শিরোনাম :
গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার! ইজ়রায়েলকে জবাব দিতে সর্বোচ্চ নেতার ফতোয়ার কথাও ভুলতে চায় ইরান, এ বার কি পরমাণু যুদ্ধ?
ভারতের নাগরিক বাংলাদেশি পাসপোর্টে সৌদি আরব গমন, মোটা অঙ্কের ঘুষ লেনদেন

ভারতের নাগরিক বাংলাদেশি পাসপোর্টে সৌদি আরব গমন, মোটা অঙ্কের ঘুষ লেনদেন

ভারতের নাগরিক বাংলাদেশি পাসপোর্টে সৌদি আরব গমন, মোটা অঙ্কের ঘুষ লেনদেন
ভারতের নাগরিক বাংলাদেশি পাসপোর্টে সৌদি আরব গমন, মোটা অঙ্কের ঘুষ লেনদেন

এসএম বিশাল:  মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে রাজশাহী পাসপোর্ট অফিস থেকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে পাসপোর্ট বানিয়ে নিয়েছেন এক ভারতীয়। সঙ্গে জড়িত রয়েছেন, শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা হিসেবে পুরস্কার প্রাপ্ত তৎকালীন সহকারী পরিচালক আবজাউল আলমও।
জানা গেছে, পাসপোর্ট বানিয়ে দিতে পুলিশি প্রতিবেদন গোপন করা হয়েছে। ঘটনা জানাজানি হওয়ার আগেই এই পাসপোর্ট ব্যবহার করে তিনি সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা এ সংক্রান্ত নথিপত্র গায়েব করে ফেলেছেন। তবে অভ্যন্তরীণ তদন্তে তা বেড়িয়ে আসে।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা ও কর্মচারীর মধ্যে দুইকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার আটজনের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এই ব্যক্তির নাম হাফেজ আহম্মেদ (৪৯)। তাঁর বাবার নাম মোহাম্মদ হোসেন। মা জয়নব বেগম। মামলার এজাহারে তার ভারতীয় ঠিকানা উল্লেখ করা হয়নি।

দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী সংস্থার সমন্বিত রাজশাহী জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেছেন। ২০১৭ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের ঠিকানায় হাফেজকে পাসপোর্ট দেওয়া হয়।

মামলায় হাফেজ আহম্মেদকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন, রাজশাহী বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের তৎকালীন সহকারী পরিচালক আবজাউল আলম।

তিনি ২০১৭ সালে শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা হিসেবে পুরস্কার পেয়েছিলেন। ওই বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহে-২০১৭ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পুরস্কৃত করা হয়েছিল। উচ্চমান সহকারী দেলোয়ার হোসেন, ডেটা এন্ট্রি অপারেটর আলমাস উদ্দিন, সাঁট-মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর আবদুল ওয়াদুদ, অফিস সহায়ক হুমায়ন কবির, এমএলএসএস রঞ্জু লাল সরকার ও দপ্তরি ইব্রাহিম হোসেন।

তাদের মধ্যে আবজাউল আলম বর্তমানে যাত্রাবাড়ী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক। দেলোয়ার আগারগাঁও অফিসের সুপারিনটেনডেন্ট। আর আলমাস উদ্দিন জয়পুরহাট, আবদুল ওয়াদুদ রাজশাহী এবং ইব্রাহিম গোপালগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত। হুমায়ুন ও রঞ্জু সাময়িক বরখাস্ত অবস্থায় আছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের ৬ জুন হাফেজ আহম্মেদ রাজশাহী নগরের ছোটবনগ্রাম এলাকার ঠিকানা ব্যবহার করে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন।

ব্যাংক ড্রাফট না থাকলেও পরের দিন এমএলএসএস রঞ্জু লাল সরকার আবেদনটি গ্রহণ করে নিজের হেফাজতে রাখেন। সেদিনই গিয়াস উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে এই পাসপোর্ট করে দেওয়ার ব্যাপারে তাঁর অবৈধ লেনদেনের চুক্তি হয়।

পরে নগরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় থেকে রঞ্জু নিজেই ভারতীয় হাফেজের জন্ম সনদ তৈরি করেন এবং ১৩ জুন তিনি ৩ হাজার ৪৫০ টাকা ব্যাংক ড্রাফট করেন।

পরে রঞ্জু আবেদনটি দেলোয়ারকে দেন। দেলোয়ার ৩১ জুলাই পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য আবেদনটি নগর পুলিশের বিশেষ শাখায় পাঠান। পুলিশের প্রতিবেদনে হাফেজকে ভারতীয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

পুলিশ প্রতিবেদন পাওয়ার পর অফিস সহকারী হুমায়ুন কবীরের দায়িত্ব ছিল আবেদনকারীকে ভারতীয় হিসেবে কম্পিউটারে ইনপুট দেওয়া, কিন্তু তিনি বিষয়টি চেপে যান।

এতে করে তাঁর পুলিশ প্রতিবেদন ‘পজিটিভ’ বলে গণ্য হয় এবং ১৬ আগস্ট পাসপোর্টের আবেদনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে গৃহীত হয়ে যায়। পরে রঞ্জু লাল সরকার নিজেই পাসপোর্টটি গ্রহণ করে হাফেজ আহম্মেদকে দেন।

এরপর ভিসা নিয়ে ২০১৮ সালের ২৪ জানুয়ারি হাফেজ সৌদি আরব চলে যান। তিনি আর বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন কিনা, এ রকম কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

দুদক জানিয়েছে, মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে পুলিশি প্রতিবেদন গোপন করে অবৈধভাবে পাসপোর্টটি দেওয়া হয়েছে। পাসপোর্ট প্রস্তুত হয়ে যাওয়ার পর হাফেজের সমস্ত রেকর্ডপত্র গায়েব করে দেওয়া হয়েছে। তবে একটি গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়ে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর তদন্ত করে।

দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দুদক অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়।

তারপর কমিশন মামলা অনুমোদন দিলে মামলাটি হয়। এখন আসামিদের গ্রেফতার করা হবে। আর তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্র প্রস্তুত করবেন। এই পাসপোর্ট ইস্যুর সঙ্গে কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।

মতিহার বার্তা ডট কম – ১২  মার্চ ২০২০

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply