শিরোনাম :
বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার! ইজ়রায়েলকে জবাব দিতে সর্বোচ্চ নেতার ফতোয়ার কথাও ভুলতে চায় ইরান, এ বার কি পরমাণু যুদ্ধ? দিনাজপুরে ড্রাম ট্রাকসহ ১০০ কেজি গাঁজা জব্দ, গ্রেপ্তার ৩ ফরিদপুরে দুই সহোদর নিহতের ঘটনায় তিন মামলা
দুই শিশুকে সৎমায়ের নির্যাতন, দেখলে গা শিউরে ওঠে

দুই শিশুকে সৎমায়ের নির্যাতন, দেখলে গা শিউরে ওঠে

দুই শিশুকে সৎমায়ের নির্যাতন, দেখলে গা শিউরে ওঠে

মতিহার বার্তা ডেস্ক: রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় দুই শিশুকে অমানবিক নির্যাতন করেছেন সৎমা। নির্যাতনের ভিডিও ও ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। নির্মম নির্যাতনের ভিডিও ও ছবি দেখে সবার গা শিউরে ওঠে।

এ ঘটনায় সৎমা ও বাবার বিরুদ্ধে পীরগঞ্জ থানায় মামলা করা হয়। ৩ সেপ্টেম্বর পীরগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন সৎমা ও বাবা। শুনানি শেষে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠান। জামিনে বেরিয়ে নানাভাবে আবার ষড়যন্ত্র করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন দুই শিশুর স্বজনরা।

 স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার শিয়ালকাঠি এলাকার মুনিয়া আক্তারের সঙ্গে রংপুরের পীরগঞ্জের খোলাহাটি এলাকার জাহিদুল ইসলাম সেতুর আট বছর আগে বিয়ে হয়। পরে তাদের সংসারে দুটি ছেলেসন্তান জন্মগ্রহণ করে। জীবিকার তাগিদে জাহিদুল ইসলাম সেতু ঢাকায় চাকরি করতেন। তার স্ত্রী প্রথম দিকে ঢাকায় থাকলেও পরে দুই ছেলেকে নিয়ে পীরগঞ্জে থাকতেন। সেতু ঢাকা থেকে ছুটি নিয়ে পীরগঞ্জ এলে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো। এমনকি মারধরের ঘটনাও ঘটতো।

এরই মধ্যে সেতু ঢাকায় গোপনে আরও একটি বিয়ে করেন এবং দুই ছেলেকে কৌশলে ঢাকায় নিয়ে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর জিম্মি করে মুনিয়ার কাছ থেকে তালাকনামায় স্বাক্ষর নেন। পরে দুই সন্তানকে ফেরত চাইলে সেতু ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী সুমনা বেগম সন্তানদের মারধরসহ জীবননাশের হুমকি দিয়ে মুনিয়াকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে মুনিয়া কোনো উপায় না পেয়ে ঢাকা চলে যান এবং পোশাক কারখানায় কাজ করতে থাকেন।

আশপাশের পরিচিত লোকজনের মাধ্যমে খোঁজখবর নিয়ে মুনিয়া জানতে পারেন, প্রায়ই শিশু দুটিকে সৎমা সুমনা বেগম নির্যাতন করেন। ঠিকমতো তাদের খেতে দেন না। ৯ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে সেতুর উপস্থিতিতে সৎমা সুমনা দুই শিশুকে চড়-থাপ্পড়সহ লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জখম করেন। এ সময় দুই শিশুর বুকে, পিঠে লাথি ও ধারালো ছোরা দিয়ে আঘাত করা হয়। ঘটনার সময় প্রতিবেশীরা শিশু দুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। পরে দুই শিশুকে নির্যাতনের ঘটনায় মমতাজ নিগার সঙ্গীতা চৌধুরী নামে মুনিয়ার এক ননদ প্রতিবাদ করলে তাকেও মারপিট, খুনসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকি দেয় সেতু ও সুমনা। পরদিন সঙ্গীতা পীরগঞ্জ থানায় জিডি করেন।

পরবর্তীতে দুই শিশুর মা মুনিয়া মোবাইল ফোনে বিভিন্নজনের কাছ থেকে ঘটনা জানতে পেরে ১৯ আগস্ট পীরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এতে কাজী জাহিদুল ইসলাম সেতুকে (২৯) প্রধান ও সুমনা বেগমকে ২ নম্বর আসামি করা হয়।

৩ সেপ্টেম্বর পীরগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন সেতু ও সুমনা। সেখান থেকে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। এ সময় শিশু দুটিও আদালতে উপস্থিত ছিল। পরে ম্যাজিস্ট্রেট শিশু দুটিকে তাদের দাদার জিম্মায় দেন।

ওই এলাকার খন্দকার শামীম তাবাসসুম ও কাজী রেলা জানান, সৎমা সুমনা অমানবিকভাবে দুই শিশুকে নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। আমরা বিভিন্ন সময় নিষেধ করেছি। তিনি আমাদের কথা রাখেননি। ঘটনার দিন দরজা বন্ধ করে নির্মমভাবে শিশু দুটিকে পিঠিয়েছে সুমনা। আমরা অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

শিশু দুটির মা মুনিয়া আক্তার বলেন, জোর করে তালাকনামায় স্বাক্ষর নিয়ে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। এরপর থেকে আমার দুই শিশুসন্তানকে নির্যাতন করেছে তারা। ঠিকমতো খেতেও দেয়নি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, একজন উপ-সচিব আসামিদের আত্মীয় হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে মামলা তুলে নেয়ার জন্য আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। আবার সেতুও বিচারকের গাড়িচালক পরিচয় দিয়ে আদালতসহ বিভিন্ন মানুষকে প্রভাবিত করছে। আমি একা, এজন্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। সার্বিক বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাই।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পীরগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই মিলন বলেন, নির্যাতনের বিষয়টি খুবই অমানবিক। তদন্ত চলমান। মেডিকেল সার্টিফিকেট পেলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মতামত নিয়ে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেব।

মমতাজ নিগার সঙ্গীতা চৌধুরীর করা জিডির বিষয়ে তিনি বলেন, তদন্তের অনুমতি পেলে অবশ্যই সে বিষয়েও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। জাগো নিউজ

মতিহার বার্তা ডট কম: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply