আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দীর্ঘদিন ধরে ইরান এবং পাকিস্তানের সীমান্ত নিয়ে একটা সমস্যা ছিল। কারণ দুদেশের সীমান্তের বেশিরভাগ অংশই ছিল একেবারে খোলা। ফলে মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন সমস্যার মুখে পড়তে হত ইরান এবং পাকিস্তানকে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যার মধ্যে পড়তে হত দুদেশকে। এমনকি ইরানের মাটিতে জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়ে একাধিকবার পাকিস্তানকে দুষেছে তেহরান।
সম্প্রতি ইরানি সেনাবাহিনীর উপর আত্মঘাতী হামলার ঘটনাতেও পাক জঙ্গি গোষ্ঠীর যোগ পাওয়া যায়। আর এরপরেই সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটসাঁট করতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে পাকিস্তানকে চাপ দিতে থাকে তেহরান। অবশেষে সেই সমস্যা কাটাতে উদোত হল ইরান এবং পাকিস্তান। দীর্ঘদিন ধরে খালি অবস্থায় পড়ে থাকা সীমান্তে বেড়া দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। প্রায় ৯৫০ কিলোমিটার সীমান্তে এই বেড়া দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কমান্ডার মোয়াজ্জাম জান আনসারি জানিয়েছেন, সীমান্তে কোনও বেড়া না থাকায় নিরাপত্তাজনিত সমস্যা মুখে পড়তে হত ইসলামাবাদকে। দীর্ঘদিন ধরেই এই বিষয়ে আলোচনা চলছিল। কিন্তু অবশেষে এই বেড়া দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে পাকিস্তান সংসদকে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে রিপোর্টও দিয়েছেন এই সেনা আধিকারিক।
পাকিস্তান সংসদে দেওয়া তথ্যে মোয়াজ্জাম সাহেব জানিয়েছেন, পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশ এবং ইরানের সিস্তান-বালুচিস্তান প্রদেশ সংলগ্ন এলাকা দীর্ঘদিন বেড়া শূন্য অবস্থায় পড়ে ছিল। আর সেই কারণে সীমান্তে পাকাপাকিভাবে বেড়া দেওয়ার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। তাঁর দাবি, দীর্ঘ এই অঞ্চল যা কিনা ইরান এবং পাকিস্তানকে বিভুক্ত করছে তা সম্পূর্ণ বেড়া দিতে তিন থেকে চার বছর সময় লেগে যাবে। যদিও যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতেই এই কাজ চলবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
পাশাপাশি সেনাবাহিনীর এই কর্তা আরও জানান, ইরান সীমান্ত সংলগ্ন বালুচিস্তানে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী সম্প্রতি একটি অভিযান চালিয়েছে। আর এই অভিযানে ১৫ জঙ্গি খতম হয়েছে বলে দাবি তাঁর। অন্যদিকে পাকিস্তান বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি জানিয়েছেন, ইরান সীমান্তে সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ছটি পদক্ষেপ নিয়েছে পাকিস্তান। ‘শান্তির সীমান্ত’ নামের প্রকল্পের আওতায় এই সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান তিনি। এছাড়াও সীমান্তের যে সব পথে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি অহরহ আনাগোনা করে সে সমস্ত জায়গায় বেড়া দেওয়ার একটি প্রকল্পও নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গত এপ্রিল মাসে তেহরান সফর করেন। সে সময় ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছিলেন দেশ দুটি ‘যৌথ র্যাপিড রিঅ্যাকশন ফোর্স’ গঠনে সম্মত হয়েছে। সীমান্ত ক্রমাগত বেড়ে চলা সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা করার লক্ষ্যেই এই ফোর্স গঠন করা হচ্ছে।
মতিহার বার্তা ডট কম ১৬ আগস্ট ২০১৯
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.