শিরোনাম :
গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার! ইজ়রায়েলকে জবাব দিতে সর্বোচ্চ নেতার ফতোয়ার কথাও ভুলতে চায় ইরান, এ বার কি পরমাণু যুদ্ধ?
গাড়ির ফটো তোলায় ৯ শিক্ষক কর্তৃক এক ছাত্রের বিরুদ্ধে থানায় জিডি

গাড়ির ফটো তোলায় ৯ শিক্ষক কর্তৃক এক ছাত্রের বিরুদ্ধে থানায় জিডি

গাড়ির ফটো তোলায় ৯ শিক্ষক কর্তৃক এক ছাত্রের বিরুদ্ধে থানায় জিডি

ইব্রাহিম হোসেন মুন: সাম্প্রতিক সময়ে রাবির উপাচার্য মহোদয়ের বিপক্ষে কতিপয় প্রগতিশীল নামধারী শিক্ষক কর্তৃক ভুয়া অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউজিসি’র গনশুনানী নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে । ভয়ংকর এক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে গুটি কয়েক শিক্ষক ।

তারা দাবী করছেন প্রগতিশীল কিন্তু কাজ কর্মে উল্টাশীল । তাদের কাজ কর্মে বিব্রত হচ্ছে গোটা ছাত্র-শিক্ষক সমাজ, বিব্রত হচ্ছে সরকার। ছাত্র শিক্ষক সম্পর্ক মুখোমুখী দাঁড় করিয়ে যে ৯ জন শিক্ষক থানায় করলেন জিডি তাদের সবিনয়ে প্রশ্ন করি গাড়ির ফটো তোলায় এত ভয় কীসের? আমিতো ছাত্রের কাছে শুনলাম, সে নাকি গাড়িসহ সেলফি তুলতে চেয়েছিলো । ছাত্রের নিজের যেহেতু গাড়ি নেই, তাই স্যারের গাড়ি দিয়েই শখ পূরণের চেষ্টা আর কি! এতেই এত গোন্ডোগোল! হায়রে কপাল! অদ্ভুত সব ব্যাপার! স্যারদের এতো প্রতিক্রিয়া দেখানোর কারণ কি তা আমার বোধগম্য নয়। তাঁরা কি তবে গোপন কোনো মিশনে ব্যস্ত ছিলেন? সেই পুরোনো প্রবাদটাই আবার মনে পড়ে গেলো। এ যেনো “ঠাকুর ঘড়ে কে রে, আমি কলা খাইনা।“ একজন ছাত্রের বিরুদ্ধে ৯ জন শিক্ষক থানায় জিডি করলেন! তাও উনারা বিশ্ববিদ্যালয়ের অত্যন্ত প্রভাবশালী শিক্ষক! উনাদের কেউ কেউ অতীতে প্রোক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, কেউবা ছিলেন হলের প্রভোস্ট।

আবার কেউ ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য! এতো সব প্রভাবশালী শিক্ষকদের এতো ভয় পাবার কারণ কি? তবে কি গত প্রশাসনের আমলে পিতল চুরি, মাটি চুরির যে সব কাহিনী ক্যাম্পাসে শোনা যায়, উনাদের গাড়ি সেই চুরির টাকায় কেনা? সম্মানিত শিক্ষকেরা থানায় তথ্য দিলেন যে মামুন নাকি একজন বহিরাগত। মামুন যদি বহিরাগত হয় তবে দুর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়ে বিদায় নেয়া সাবেক ভিসি প্রফেসর মিজান উদ্দিনও বহিরাগত। তিনিওতো আপনাদের সহিত গোপন মিটিং এ লিপ্ত ছিলেন । প্রফেসর মিজান উদ্দিন চাকুরী শেষ করে এখন অবসর জীবন কাটাচ্ছেন আর মাঝে মধ্যে আপনাদের সাথে নানা রকম ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছেন। তাঁর আর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হয়ে ফিরে আসার কোন সুযোগ না থাকলেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক ছাত্র মামুনের কিন্তু উচ্চতর পর্যায়ের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযোগ এখনও বিদ্যমান। মামুন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন এলামনাই, সেটাও আপনাদের জানা থাকার কথা। যতদিন মামুন এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাইগ্রেশন নিয়ে অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে না যায় ততদিন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে তার অধিকার রয়েছে এবং থাকবে। অবশ্য ছাত্রের বিপক্ষে শিক্ষকের থানায় জিডি এটিই প্রথম নয় ।

আমার জীবনের বাস্তব একটা ঘটনা শেয়ার করি। আমি তখন আইবিএস এ নিজের ডিগ্রীর জন্য কোর্স ওয়ার্ক করছি। হেকেপ প্রজেক্টের টাকা লুটপাট করতে এক শিক্ষক তখন চরম ব্যস্ত! তাও আবার ছাত্রদের নাস্তা না করিয়েই ছাত্রদের দিয়ে ভুয়া বিলে স্বাক্ষর করিয়ে নিচ্ছেন । এক ছাত্র ভুয়া বিলে স্বাক্ষর দিতে অস্বীকার করায় ওই শিক্ষকের বিরাগভাজন হয়ে ওঠে। ছাত্রটি এ নিয়ে ভয়ে আমার কাছে এসে অভিযোগ করলে শিক্ষক মহোদয়ের সাথে আমার সামান্য তর্ক-বিতর্ক হয়। ঘটনার দিন দিবাগত রাতে আমি আইবিএস এর বাসায় ফিরছিলাম, এমন সময়ে উলটো দিক থেকে ৩জন লোক আসছিলেন।

আমি কাছাকাছি আসতেই তিন জনের মধ্য থেকে একজন দৌড় দিলো। আমি ঘটনা বুঝে উঠতে পারছিলাম না। ভাবলাম, ছিনতাই হচ্ছে। তাই আমিও দৌড় দিয়ে যে ২জন পালিয়ে যায়নিই, তাদেরকে ধরে ফেললাম। ধরার পর আমি কিছুটা বোকা বনে গেলাম। তারাও আমার মতই আইবিএস’র এর গবেষক। কিছুটা বিস্ময় নিয়েইত জিজ্ঞাস করলাম, কি হয়েছে? কে দৌড় দিলো, কেনইবা দৌড় দিলো। গবেষক দু’জন আমাকে জানালেন, আপনাকে দেখে স্যার ভয়ে দৌড় দিয়েছেন। আমি কারণ জানতে চাইলেই তারা বললো-ঐ যে ক্লাসে নাকি আপনার সাথে তর্ক হয়েছে, তাই তিনি ভয়ে আছেন। এ কথা শুনে আমি হাসবো না কাঁদবো তা বুঝে উঠতে পারলাম না। জান নিয়ে সে কি যে দৌড়! অদ্ভূত ব্যাপার, এর ঘন্টা খানেক পর থানা থেকে একটা ফোন আসলো আমার কাছে। ফোনে জানালো হলো, আইবিএস এর অমুক স্যার আপনার নামে জিডি করেছেন, আপনার দ্বারা তাঁর নাকি প্রাণহানির আশংকা রয়েছে! এর কিছুক্ষণ পরে জানলাম, ঐ শিক্ষক দৌড়ে হাঁপাতে হাঁপাতে সাবেক উপাচার্য প্রফেসর মিজানউদ্দিনের বাসায় গিয়ে আমার নামে নালিশ দিলে ছাত্রদের দুশমন নামে পরিচিত ভিসি মিজানউদ্দিন কিছু বুঝেই তাকে থানায় জিডি করার পরামর্শ দিয়েছেন। ভাগ্যিস থানার চৌকস অফিসার বিলম্ব না করে সাথে সাথেই বিষয়টি তদন্ত করে দেখেছেন এবং প্রকৃত পক্ষেই যে এটা ওই শিক্ষকের নিজের সমস্যা ছিল, সেটা পরিষ্কার হয়েছে।

মামুন নামের যে সাবেক শিক্ষার্থী আজ শিক্ষকদের গাড়ির সামনে সেল্‌ফি তোলার কারনে আজ ৯জন শিক্ষক তার নামে থানায় জিডি করেছেন, তার ঘটনার সাথে আমার জীবনের ঘটনার অনেক মিল খুঁজে পাই। সামান্য ছবি তোলার কারনে ৯ জন শিক্ষক মিলে ১জন ছাত্রকে ধমক আর বকাবকি করায় তা দেখে বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক সাদ্দাম যখন মামুনের পক্ষ নেয়, তখন ওই শিক্ষক মহোদয়গণ তার সাথেও দুর্ব্যবহার করেন, যা অনভিপ্রেত, অপ্রত্যাশিত! শিক্ষক সমাজের কাছে এরকম ব্যবহার আমরা আশা করতে পারি না। আমি আরও হতবাক হয়েছি এটা দেখে যে, ৯জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক মিলে স্কুল শিক্ষক সাদ্দামদের বিরুদ্ধেও থানায় জিডি করেছেন। ইদানিং বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু নুরা পাগলা কাগজ কুড়ায়। আবার তা নিয়ে ঢাকায় যেতে যেতে বঙ্গবন্ধু সেতুর নিকট গিয়ে লাল দাগ দিয়ে ফেরত আসে। পরদিন নাকি আবার ঐখানে গিয়ে আবার ঢাকায় যাবে । কিন্তু ব্রিজ আর পার হতে পারে না। ঢাকায় পাঠাবার মত এ রকম কোন লাল দাগের কাগজপত্র গাড়িতে ছিলো কি? সাধু সাবধান! ঢাকা যাওয়া বোধহয় আর হলোনা! অবশেষে লাল দাগ পর্যন্তই ইতি!

ইব্রাহিম হোসেন মুন

সাবেক সভাপতি
ছাত্রলীগ রাজশাহী বিশ্ব বিদ্যালয় ।

মতিহার বার্তা ডট কম: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply