শিরোনাম :
‘শাড়ি ক্যানসার’ কেন হয়? তার উপসর্গই বা কী? জানালেন চিকিৎসক ডায়াবেটিকেরাও ভাত খেতে পারেন, তবে মানতে হবে কিছু নিয়ম মল্লিকার সঙ্গে চুমু বিতর্ক, মুখ দেখাদেখি বন্ধ কুড়ি বছর, সাক্ষাৎ পেয়ে কী করলেন ইমরান? ক্যাটরিনার জন্যই সলমনের সঙ্গে সম্পর্কে দূরত্ব, ইদে স্বামীকে নিয়ে ভাইজানের বাড়িতে আলিয়া! রাজশাহী মহানগরীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ২৬ ১৬ মাসের মেয়েকে বাড়িতে একা রেখে ছুটি কাটাতে যান মা, না খেয়ে, জল না পেয়ে মৃত্যু! সাজা যাবজ্জীবন রাজশাহীতে ট্রাকে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি, আটক ২ পুঠিয়ায় পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে গ্রেফতার ৩ ঈদের সাথে যুক্ত হওয়া নববর্ষের উচ্ছ্বাসে বিনোদন স্পট পরিপূর্ণ মহানগরীতে সাজা-সহ ৫টি ওয়ারেন্টভূক্ত পলাতক আসামী গ্রেফতার, পুলিশের উপর হামলা!
রাজশাহীতে রুয়েট কর্মকর্তা হারুনের নিয়োগে অনিয়মের চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস

রাজশাহীতে রুয়েট কর্মকর্তা হারুনের নিয়োগে অনিয়মের চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস

রাজশাহীতে রুয়েট কর্মকর্তা হারুনের নিয়োগে অনিয়মের চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস
রাজশাহীতে রুয়েট কর্মকর্তা হারুনের নিয়োগে অনিয়মের চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) কর্মকর্তা নিয়োগে অনিয়মের চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস হয়েছে। নিয়ম-নীতি ভেঙে সহকারী প্রকৌশলী (যন্ত্র) পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে রুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক হারুন অর রশীদকে। নিয়োগের বছর না ঘুরতেই গোটা রুয়েটকেই নিজের কব্জায় নিয়েছেন ভিসির ডান হাত হিসেবে পরিচিত এই হারুন। প্রভাব খাটিয়ে হারুন রুয়েট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাও হয়েছেন।

সিলেকশন কমিটির সদস্য অধ্যাপক শহীদুর রহমান বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, আমি রুয়েটে কোনো কর্মকর্তা নিয়োগ বোর্ডের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলাম না। কোনো চিঠিও পাইনি ওই সময়। কিন্তু ওই নিয়োগ বোর্ডের সদস্য হিসেবে আমার নাম কীভাবে আসলো তাও জানা নেই !

এ বিষয়ে রুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শামীমুর রহমান বলেন, গুরুতর অনিয়মের মাধ্যমে এ নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কর্মকর্তা সিলেকশন কমিটি সিন্ডিকেটের অনুমোদন ছাড়াই কীভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে হারুনকে চাকরি দিলো এটি আমার বোধগম্য নয়।

নথিপত্র বিশ্লেষণে আরো দেখা যায়, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও প্রকৌশলী নিয়োগে ২০১৮ সালের ২৭ আগস্ট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন রুয়েটের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার। এতে রাজস্বখাতে একজন সহকারী প্রকৌশলী (যন্ত্র) (উপ-পরিচালক (প ও উ) পদের বিপরীতে) নিয়োগের জন্যও দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। সহকারী প্রকৌশলী (যন্ত্র) পদে ১২জন প্রার্থী নির্বাচনী পরীক্ষার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হন। এর মধ্যে হারুন অর রশীদসহ ১১জন প্রার্থী ২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর লিখিত/মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন।

কিন্তু ১৪ অক্টোবর ২০১৮ রুয়েটের ৮৩তম সিন্ডিকেট সভার কার্যবিবরণী সংক্রান্ত ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে (স্মারক নং ১২৬১/১৫) কর্মকর্তা পদে নিয়োগের জন্য ২বছর মেয়াদে সিলেকশন কমিটির সদস্য হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক শহীদুর রহমান ও দিনাজপুরের হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক আফজাল হোসেনকে মনোনীত করা হয়।

তবে ২০১৮ সালের ৫নভেম্বর ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে অধ্যাপক শহীদুর রহমান (স্মারক নং ১৫৪৭) অধ্যাপক আফজাল হোসেনকে (স্মারক নং ১৫৪৮) জানানো হয়, তারা সিলেকশন কমিটির সদস্য। তাদের মেয়াদ ২০১৮সালের ২২ সেপ্টেম্বর হতে দু’বছর। এছাড়া, রুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ও পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক রবিউল আওয়ালকে কর্মকর্তা নিয়োগে সিলেকশন কমিটির সদস্য মনোনীত করে ১২ নভেম্বর চিঠি (স্মারক নং ১৬৪২) দেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সেলিম হোসেন। তার কার্যকাল ধরা হয়েছে ২০১৮সালের ৯ অক্টোবর হতে দু’বছর।

এর আগে ৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত রুয়েটের ৯৩তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় অধ্যাপক রবিউল আউয়ালকে সিলেকশন কমিটির সদস্য মনোনীত করা হয়। তবে অধ্যাপক শহীদুর রহমান ও অধ্যাপক আফজালের মনোনয়ন একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদিত হলেও অধ্যাপক রবিউল আউয়ালের মনোনয়ন কেবলমাত্র একাডেমিক কাউন্সিল অনুমোদিত। সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদন ছাড়াই তাকে সিলেকশন কমিটির সদস্য মনোনয়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সিলেকশন কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. মো. রবিউল আউয়াল, অধ্যাপক শহীদুর রহমান ও অধ্যাপক আফজাল হোসেনকে চিঠি দেয়ার আগেই হারুনের নিয়োগ বোর্ড হয়েছে। অর্থাৎ হারুনের নিয়োগ বোর্ড হয়েছে গত বছরের ১৩ অক্টোবর। কিন্তু সিলেকশন কমিটির সদস্য অধ্যাপক শহীদুর ও অধ্যাপক আফজালকে চিঠি দেয়া হয়েছে এর ২২দিন পর। আর আরেক সদস্য অধ্যাপক রবিউলকে চিঠি দেয়া হয়েছে ২৯দিন পর।

রুয়েটের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সহকারী রেজিস্ট্রার জানান, এ পদের নির্বাচনী পরীক্ষায় যখন সিলেকশন কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন তখন পর্যন্ত তাদের বৈধতা ছিল না। অথচ নিয়োগবিধি ভেঙে তারা ওই বোর্ডের সদস্য হিসেবেই কাজ করেছেন। এই সিলেকশন কমিটির সুপারিশেই হারুন অর রশীদের নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে। কাজেই হারুনের নিয়োগ নিয়ে গুরুতর অনিয়ম হয়েছে। যা রুয়েটের আইনের পরিপন্থী।

সিলেকশন কমিটির অন্যতম সদস্য অধ্যাপক রবিউল আওয়ালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সরাসরি অফিসে গিয়ে কথা বলার পরামর্শ দেন। মোবাইল ফোনে তিনি কোনো কথা বলবেন না বলেও জানান।

ক্যাম্পাসের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চাকরি পেয়েই ক্যাম্পাসে আরো ‘শক্তিমান’ হয়ে ওঠেন হারুন। কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পাওয়ার মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে রুয়েট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে সহ-সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হন হারুন। তার চাপে প্রতিদ্বদ্বী প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন। ২০১৯ সালের ২০ মার্চ ঘোষিত নির্বাচনী ফলাফলে দেখা যায়, হারুনসহ বিনা প্রতিদ্বদ্বিতায় তার পূর্ণাঙ্গ প্যানেল নির্বাচিত হয়েছে।

হারুনের লম্বা হাত এখানেই শেষ নয়। কর্মকর্তা হয়েও বিভিন্ন নামে রুয়েটেই ঠিকাদারী করে যাচ্ছেন। তিনি টেন্ডার, ক্রয় এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন সংক্রান্ত অন্তত ৮টি কমিটির সদস্য।

এ ব্যাপারে রুয়েটের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের সাথে কথা বলতে তাঁর দপ্তরে গেলে জানানো হয়, উপাচার্যের সাথে বৈঠকে আছেন তিনি। পরে কয়েক দফা মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। মোবাইলে এসএমএস পাঠানো হলে তাতেও সাড়া দেন নি তিনি।

মতিহার বার্তা ডট কম – ০২ নভেম্বর ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply