শিরোনাম :
প্রেমিকার বাড়ির সামনে বিষপানে প্রেমিকের মৃত্যু; বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য ‘শাড়ি ক্যানসার’ কেন হয়? তার উপসর্গই বা কী? জানালেন চিকিৎসক ডায়াবেটিকেরাও ভাত খেতে পারেন, তবে মানতে হবে কিছু নিয়ম মল্লিকার সঙ্গে চুমু বিতর্ক, মুখ দেখাদেখি বন্ধ কুড়ি বছর, সাক্ষাৎ পেয়ে কী করলেন ইমরান? ক্যাটরিনার জন্যই সলমনের সঙ্গে সম্পর্কে দূরত্ব, ইদে স্বামীকে নিয়ে ভাইজানের বাড়িতে আলিয়া! রাজশাহী মহানগরীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ২৬ ১৬ মাসের মেয়েকে বাড়িতে একা রেখে ছুটি কাটাতে যান মা, না খেয়ে, জল না পেয়ে মৃত্যু! সাজা যাবজ্জীবন রাজশাহীতে ট্রাকে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি, আটক ২ পুঠিয়ায় পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে গ্রেফতার ৩ ঈদের সাথে যুক্ত হওয়া নববর্ষের উচ্ছ্বাসে বিনোদন স্পট পরিপূর্ণ
উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে, প্রসঙ্গ “হাইব্রিড, অনুপ্রবেশকারী” এবং আমরা নেতা

উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে, প্রসঙ্গ “হাইব্রিড, অনুপ্রবেশকারী” এবং আমরা নেতা

উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে, প্রসঙ্গ “হাইব্রিড, অনুপ্রবেশকারী” এবং আমরা নেতা

মোঃ ইব্রাহিম হোসেন মুন: হাইব্রিড (hybrid) নতুন কোনো শব্দ নয় এদেশের প্রতিটি মানুষ এই শব্দের সাথে পরিচিত। উক্ত শব্দটি শুধু ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে গড়মিল লক্ষণীয়। কম সময়ে অল্প খরচে স্বল্প পরিশ্রমে বিজ্ঞান ভিত্তিক অধিক উৎপাদনের জন্য এক ধরনের কৃত্রিম জাত উদ্ভাবনের নাম ‘হাইব্রিড’। শব্দটি সাধারণত ব্যবহৃত হয়ে থাকে বিভিন্ন শস্য সবজি ফলমূল ও বিভিন্ন কৃষিজাত পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে। ইদানিংকালে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ‘হাইব্রিড’ শব্দটি ঝড়ের গতিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। কেউ এটিকে ব্যবহার করছে নিজেকে বাঁচাতে, কেউ আবার সস্তা ইমেজ তৈরী করতে, কেউ আবার না বুঝে।

রাজনৈতিক ক্ষেত্রে হাইব্রিড (hybrid) মূলত additional system. দলে কর্মী, ভোট, এবং জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির লক্ষে এই system ইতিপূর্বে ছিলো এখনও আছে ভবিষ্যতেও থাকবে। এটা রাজনীতিতে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। একটি রাজনৈতিক দলের মৌলিক এবং আদর্শিক কিছু লক্ষ্য থাকে তা বাস্তবায়নে ক্ষমতায় থাকা অর্থাৎ সরকারে থাকা অপরিহার্য। আর এ কাজটি করতে দরকার জনসমর্থন।

জনগণ সব সময় আপনাদের সমর্থন করবে? এটা যারা ভাবেন তারাই মূলত নেতা নামের অযোগ্য। দলের অবস্থা বুঝে প্রয়োজনে সমাজের সৎ ও আদর্শবান ব্যাক্তি যারা কনোদিন রাজনীতি করে নাই অথবা দল করলেও ক্লিন ইমেজ বিদ্যমান তাদেরকে দলে অন্তর্ভুক্তি করলে দলের সন্মান, মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। রাজনীতির কৌশলগত কারনেই সত্যিকারের নেতারা এ কাজটি অতীতে করেছেন এখনও করেন এবং ভবিষ্যতেও করবেন। উদাহরণ দেওয়ার প্রয়োজন আছে কি ?

তবে যে, কোনো দল ক্ষমতায় আসার পর সেই দলের মধ্যেথেকে কিছু হাইব্রিড (hybrid) নেতার জন্ম হয় । তাদের নিস্কিয় করা দলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকে আওয়ামীলীগ এখন টের পাচ্ছে। পরিস্থিতে এমন যে, হাইব্রিড (hybrid) শব্দটি- রাজাকার, মীরজাফর, খন্দকার মোস্তাক দের কাতারে নিয়ে কষে কষে সবাই গালি দিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। অস্বীকার করার উপায় নেই দলের মধ্যে থেকে জন্ম নেওয়া হাইব্রিড (hybrid) not additional তারা দলের ক্ষমতা অপব্যবহার করে ফুলে ফেঁপে ক্ষমতার দম্ভ দেখায়, ভাবখানা এমনই যেন তারাই সব। তাদের সঙ্গে মিশে আছে কতিপয় powerful এম পি, মন্ত্রী এবং আমলারা।

মমতাময়ী ‘মা’ দেশরত্ন শেখ হাসিনার নজরে না আসা পর্যন্ত তারা থাকে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। দলে জন্ম নেওয়া হাইব্রিড (hybrid) নেতাদের চেয়ে আরো বেশী ভয়ংকার-অনুপ্রবেশকারী (intruder) যা সামনে আনতে ভয় পাচ্ছেন নেতারা, তাই তারা কৌশলে নিজেদের ব্যর্থতা ডাকতে শুধু হাইব্রিডদের উপর দোষ চাপিয়ে নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। ধরে নিলাম আপনারা সাংগঠনিক ভাবে খুব শক্তিশালী কর্মীর অভাব নেই, নেতার অভাব নেই, জনসমর্থনের অভাব নেই, তাহলে দলে এত হাইব্রিড জন্মালো কেমনে? নিঃসন্দেহে আপনাদের ব্যর্থতা। দলে লোক অন্তর্ভুক্তি বা বৃদ্ধি করন নিয়মিত প্রক্রিয়া আর নেতা নির্বাচিত হবে আদর্শিক তা না করে নেতা হয় সাহেদ, পাপিয়া, সাবরীনা, জিকে শামিম এদেরকে হাইব্রিড বলছেন। না এরা হাইব্রিড নয় এরা হল অনুপ্রবেশ কারী।

দলের জন্য মূলত ক্ষতিকর – অনুপ্রবেশ কারী, দলের ভিতরে জন্ম নেওয়া হাইব্রিড (hybrid), তোষামোদকারি, স্বজনপ্রীতি আর পাপিয়াপ্রীতি।

হাইব্রিড (hybrid) আর অনুপ্রবেশকারী (intruder) এক নয়। হাইব্রিড টার্গেট করে নেওয়া জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির লক্ষে প্রতিটি দলই এ কাজ টি করে থাকে, তবে ইদানিং কালে দলের ভিতর থেকে যে, হাইব্রিড (hybrid) জন্ম হচ্ছে সেটাও ক্ষতিকর। আর অনুপ্রবেশকারী নিজে দল টার্গেট করে আসে। যা অতি ভয়ংকর। সাধারনত অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে প্রভাবশালী নেতা, এম পি, মন্ত্রী বা তার নিকট আত্তীয় স্বজন, পরিবার পরিজন, বন্ধু বান্ধবদের সন্নীকটে এসে সখ্যতা গড়ে তুলে তার কুটজালে জড়িয়ে নেয়।

ভাবনার বিষয় – আমরা যারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি করে আসছি। প্রতি বছর নতুনদের বরণ করতে তাদের দলে টানতে কত কিছুই না করেছি। যখন বিরোধী দলে মিছিলে লোক বৃদ্ধি করতে দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতাম যারা আসতো তারাও তো দলে নবীন ছিল, তাদেরকে আমরা এখন কি বলব? বাস্তবতায় একসময় রাবিকে বলা হত শিবিরের কসাইখানা (২০০১-২০০৯) হলে থাকার সুযোগ ছিলোনা। তাই প্রায় প্রতিটি রাতেই মেস ওয়ার্ক করতাম, সাহস যোগাতাম, দু-চার জন আসতো। ৩০/৪০ জন না হলে মিছিল করা যায়না কখনও কখনও একজন কর্মীর অপেক্ষায় মিছিলের সময় পাল্টাতে হতো।

আজ বড়ই অদ্ভুত লাগে যখন কঠিন বাস্তবতায় শিক্ষা, শান্তি, প্রগতির দাওয়াতে যারা আসতেনেই না বরং নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে আমাদের করেছে উপহাস কিন্তু ক্ষমতার পরিবর্তনে বিজয় মিছিলে হাজারো ছাত্রজনতা পদ পদবী নিতে আগ্রহ আর তদবীরের শেষ নেই নাজেহাল অবস্থা। আমি ও আমার সাধারণ সম্পাদক (বর্তমান এম পি) মো: আয়েন উদ্দিন ছিলাম অবিচল আর যাই হোক উপহাস কারিদের পদ পদবীতো দুরে থাক মিছিল করতেও দেই নাই। আজকের বাস্তব পরিস্থিতি এমন যে, উপহাস কারীদের অনেকেই আওয়ামীলীগের পার্টি অফিসে আস্তানা গেড়ে বসেছে। বড় বড় নেতারা আসলেই দৌড় দিয়ে পটোকল দেয় আর পিক তুলে ফেসবুকে প্রচার করে নিজেদের জানান। আমি বুঝে উঠতে পারিনা – সকাল থেকে সন্ধ্যা, সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত শুধু পটোকল আর পটোকল, এদের জীবন সংসারে আয়ের উৎস কি ?

আমরা ভুলে যেতে বসেছি ৭৫ এর ১৫ আগস্ট-এ জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর খুনী চক্র, রাজাকার, আমলা, ব্যবসায়ী এবং সুবিধাভোগীদের নিয়ে জিয়াউর রহমান বি এন পি নামক দল গঠন করে রাজনীতির মধ্যে বিষ বৃক্ষ রোপন করে গেছেন। যখন দেখি সেই বিষ বৃক্ষের ডালপালা অনুপ্রবেশ করে নেতাদের অতি সন্নিকটে চলে যায় তখন বুকের ভেতর মোচর দিয়ে উঠে, তখন বড় বড় দীর্ঘশ্বাস বলে বাংলার শেষ আশ্রয়স্থল বিশ্ব মানবতার মা শেখ হাসিনা কতটা নিরাপদ?

এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, নেতাদের ভুলে, অনুপ্রবেশকারীদের কুটচালে আমাদের রাজনীতির আকৃতি, প্রকৃতি আর রূপ-রস-রুচির বিবেচনায় এর আসল রুপ হারিয়ে বীভৎস আকার ধারণ করেছে। রাতের অন্ধকার আর প্রকাশ্য দিবালোকে রাজনীতির আদর্শ-উদ্দেশ্যের ক্রমাগত বস্ত্র হরণে এটি অনাকাঙ্ক্ষিত হয়ে পড়ছে।

ঘুণে ধরা সুবিধাবাদী আমলা, দেশোদ্রোহী আর ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে গড়া দল বি এন পি জীবন প্রদীপ নিভু নিভু হা-হুতাশ আর ফটো সেশন ছাড়া তাদের কিছুই করার নেই। খেলোয়ার ছাড়া শুন্য মাঠে নিজ পায়ে আর কত গোল, বড্ড ক্লান্ত তাই তো অনুপ্রবেশকারীদের জায়গা দিয়ে রাজনীতির প্রতি বীতশ্রদ্ধা আর বাড়ানোর দরকার আছে কি? নাকি সময় এসেছে তাদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করার।

আমাদের নেতারা এখন শুধু উন্নয়নের কথা বলে এবং তা বলতে গিয়ে ভুলে যেতে বসেছে, মানুষের অধিকারের কথা, দুঃখী মানুষের কথা যেটা ছিলো আওয়ামীলীগের মুল নীতি টাকাপয়সা, পেশীশক্তি, ব্যবসায়ী, আমলা এবং অনুপ্রবেশকারীদের হাত থেকে দলকে বের করে আনা আওয়ামী লীগের সামনে এখন মুখ্য চ্যালেঞ্জ।

একজন ব্যবসায়ীর দিন শুরু হয় ব্যবসায়ীক প্ল্যান নিয়ে, তার দিন শেষ হয় টাকার অংক মিলাতে মিলাতে। তাহলে তার পক্ষে দেশের কল্যাণ, দেশের চিন্তা, দলের চিন্তা, মানুষের সেবা কীভাবে সম্ভব?

“রাজনীতিকদের পিঠে বন্দুক রেখে ব্যবসায়ীদের অনেকেই এ পেশায় ঢুকে পড়ছেন। ফলে জনসেবা নয়, রাজনীতিই এখন সবচেয়ে বড় ব্যবসা হয়ে উঠেছে”। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায় মুক্তিযুদ্ধের আগে ১৯৫৪ সালে এমপিদের মধ্যে ব্যবসায়ী এবং আমলার সংখ্যা ছিল মাত্র ৪ শতাংশ। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে এমপিদের মধ্যে ব্যবসায়ী এবং আমলার হার ছিল ১৫ শতাংশ। ১৯৯৬ সালে ৪৮ শতাংশ, ২০০১ সালে ৫১ শতাংশ এবং ২০০৮ সালে ৬৩ শতাংশ এমপি ছিলেন ব্যবসায়ী। দশম সংসদে ব্যবসায়ী এবং আমলার এমপির হার ৬৯ শতাংশ। বর্তমানে এর হার আরো বেশী।

একজন সাংসদ ব্যবসায়ী হলে তিনি অনেক সময় জনগণের স্বার্থের চেয়ে তার ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক স্বার্থকে বেশি প্রাধান্য দেন। ফলে রাষ্ট্রীয় সম্পদের বণ্টন যথাযথভাবে হয় না, “তাদের নিজেদের স্বার্থ ও রাজনৈতিক জ্ঞান গড়িমার অভাবে তৃণমূল থেকে উপর পর্যন্ত অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দিয়ে কঠিন সময় পার করছেন।

সত্যিকারের রাজনীতিবিদ এবং বিপদের দিনের আওয়ামীলীগকে বাদ দিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে রাজনীতির মধ্যে কঠিন সমিকরন সৃষ্টি করে হাইব্রিড বলে চিল্লায়ে নেতা নামের অযোগ্যতা প্রমানের দরকার আছে কি? আমি রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম ২০০৪ থেকে ২০১০ পর্যন্ত এখনও রাজনীতির সাথেই আছি বড় বড় নেতা এম পি মন্ত্রীদের সাথে সখ্যতা থাকাটাই স্বাভাবিক, তবে বিরোধী দলে যে সম্পর্ক ছিল এখন তা অনুপস্থিত।

রাজনৈতিক গ্যাড়াকলের উত্তর খুঁজতে প্রবীণ রাজনীতিবিদ, প্রবীন আমজনতার এবং বর্তমান প্রজন্মের ডিজিটাল চিন্তাধারার অনেকের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছি তাদের ভাষা এ রকম শেখ সাহেব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সাহেব, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী সাহেব, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যপ্টেন শহীদ এম মনসুর আলী, শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান প্রমুখ যখন রাজনীতি করতেন, সেটিই ছিল খাঁটি রাজনীতি।

দেশ ও জনগণের কল্যাণ ছাড়া অন্য কোনো ভাবনা তাঁদের মধ্যে ছিল না। যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে তাঁরা প্রস্তুত ছিলেন। ব্যক্তি-পরিবারের লাভ-লোকসান তাঁদের বিবেচ্য ছিল না। রাজনীতি করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে গাড়ি-বাড়ি এবং আলিশান জীবন যাপনের স্বপ্ন কখনই দেখেননি তাঁরা। মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী টাঙ্গাইলের সন্তোষপুরে একটি কুঁড়েঘরে বাস করতেন। যেই ঘরের বেড়া ছিল বাঁশের এবং দরজার মুখ ছিল ছালার চট দিয়ে ঢাকা। ১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সপরিবারে বাস করেছেন ওই ঘরেই।

এক বিশেষ পরিস্থিতিতে অনেকটা বাধ্য হয়ে ধানমন্ডীর ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাড়ি নির্মাণ করতে হয়। তাও আবার ধারকর্জ, বন্ধুবান্ধবের সহযোগিতা এবং হাউস বিল্ডিং ফিন্যান্স করপোরেশন থেকে ঋণ নিয়ে। এ বাড়ি নির্মাণের কাজে আর্থিকভাবে ও নানাভাবে সহযোগিতা করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক ও দাপ্তরিক সহকর্মীরা। এর পূর্বে বঙ্গবন্ধু ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।

বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ মরহুম মহিউদ্দিন আহমেদ (এম পি) তার কোনো ব্যাক্তিগত গাড়ি ছিলো না। পাবলিক পরিবহন একমাত্র ভরসা। আসাদ গেটে নেমে হেঁটে হেঁটে যেতেন সংসদে। একদিন শারীরিক অবস্থা ভালো নেই তাই বাসার সামনে থেকে রিকশা যোগে আসাদ গেটের সামনে দিয়ে সংসদের দিকে যেতে থাকলেন, সংসদ ভবনে প্রবেশের মুখে পুলিশ তাঁর রিকশা আটকে দেয়। তিনি পরিচয় দেন, আমি এমপি, ভিতরে যাব। পুলিশ বলল, স্যার দুঃখিত। সংসদ ভবনে রিকশা প্রবেশের অনুমতি নেই। শুধু গাড়ি প্রবেশের অনুমতি রয়েছে। বাধ্যহয়ে বয়োবৃদ্ধ মানুষটি হেঁটে যান সংসদে। ভারাকান্ত মন নিয়ে পয়েন্ট অব অর্ডার তোলেন সংসদে। স্পিকার তাঁকে ফ্লোর দেন।

মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মাননীয় স্পিকার! এই সংসদে শুধু গাড়ি প্রবেশের অধিকার আছে, রিকশা প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। কিন্তু যে এমপির গাড়ি নেই, তিনি কিভাবে সংসদে আসবেন? হেঁটে হেঁটে। তিনি জাতীয় সংসদে পুলিশ কর্তৃক তাঁর রিকশা আটকে দেওয়ার কাহিনি শোনান। সব শুনে স্পিকার দুঃখ প্রকাশ করেন। এখন এসব কিছুই কল্পকাহিনি মনে হবে।

অনেকের মতে, রাজনীতির নামে অনুপ্রবেশকারীদের দৌরাত্মে যা চলছে, তাকে রাজনীতি বললে রাজনীতি শব্দটারও অসম্মান হয়। একটা সময় ছিল যখন রাজনীতিতে যোগদান অত্যন্ত সম্মানজনক বিষয় ছিল, রাজনীতিবিদরা পূজনীয় ছিলেন। এখন রাজনীতি নিয়ে মানুষ যারপরনাই বিরক্ত, ক্ষুব্ধ-বিক্ষুদ্ধ। মানুষ রাজনীতি ও রাজনীতিকদের কষে গালি দিতে দ্বিধাবোধ করেনা।

যে রাজনীতি গোপালগঞ্জের নিভৃতপল্লী – টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেওয়া শেখ মুজিবুর রহমানকে নেতা, পিতা, ত্রাতা, রূপকার, স্থপতি, বঙ্গবন্ধু—নানা অভিধায় সম্মানিত করেছেন, যে রাজনীতির কারণেই রাজনীতিক বঙ্গবন্ধুর কল্যাণ কামনায় এ দেশের মানুষ নফল রোজা রেখেছেন, পূজা-প্রার্থনা করেছেন, সে রাজনীতি কেমন করে বাংলাদেশে চক্ষুশূল হয়ে উঠল? বঙ্গবন্ধুর কন্যা সত্যিই আজ একা।

তার সামনে সৎ সাহস নিয়ে পরামর্শ করবে এমন নেতা, এম পি, মন্ত্রী কই অথচ নেত্রী প্রত্যাশা করে ভালো মন্দের খবর জানতে বা মতামত নিতে চরম আগ্রহী। সাহস করে সৎ কথা বলা দোষের কিছু নয়।

বঙ্গবন্ধু ছাত্রনেতা রাজনীতি শিখছেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর কাছে, একটি সিদ্ধান্তের বিপক্ষে বঙ্গবন্ধু মত দেন তখন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ক্ষিপ্ত হয়ে বঙ্গবন্ধুকে বললেন who are you? you are nobody. বঙ্গবন্ধু বিনয়ের সহিত উত্তর দিলেন  If, I am nobody, then why you have invited me. You have no right to insult me. I will prove that I am somebody. Thank you sir, I will never come to you again..বঙ্গবন্ধুর সৎ সাহসের উত্তর পেয়ে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী একটু ভেবে বঙ্গবন্ধুকে জড়িয়ে ধরলেন এবং বললেন আমি দেখলাম আমার ছাত্র সঠিক সিদ্ধান্ত থেকে সরে যায় কিনা সাবাস শেখ মুজিব সাবাস।

এটাই তো সৌহার্দপূর্ণ রাজনীতির সংস্কৃতি। রাজনীতি এখন লক্ষ্যনীয় আমাদের শ্রদ্ধাভাজন নেতারা মাননীয় নেত্রীর কাছে জ্বী আপা সব ঠিক আছে। মাঠের অবস্থা খুব ভালো আমরাই ক্ষমতায় আসব। তাছাড়া প্রসাশনের সব স্তর তো আমাদের। তাইতো দেখতে হয়েছে-হাসতে হাসতে ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর। অভিজ্ঞ আমাদের নেতারা বুঝতে পারলোনা ক্ষমতা ছাড়ার ৬ মাসে আগেই সরকার গঠনের প্রক্রিয়া হাইজ্যাক হয়েগেছে চক্রান্তকারী দের কাছে।

একেবারেই রাজনৈতিক নেতা, এম পি, মন্ত্রী নেই এটা ভাবা ভুল হবে। তবে তারা ক্ষমতায় থেকেও অসহায়। কয়েক দিন আগে পাবনার একজন জনপ্রীয় সাংসদ সদস্যকে ফোন করেছিলাম কিন্তু সুইচড্ অফ পর পর দু’দিন। দু’দিন পর ফোনে পেয়ে জিজ্ঞাস করলাম ভাই দু,দিন হল ফোনে পাই না ভাই উত্তর দিলো দুই হাজার টাকার ফোন ব্যবহার করি নষ্ট হয়েছিলো ঠিক করতে দিয়েছিলাম। আমার জানা মতে তার বাবা তিন বার এম পি ছিলেন পুরাতন টিনের ঘর নতুন করতে পারে নাই। আজ তার ছেলে এম পি কিন্তু ব্যবসায়ী আর অনুপ্রবেশকারীদের অত্যাচারে নাজেহাল। এটাঠিক সাধারণ মানুষ রাজনীতি নিয়ে বিরক্ত কিন্তু তারা অকোপটে স্বীকার করে দেশরত্ন শেখ হাসিনার কল্যাণে দেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল । শুধু দেশে নয় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু । তার পক্ষেই সম্ভব সকল অপশক্তি বিনাস করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত করা ।

কারো কারো মতে আর কত করবে বঙ্গবন্ধু কন্যা? – নেতা, এম পি, মন্ত্রী বাদ আমরা যারা আমজনতা তারাও তো ভোট দেই দেশোদ্রোহীকে আবার মন্ত্রী বানাই। এই তো সেদিন এক ভয়ংকর চোর ধরে বেকায়দায় সরকার, সংসদে দাঁড়িয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী তাই আক্ষেপ করে বললেন “আমরা চোর ধরে নিজেরাই চোর হচ্ছি” আমরা কোথায় যাই, সাধু সাবধান। বাঘে ধরলে বাঘ ছাড়ে শেখ হাসিনা ধরলে ছাড়েনা।

লেখক: মোঃ ইব্রাহিম হোসেন মুন, পি এইচ ডি গবেষক ও সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

মতিহার বার্তা ডট কম: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply