাসনে পরিশোধ করা হয়। গত ১৪ এপ্রিল জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা লাল নিশান টাঙ্গিয়ে দিয়ে চিহ্নিত করে এই বালুমহালটি বুঝিয়ে দেয়া হয়।
এর পর থেকে জেলা প্রশাসনের বুঝিয়ে দেয়া লাল নিশানের অন্তত ৫০০ গজ ভিতর চরশ্যামপুর মৌজা থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছিল। তবে সেখান থেকে বালু উত্তোলন করে ইজারা নিয়মের (সুবিধামত স্থান দিয়ে বালু সরবরাহ করতে পারবে) মধ্যে বালু পরিবহনের জন্য কাজলা মৌজার উপর তালাইমারি এলাকার সড়ক ব্যবহার করা হয়। যা ইজারার শর্তের মধ্যেই রয়েছে। বালু পরিবহনের জন্য কাজলা মৌজার তালাইমারি সড়ক রাজশাহী সিটি করপোরেশন থেকে টোল ইজারাও নেয়া হয়। অথচ গত বুধবার দুপুরের পর আমার ইজারা নেয়া চরশ্যামপুর ও চরখিদিরপুর মৌজা নিয়ে গঠিত বৈধ বালুমহালের বালু উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসনের পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সঙ্গে সেখান থেকে বালু উত্তোলনে নিয়োজিত আটজন শ্রমিককে আটক করে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে।
এদের মধ্যে ছয়জনকে একমাস ও দুইজনকে ১৫ দিন করে সাজা দেয়া হয়। একই সঙ্গে সেখানে হাইকোর্টে রিট ও আদেশের বরাদ দিয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তির সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গত ২০ জুলাই রাজশাহী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। সেই প্রতিবেদনে বালুমহালের সীমানার মধ্যে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আর সেটি দেখভালের জন্য পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। আগামী ২০ আগস্ট এ নিয়ে হাইকোর্টে শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। কিন্তু এর আগেই হঠাৎ করে কেন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচলানা করে বালু উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ করে দিয়ে আটজন শ্রমিককে সাজা কেন দেয়া হয়েছে তা আমার বোধগম্য নয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বালু ব্যবসায়ী মাহাফুজুর রহমান, বাবোর আলী, সাইদুর রহমান বাদল, মাসাদুল ইসলাম স্বপন, আব্দুর সাত্তার, জহির উদ্দিন কেতু এবং মেসার্স আমিন টেডার্সের আইনজীবী তানভির আহমেদ।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুল আলম বেন্টুর বিরুদ্ধে নগরীর তালাইমারীতে অবৈধভাবে বালুঘাট গড়ে তুলে বালু ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগ করা হয় সম্প্রতি। এ নিয়ে উচ্চ আদালতে একটি আপিল আবেদন করেন আরেক বালু ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার বালুঘাটটি বন্ধ করে দেয় প্রশাসন।
মতিহার বার্তা ডট কম ২৬ জুলাই ২০১৯
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.