শিরোনাম :
ফ্রিজ়ে রাখা দুধ গরম করলেই ছানা হয়ে যায়! ফেলে না দিয়ে বানিয়ে ফেলুন নতুন ৫ খাবার গোপন করেছিলেন বিয়ে, প্রেমে পড়েছিলেন সহ-অভিনেত্রীর, বহুকামিতা নিয়ে প্রচারে থাকেন বলি নায়িকা ‘আল্লার কাছে পাঠিয়ে দেব’, ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্ডোগানের বার্তা রাশিয়ার পরে এ বার আইএসের হানা গৃহযুদ্ধ দীর্ণ সিরিয়ায়, বিস্ফোরণ, গুলিতে নিহত অন্তত ১১ রুয়েটের সাবেক ভিসি ও রেজিস্টারের বিরুদ্ধে মামলা করলো দুদক পাকিস্তানে আত্মঘাতী হামলায় মৃত ৬ বিশ্বসুন্দরীমঞ্চে এই প্রথম মুসলিমবিশ্বের প্রতিনিধি… দেখে নিন আপনি বুদ্ধিমান কী না! দাঁত ব্রাশ করতে গিয়ে পানিতে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু কাজে যাওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু
ধর্ষকের সঙ্গে ‘জোর করে’ গৃহবধূকে বিয়ে দিলেন ওসি!

ধর্ষকের সঙ্গে ‘জোর করে’ গৃহবধূকে বিয়ে দিলেন ওসি!

মতিহার বার্তা ডেস্ক: গণধর্ষণের শিকার হওয়া গৃহবধূ মামলা করতে গিয়েছিলেন থানায়। কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি। বরং উল্টে গণধর্ষণে অংশ নেয়া ৫ জনের মধ্যে থেকে একজনের সঙ্গে এক প্রকার জোর করেই থানাতেই বিয়ে দেয়া হয়েছে তাকে।

ওই গৃহবধূর স্বামী রয়েছে। স্বামীর অনুমতিও নেয়া হয়নি। কোনো কথা শোনা হয়নি ধর্ষিত গৃহবধূর। এমন অভিযোগ করেছেন নির্যাতনের শিকার ৩ সন্তানের জননী ওই গৃহবধূ ও তার বাবা।

 তবে, পুলিশ এ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তারা বলছেন, ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে, তবে থানায় নয়। স্থানীয় প্রভাবশালীদের মধ্যস্থতায় এই বিয়ে দেয়া হয়েছে।

গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে পাবনা সদর থানায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে পাবনায় জনসাধারণ ও নাগরিক সমাজের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে।

গৃহবধূর লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয়রা জানান, সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের সাহাপুর যশোদল গ্রামে ওই নারী স্বামী ও তিন সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছিল। গত ২৯ আগষ্ট রাতে একই গ্রামের আকবর আলীর ছেলে রাসেল আহমেদ চার সহযোগীকে নিয়ে ওই নারীকে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

টানা কয়েকদিন ধর্ষণের পর নির্যাতিতা গৃহবধূ কৌশলে পালিয়ে স্বজনদের বিষয়টি জানালে তারা গত ৫ সেপ্টেম্বর পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে গৃহবধূর নিজেই বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ রাসেলকে আটক করে। তবে বিষয়টি মামলা হিসেবে থানা পুলিশ এজহারভুক্ত না করে স্থানীয় একটি চক্রের মধ্যস্থতায় পূর্বের স্বামীকে তালাক দিয়ে ধর্ষক রাসেলের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে ঘটনাটি নিষ্পত্তির চেষ্টা করে।

গৃহবধূর বাবা বলেন, ‘আমার মেয়ে অপহৃত হওয়ার কয়েকদিন পর তাকে খুঁজে পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তার কাছে ঘটনার বিস্তারিত শুনে থানায় অভিযোগ দেই। পুলিশ আমাদের অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত না করে মেয়েকে থানা হেফাজতে রেখে আমাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। পরে জানতে পারি থানায় রাসেলের সাথে তার বিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বামী সন্তান থাকা অবস্থায় রাসেলের সাথে তাকে কিভাবে বিয়ে দেয়া সম্ভব তা আমাদের বোধগম্য নয়। এ ঘটনায় আমরা সামাজিকভাবে অপদস্থ হয়েছি। আমরা ধর্ষকদের বিচার চাই।’

দাপুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য দৌলত আলী বলেন, ‘গণধর্ষণের অভিযোগে সদর থানার উপ-পরিদর্শক একরামুল হক আমার উপস্থিতিতে রাসেলকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। পরে শুনি থানায় তাদের বিয়ে হয়েছে। এই বিয়ে কোনোভাবেই শরিয়ত সম্মত নয়।’

একাধিক এলাকাবাসী ক্ষোভের সাথে বলেন, ‘স্বামী ও তিন সন্তান থাকা অবস্থায় থানা পুলিশ কি করে একই সময়ে তালাক ও বিয়ে দিল। ৫ জন ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত হলেও একজনের সাথে কিভাবে বিয়ে দিল পুলিশ প্রশ্ন গ্রামবাসীর। তারা ধর্ষণের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করেন।’

নির্যাতিত গৃহবধূ বলেন, ‘রাসেলকে আটক করে আনার পর ওসি স্যার নিজেই থানায় কাজী ডেকে এনে আমাদের বিয়ে দিয়েছেন।’

এদিকে, ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত রাসেল আহমেদ বলেন, ‘আমি ধর্ষণের সাথে জড়িত নই, আমাকে পুলিশ মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার করে মামলা ও রিমান্ডের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়া হয়েছে, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। থানায় আমাদের বিয়ের সময় এসআই একরাম আমাদের ছবিও তোলেন।’

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে মানবাধিকারকর্মী এড. কামরুন্নাহার জলি বলেন, ধর্ষণের বিচার না করে, ধর্ষকের সাথে বিয়ে দেওয়া সামাজিক মিমাংসার নামে প্রহসন। থানায় ক্যাম্পাসে এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যদি উভয়ের সম্মতিতেও এই বিয়ে হয়, তবুও তা ধর্ষকদের উৎসাহিত করার সামিল। যদি সত্যিই এমন ঘটনা ঘটে, তাহলে এর সাথে জড়িত সবারই দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুল হক বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ওই গৃহবধূ প্রথমে ধর্ষণের অভিযোগ দিলেও পরে তা প্রত্যাহার করে নেন। ওই দিন রাতে তাদের বিয়ের কথা শুনেছি, তবে তা থানায় কোনো বিয়ের ঘটনা ঘটেনি। আমাদের এর সাথে জড়িত থাকার প্রশ্নই ওঠে না।

পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমি যেহেতু জানতে পেরেছি, খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সুত্র: সময়ের কন্ঠ

মতিহার বার্তা ডট কম – ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply