শিরোনাম :
গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার! ইজ়রায়েলকে জবাব দিতে সর্বোচ্চ নেতার ফতোয়ার কথাও ভুলতে চায় ইরান, এ বার কি পরমাণু যুদ্ধ?
বিএমডিএ’র টাকা জালিয়াতি ও নথিপত্র পোড়ার ঘটনায় অভিযুক্তদের রক্ষায় তৎপর সিন্ডিকেট

বিএমডিএ’র টাকা জালিয়াতি ও নথিপত্র পোড়ার ঘটনায় অভিযুক্তদের রক্ষায় তৎপর সিন্ডিকেট

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০১৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর রাতে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) গোদাগাড়ী জোন-২ এর ক্যাশ শাখায় রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

আগুনে কার্যালয়টির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুড়ে যায়। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত কমিটি এ ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে আরো বড় দুর্নীতি ও জালিয়াতির প্রমাণ পায়।

বিএমডিএর গোদাগাড়ী জোন-২ এর ক্যাশ শাখায় রহস্যজনক আগুনে নথিপত্র পুড়ে যাওয়া এবং বিপুল পরিমাণ টাকা জালিয়াতির ঘটনায় অভিযুক্তদের রক্ষায় বর্তমানে নানা তৎপরতায় লিপ্ত একটি সিন্ডিকেট চক্র। আর এসব ঘটনার সাথে জড়িত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নিতে দীর্ঘ কালক্ষেপণে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, গোদাগাড়ী জোন-২ এর ক্যাশ শাখায় রহস্যজনক আগুনে নথিপত্র পুড়ে যাওয়া এবং বিপুল পরিমাণ টাকা জালিয়াতির ঘটনায় যারা মূল অভিযুক্ত তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় বা আইনি কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ঘটনা সম্পর্কে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও জবাবদিহিতার আওতায় আনা হয়নি মূল অভিযুক্তদের।

ওই সময় গোদাগাড়ী জোনে দায়িত্বে ছিলেন এমন একাধিক সহকারী প্রকৌশলী ও উপসহকারী প্রকৌশলী বহাল তবিয়তে রয়েছেন। তারা বিএমডিএর বিভিন্ন জোনে কর্মরত আছেন। আর এসব ঘটনায় জড়িত রয়েছেন এমন অভিযোগে সহকারী কোষাধ্যক্ষ মো: খাবিরুদ্দিন ও সহকারী হিসাব রক্ষক মতিউর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

অথচ তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন। একই সাথে একটি সিন্ডিকেট চক্র বর্তমানে মূল অভিযুক্তদের রক্ষায় নানা তৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ বিবরণীতে আরো উল্লেখ করা হয়, বিএমডিএর গোদাগাড়ী জোন-২ এর ক্যাশ শাখায় আগুনে নথিপত্র পুড়ে যাওয়ায় ২৭-১২-২০১৬ তারিখে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত কমিটি গোদাগাড়ী জোন-২ দফতরের ক্যাশ শাখা তদন্ত করে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করে।

প্রতিবেদন থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, গোদাগাড়ী জোন-২ এর ক্যাশ শাখার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা অবস্থায় সহকারী কোষাধ্যক্ষ মো: খাবিরুদ্দিন এমভিইউ ডিলারদের কাছ থেকে আয়কর বাবদ গৃহীত অর্থ ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কর্তনকৃত ভ্যাট বা আয়কর বাবদ মোট চার লাখ ৪৪ হাজার ৮৩৫ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান না করে আত্মসাৎ করেন।

ফলে এ কার্যালয়ের ০৫-০২-২০১৭ তারিখের ৫৬৪২ নম্বর আদেশ মোতাবেক তাকে কর্তৃপক্ষের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, প্রাপ্ত তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, মো: খাবিরুদ্দিন ১৮০টি চেকে ট্যাম্পারিং বা জালিয়াতি করে ৩৯ লাখ ৪৫ হাজার ১৫২ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।

এ ছাড়া ভ্যাট ও আয়কর বাবদ ১২ লাখ ৬০ হাজার ৩০০ টাকা ও খাবার পানি স্থাপনার দুই লাখ ৭৮ হাজার ৪৬৬ টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। এভাবে বিভিন্ন খাত থেকে খাবিরুদ্দিন মোট ৫৬ লাখ এক হাজার ৮৪৫ টাকা আত্মসাৎ করেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনের বরাদ দিয়ে অভিযোগ বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে সহকারী কোষাধ্যক্ষ (সাময়িক বরখাস্তকৃত) মো: খাবিরুদ্দিন সব অভিযোগ অস্বীকার করে নয়া দিগন্তকে বলেন, এসব ঘটনার সাথে আমি জড়িত না। তবে কোনো অনিয়ম করে থাকলে তৎকালীন সহকারী প্রকৌশলী জি এফ এম হাসনুল ইসলামের নির্দেশে তিনি তা করেছেন। এ ছাড়া চেকে তার কোনো স্বাক্ষর ছিল না বলেও দাবি করেন তিনি।
অপর দিকে এসব ঘটনা তদন্তে সর্বশেষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় ২০১৮ সালের ৬ মে। তৎকালীন মনিটরিং অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আশরাফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে জানা গেছে, বিএমডিএর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পরিকল্পনা) শামসুল হোদাকে প্রধান করে এই তদন্ত কমিটি করা হয়।

এ ব্যাপারে বিএমডিএর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদ বলেন, অভিযুক্ত খাবিরুদ্দিন ও মতিউর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া দায়িত্বে অবহেলার জন্য তিন সহকারী প্রকৌশলীকে তলব করা হয়। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তদন্তে বিলম্ব ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের সম্পর্কে ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক বলেন, আমরা ফৌজদারি মামলা করতে পারি না। তাই দুদককে বিষয়টি তদন্ত করে মামলা করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।

তবে এ ব্যাপারে তৎকালীন সহকারী প্রকৌশলী জি এফ এম হাসনুল ইসলাম ও সহকারী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেনের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মতিহার বার্তা ডট কম – ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply