নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী নগরীর অলকার মোড়ে চেম্বার ভবনের তৃতীয় তলায় অবস্থিত ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানীর কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম চালানোর পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীর নিয়মিত কর্মসূচি পালনের অভিযোগ উঠেছে। আর এ কর্মকা-ের মূল নেতৃত্বে রয়েছেন ফারইস্টের রাজশাহী সার্ভিস সেণ্টারের ভাইস প্রেসিডেণ্ট (উন্নয়ন) মফিজুল ইসলাম। এ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরে চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। ফারইস্ট কর্মকর্তা মফিজুলের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহার ও নানা অনিয়ম নিয়ে এরইমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, এ অফিসের অধিনে অনেক সাধারণ মানুষ মেয়াদকালীন বীমা পলিসি খুলেছিলেন। এক বছর আগে তাদের বীমার মেয়াদ শেষ হলেও তাদের বীমা দাবির টাকা নানা অজুহাতে দেয়া হচ্ছে না। রাজশাহীতে জামায়াতের সন্ত্রাসী তৎপরতার পেছনে এ অর্থ ব্যয় করা হয়েছে বলে অনেকে অভিযোগ উঠেছে ।

ফারইস্টের জোনাল অফিসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি টাঙ্গানোর জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি ছিল কর্মকর্তাকর্মচারীদের। কিন্তু মফিজুল ইসলামের একগুঁয়েমি সিদ্ধান্তের কারণে তা  সম্ভব হচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত এ নিয়ে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিলে তোপের মুখে সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি টাঙ্গানো হয়েছে।

নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র বলছে, এই কার্যালয়টিতে মফিজুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রতি মাসে জামায়াতের মিটিং হয়ে থাকে। প্রতিটি কর্মকর্তা কর্মচারীর নিকট থেকে জামায়াতের মাসিক চাঁদা আদায় করা হয়। পরে সেই টাকা জামায়াতের উর্দ্ধতন নেতৃবৃন্দের নিকট পৌঁছে দেয়া হয়।

নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, এখানকার ক্ষমতাধর কর্মকর্তা মফিজুল চাপাইনবাবগঞ্জের নিম্ন মধ্যবিত্ত জামায়াত-শিবির পরিবারের সন্তান। ছাত্রজীবন তিনি ছাত্রশিবিরের ক্যাডার ছিলেন। পরবর্তিতে তিনি জামায়াতের সুপারিশে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানীতে কর্মজীবন শুরু করেন। অথচ একটি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের কর্মকর্তা হয়ে রাজশাহী নগরীর উপশহর এলাকায় (বাসা নং- ২৩২/২) একটি বহুতল ভবন প্রায় কোটি শেয়ারে নির্মাণ করেছেন মফিজুল ইসলামসহ কয়েকজন।

এছাড়া তিনি অফিসের মাসিক বেতন কর্তনের শর্তে ১৭ লাখ টাকায় একটি গাড়ি ক্রয় করেছেন। অন্যদিকে তার নামে বেনামে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে বহু সম্পদ গড়েছেন। এ নিয়ে খোদ নিজ এলাকা এবং নিজ দফতরে নানা জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। তারা এ প্রতিবেদককে বলেন, আয়কর ভবনে তার ইনকাম টেক্স ফাইলে রির্টান দেখলেই প্রমাণ পাওয়া যাবে বলে সূত্রটি জানিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্সের ভাইস প্রেসিডেণ্ট এবং রাজশাহী ও নওঁগা অফিসের নির্বাহী কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম নিউজ না করার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে তদ্বির শুরু করেন। তবে তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

রাজশাহী অফিসের সার্বজনীন বীমা প্রকল্পের ইন্চার্জ আব্দুল মালেকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মফিজ সাহেব বর্তমানে জামায়াত থেকে বহিস্কৃত হয়েছেন। তবে আব্দুল মালেকের এই বক্তব্য কতটুকু সঠিক তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। মফিজুলকে আড়াল করতে তিনি এমন বক্তব্য দিয়েছেন বলেও এই অফিসের কোনো কোনো কর্মকর্তার মন্তব্য।

মতিহার বার্তা ডট কম: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০