শিরোনাম :
প্রেমিকার বাড়ির সামনে বিষপানে প্রেমিকের মৃত্যু; বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য ‘শাড়ি ক্যানসার’ কেন হয়? তার উপসর্গই বা কী? জানালেন চিকিৎসক ডায়াবেটিকেরাও ভাত খেতে পারেন, তবে মানতে হবে কিছু নিয়ম মল্লিকার সঙ্গে চুমু বিতর্ক, মুখ দেখাদেখি বন্ধ কুড়ি বছর, সাক্ষাৎ পেয়ে কী করলেন ইমরান? ক্যাটরিনার জন্যই সলমনের সঙ্গে সম্পর্কে দূরত্ব, ইদে স্বামীকে নিয়ে ভাইজানের বাড়িতে আলিয়া! রাজশাহী মহানগরীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ২৬ ১৬ মাসের মেয়েকে বাড়িতে একা রেখে ছুটি কাটাতে যান মা, না খেয়ে, জল না পেয়ে মৃত্যু! সাজা যাবজ্জীবন রাজশাহীতে ট্রাকে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি, আটক ২ পুঠিয়ায় পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে গ্রেফতার ৩ ঈদের সাথে যুক্ত হওয়া নববর্ষের উচ্ছ্বাসে বিনোদন স্পট পরিপূর্ণ
রাজশাহীতে সিন্ডিকেটের বলয় থেকে বের হতে পারছে না বিএমডিএ

রাজশাহীতে সিন্ডিকেটের বলয় থেকে বের হতে পারছে না বিএমডিএ

রাজশাহীতে সিন্ডিকেটের বলয় থেকে বের হতে পারছে না বিএমডিএ
রাজশাহীতে সিন্ডিকেটের বলয় থেকে বের হতে পারছে না বিএমডিএ

এসএম বিশাল: বরেন্দ্র বহুমুখি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) সিন্ডিকেটের বলয় থেকে বের হতে পারছে না। প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে বিএমডিএ’তে ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক দায়িত্ব পালন করেছেন।

সে সময়ে অনেকে ধারণা করেছিলেন, প্রতিষ্ঠানটিতে পুর্ণাঙ্গভাবে কাউকে নির্বাহী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিলে পরিস্থিতি পাল্টে যাবে। গতি পাবে এই প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টায়নি। পুর্নাঙ্গভাবে নতুন নির্বাহী পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ঠিকই। তবে আগের অবস্থাই বহাল রয়েছে।

বিএমডিএ’র নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, বিএমডিএতে দীর্ঘদিন ধরে একটি সিন্ডিকেট আধিপত্য বজায় রেখেছে। ইতোপূর্বে সিন্ডিকেটের সদস্যরা কর্তৃপক্ষকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। এখনও এদের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। যদিও নতুন নির্বাহী পরিচালক দায়িত্বগ্রহণের পর সিন্ডিকেটের সদস্যদের কার্যক্রমে কিছুটা ভাটা পড়েছে।

এই সিন্ডিকেটের সাথে সম্পৃক্ততায় বিএমডিএতে যাদের নাম সবচেয়ে বেশি আলোচিত তাদের মধ্যে রয়েছেন- বিএমডিএ’র প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বিশ্বাস, অডিট অফিসার বাসুদেব চন্দ্র মহন্ত ও প্রধান সহকারী ওয়াজেদ আলী।

এছাড়া রয়েছেন সাবেক ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালকের বেশ কয়েকজন বিশ্বস্ত কর্মকর্তা। এদের মধ্যে একজন হলেন সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল ইসলাম।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সরকারি এই স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানটির কোনো অগ্রানোগ্রাম নেই। অর্থাৎ পরিচালনা বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত যে বেতন কাঠামো ও অগ্রানোগ্রাম রয়েছে সরকারিভাবে তার কোনো অনুমোদন নেই। নিয়ম অনুযায়ী তিন মাস পরপর বোর্ড সভা হওয়ার কথা।

কিন্তু গত তিন বছরের মধ্যে কোনো বোর্ড সভা হয়নি। প্রকৌশলীদের মধ্যে বিভক্তি, রেজিষ্ট্রার্ড কর্মচারী ইউনিয়ন নিয়ে দু’টি পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব, প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন বিষয়ে আদালতে একাধিক মামলা চলমান, কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ, বিপুল অংকের টাকা অডিট আপত্তি, অডিট আপত্তি নিষ্পত্তিতে ধীর গতি, প্রাপ্যতার চেয়ে অতিরিক্ত বেতন-ভাতা ও উচ্চতর স্কেল প্রদান, টে-ার ছাড়াই অনিয়মতান্ত্রিকভাবে কোটি কোটি টাকার কোটেশন দেয়া, সিন্ডিকেটের আধিপত্যসহ আরো নানা কারণে বিএমডিএ এখন অস্থির হয়ে উঠেছে।

আর এসব কর্মকান্ডের সাথে কোনো না কোনোভাবে সিন্ডিকেটের সদস্যদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সম্পৃক্ততা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে বিএমডিএ’তে ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক দায়িত্ব পালন করেছেন। সে সময়ে অনেকে ধারণা করেছিলেন, প্রতিষ্ঠানটিতে পুর্ণাঙ্গভাবে কাউকে নির্বাহী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিলে পরিস্থিতি পাল্টে যাবে। গতি পাবে এই প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টায়নি। পুর্নাঙ্গভাবে নতুন নির্বাহী পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ঠিকই। তবে আগের অবস্থাই বহাল রয়েছে। গত জানুয়ারির শুরুতে নতুন নির্বাহী পরিচালক হিসেবে যুগ্ম সচিব শ্যাম কিশোর রায় দায়িত্ব গ্রহণ করলেও প্রতিষ্ঠানটিকে অচলাবস্থা থেকে সচল ও গতিশীল করতে এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান ও উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ লক্ষ করা যাচ্ছে না বলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএমডিএর একাধিক কর্মকর্তা জানান, অবৈধ এই সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে না পারলে প্রতিষ্ঠানটিকে স্বচ্ছ ও গতিশীল করা সম্ভব নয়। তাই সিন্ডিকেট ভেঙ্গে ফেলতে হবে। এজন্য নতুন নির্বাহী পরিচালককে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করেন তারা।

অপর একটি সূত্র জানায়, বিএমডিএতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার সাথে ইরিগেশন ইঞ্জিনিয়ারদের দ্বন্দ্ব প্রকট। বিশেষ করে ইরিগেশন ইঞ্জিনিয়ারদের আধিপত্য বেশি হওয়ার কারণে তারা অযাচিত ও অন্যায়ভাবে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের কোনঠাসা করে রাখার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

এতে করে দ্বন্দ্ব বাড়ছে। সূত্রটি বলছে, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের সবাই ইতোমধ্যে প্রকল্প কাজে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু সিভিল ইঞ্জিনিয়াররা প্রতিহিংসার শিকার। ইরিগেশন ইঞ্জিনিয়ারদের গ্রুপে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের মধ্যে একজন তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এবং একজন নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক রয়েছেন।

সিন্ডিকেট সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএমডিএ’র প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বিশ্বাস জানান, ‘আমি তো সবাইকে সন্তষ্ট করতে পারবো না। যে কেউ যে কোনো অভিযোগ করতে পারে, এসব নিয়ে ভাবি না। আমি নিয়ম মেনেই কাজ করি।’

এ ব্যাপারে বিএমডিএর অডিট অফিসার বাসুদেব চন্দ্র মহন্ত জানান, সিন্ডিকেট সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই। কে বা কারা বলেন বা কিসের সিন্ডিকেট তা আমি জানি না। তবে প্রধান সহকারী ওয়াজেদ আলীর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে জানতে গতকাল সোমবার মোবাইলে বিএমডিএ’র নির্বাহী পরিচালক শ্যাম কিশোর রায়ের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল সিসিভ করেননি। ফলে এ ব্যাপারে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। এছাড়া আগের দিন রোববার কার্যালয়ে গেলেও তাঁর সাক্ষাত মেলেনি।

মতিহার বার্তা ডট কম – ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply