শিরোনাম :
তরমুজ শুধু খেলে হবে না, গরমে মাখতেও পারেন লজ্জা ঢাকতে শেষমেশ গদি জড়িয়ে ছুটলেন উরফি! ভিডিয়ো ফাঁস হতেই চার দিকে শুরু শোরগোল কাফতান পরা মানেই কি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবরে সিলমোহর? প্রশ্ন তুললেন পরিণীতি চোপড়া অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করে শ্রেণি বৈষম্য করেছে রাবি প্রশাসন! তানোর ইউএনও’র বিরুদ্ধে শিক্ষকের মামলা, তোলপাড় তরুণী সন্ধ্যা রানী হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন; সৎ ভাই ও তার বন্ধু গ্রেফতার রাজশাহী বিভাগীয় তায়কোয়ানদো এসোসিয়েশনের ইফতার ও দোয়া মাহফিল- ২০২৪ রাজশাহী মহানগরীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ২১ মহানগরীর ছোটবনগ্রামে লোন দেওয়ার নামে প্রতারণা, প্রতারক তাওহীদ খান আটক নৌবাহিনীর প্রধানের সাথে রাসিক মেয়রের সাক্ষাৎ ও মতবিনিময়
দুর্নীতির দায়ে বরখাস্তকৃতরা বিএমডিএতে ফিরতে মরিয়া

দুর্নীতির দায়ে বরখাস্তকৃতরা বিএমডিএতে ফিরতে মরিয়া

দুর্নীতির দায়ে বরখাস্তকৃতরা বিএমডিএতে ফিরতে মরিয়া
দুর্নীতির দায়ে বরখাস্তকৃতরা বিএমডিএতে ফিরতে মরিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক: দুর্নীতির দায়ে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) সহকারী হিসাব রক্ষক মতিউর রহমান ও সহকারী কোষাধ্যক্ষ খাবিরুদ্দিন। তারা দুজন এখন স্বপদে ফিরতে মরিয়া। এনিয়ে তারা বিএমডিএ নিয়ে অপপ্রচারে লিপ্ত। এই দুজনের সাথে যুক্ত হয়েছেন সহকারী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন ও জিএফএম হাসনুল ইসলাম।

অভিযোগ রয়েছে, বিএমডিএর গোদাগাড়ী জোন-২ কার্যালয়ের চেক জালিয়াতির মাধ্যমে এই চারজন প্রায় ৫৯ লাখ টাকা আত্মসাত করেন।দুই দফা তদন্ত করে তাদের সম্পৃক্ততা পায় বিএমডিএর তদন্ত কমিটি। পরে কৃষি মন্ত্রনালয়ের তদন্তেও তাদের সম্পৃক্ততা উঠে আসে।

 

তারপরও এখনো স্বপদে বহাল আনোয়ার হোসেন ও জিএফএম হাসনুল ইসলাম। অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন নওগাঁর আত্রাই এবং জিএফএম হাসনুল ইসলাম রাজশাহীর মোহনপুরে বিএমডিএ কার্যালয়ে কর্মরত।

তবে ২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি খবিরুদ্দিনকে এবং একই বছরের ৮ নভেম্বর মতিউর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিএমডিএ। এখনো এ দুজন সাময়িক বরখাস্ত রয়েছেন।এই চার জনের নামে মামলা দায়েরের সুপারিশ করেছিলো কৃষি মন্ত্রনালয়। সেই সুপারিশও বাস্তবায়নি করেনি বিএমডিএ।

জানা গেছে, ১৮১ টি চেক টেম্পারিং করেছিলেন এই চারজন। ১৫৪ টাকার চেক টেম্পারিংয়ের মাধ্যমে করা হয়েছে ৮৯ হাজার ১৫৪ টাকা, ৪৫০ টাকার চেক করা হয়েছে এক লাখ ৪৫০ টাকা ও ৬২১ টাকার চেকে লেখা হয়েছে এক লাখ ৬২১ টাকা।

এভাবেই ২০১১-২০১২ অর্থবছর হতে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের বিভিন্ন সময়ে ব্যাংক থেকে তুলে নেয়া হয়েছে ৫৮লাখ ১২হাজার ৩২১টাকা। তবে চেকের মুড়ির অংশগুলোতে ঠিকঠাক রয়েছে প্রকৃত টাকার অংক। জালিয়াতি ঢাকতে গোদাগাড়ী জোন-২ কার্যালয়ে আগুন লাগিয়ে নথিপত্র পড়িয়ে দেয় চক্রটি।

ঘটনা গুরুতর হওয়ায় প্রথমে বিএমডিএ দু দফা তদন্ত করে। পরে অধিকতর তদন্ত করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি। বিএমডিএ অধিকতর ৬৫৭ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনে জালিয়াতিতে এই চার জনের সম্পৃক্ততা উঠে আসে। এরপর অভিযুক্ত চার জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করে কমিটিগুলো।

এ ঘটনায় ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি অভিযুক্ত খাবিরুদ্দিন ও মতিউর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কিন্তু অভিযুক্ত সহকারী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন ও জিএফএম হাসনুল ইসলাম এখনো বহাল তবিয়তে।

এদিকে, অনুসন্ধানে জানা গেছে, অভিযুক্ত সহকারী হিসাবরক্ষক মতিউর রহমান সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক ড. এম আসাদুজ্জামানের আপন চাচাতো ভাই। ১৯৯৪সালে তিনি বিএমডিএতে মতিউর রহমানকে নিয়োগ দেন। ওই বছরের ২৮ অক্টোবর মতিউর রহমান যোগদান করেন।

অভিযুক্ত বাকি তিন জনেরও নিয়োগ দিয়েছেন ড. এম আসাদুজ্জামান। এদের মধ্যে আনোয়ার হোসেন বাদ দিয়ে বাকি তিন জনেরই বাড়ি তার নিজ এলাকা গোদাগাড়ীতে। এখন অনিয়মমে অভিযুক্ত এই চার জনকে রক্ষায় পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছেন সাবেক এই কর্মকর্তা ড. এম আসাদুজ্জামান। এই বিষয়ে জানতে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সংস্থাটির কর্মীরা জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে সংস্থার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক আবদুর রশীদ। তার অনড় অবস্থানের কারণেই শাস্তির মুখোমুখি পড়তে যাচ্ছেন অভিযুক্তরা।

তাছাড়া আবদুর রশীদ সংস্থার আর্থিক কর্মকান্ডে এনেছেন স্বচ্ছতা। এতে বেকায়দায় পড়েছেন অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তারা একজোট হয়ে আবদুর রশীদকে সরাতে মরিয়া।

এই চার জনের অনিয়ম বিষয়ে বিএমডিএ’র অডিট অফিসার বাসুদেব চন্দ্র মহন্ত জানিয়েছেন, চেক টেম্পারিংয়ের প্রমাণাদি ধ্বংষ করতে খাবিরুদ্দিন আগুন লাগিয়েছিল বলে প্রমাণ মিলেছে তিনটি তদন্ত কমিটির রিপোর্টেই। প্রথম টেম্পারিং করেছিল মতিউর। এরপর খাবিরুদ্দিনও টেম্বারিং করেন।

অভিযুক্ত খাবিরুদ্দিন ও মতিউর রহমান তদন্ত কমিটিগুলোর কাছে নিজেদের দায় স্বীকার করেছেন। তবে তাদের দাবি, এর পেছনে ছিলেন তৎকালীন দুই সহকারী প্রকৌশলীও।

এবিষয়ে মতিউর বলেন, প্রায় তিন বছর ধরে আমাকে শাস্তি দিয়ে এক রকম ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আমি এর নিষ্পত্তি চাই। এজন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ে আবেদনও করেছি।

তার দাবি, তৎকালীন সহকারী প্রকৌশলীর নির্দেশেই তিনি একাজ করেছিলেন। তিনি সেই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে রহস্যজনক কারণে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। খাবিরুদ্দিনের দাবিও প্রায় একই। তবে স্বপদে ফিরতে অপপ্রচারের অভিযোগ অস্বীকার করেন তারা।

এদিকে, জালিয়াতে শাস্তির কবলে পড়ার পরও পিএফ ফান্ড থেকে খাবিরুদ্দিনকে এক লাখ ৯০ হাজার টাকা ঋণ দিয়েছে বিএমডিএ। সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার পরও কীভাবে ঋণ পেলেন তা নিয়েও অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন।

তবে সংস্থাটির ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক আবদুর রশীদ বলছেন, তদন্ত প্রতিবেদন এখনো পরিচালনা পর্ষদের সভায় উপস্থাপিত না হওয়ায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত অ্যাকশন নেয়া হয়নি। এছাড়া খাবিরুদ্দিন বরখাস্ত হওয়ার আগেই ঋণের আবেদন করেছিল। তাই ঋণ পেয়েছে।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply