শিরোনাম :
প্রেমিকার বাড়ির সামনে বিষপানে প্রেমিকের মৃত্যু; বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য ‘শাড়ি ক্যানসার’ কেন হয়? তার উপসর্গই বা কী? জানালেন চিকিৎসক ডায়াবেটিকেরাও ভাত খেতে পারেন, তবে মানতে হবে কিছু নিয়ম মল্লিকার সঙ্গে চুমু বিতর্ক, মুখ দেখাদেখি বন্ধ কুড়ি বছর, সাক্ষাৎ পেয়ে কী করলেন ইমরান? ক্যাটরিনার জন্যই সলমনের সঙ্গে সম্পর্কে দূরত্ব, ইদে স্বামীকে নিয়ে ভাইজানের বাড়িতে আলিয়া! রাজশাহী মহানগরীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ২৬ ১৬ মাসের মেয়েকে বাড়িতে একা রেখে ছুটি কাটাতে যান মা, না খেয়ে, জল না পেয়ে মৃত্যু! সাজা যাবজ্জীবন রাজশাহীতে ট্রাকে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি, আটক ২ পুঠিয়ায় পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে গ্রেফতার ৩ ঈদের সাথে যুক্ত হওয়া নববর্ষের উচ্ছ্বাসে বিনোদন স্পট পরিপূর্ণ
রাজশাহীতে পিবিআই কার্যালয়ে দুইদিন আটকে রেখ নির্যাতনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

রাজশাহীতে পিবিআই কার্যালয়ে দুইদিন আটকে রেখ নির্যাতনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

রাজশাহীতে পিবিআই কার্যালয়ে দুইদিন আটকে রেখ নির্যাতনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী এক নারী অভিযোগ করে বলেছেন, তার মেয়ে এবং ছেলেকে পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) রাজশাহী কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে নিয়ে দুইদিন আটকে রেখে তাদের ওপর চরম নির্যাতন করা হয়েছে।

একইসঙ্গে ভুক্তভোগী নারীর জামাই শরিফুল ইসলাম মুন্না হত্যা মামলায় আসামি করে দুইদিন পর তার মেয়ে ও ছেলেকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে।

তিনি বলেন, আমার জামাই অর্থাৎ মেয়ের স্বামী হত্যার সাথে আমার মেয়েকেই আসামি করা হয়েছে। যা খুবই আশ্চর্যের বিষয়। আবার আমার ছেলেও আসামি করা হয়েছে।

বুধবার দুপুরে রাজশাহী রিপোর্টার্স ইউনিটি (আরআরইউ) অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ করে এসব অভিযোগ করেছেন মোসা: সানোয়ারা বেগম। তার বাড়ি নগরীর হাদির মোড় এলাকায়।

সানোয়ারা বেগম বলেন, আমার মেয়ে মোসা: সালমা বেওয়া (৩২) ও আমার ছেলে মো: শান্ত (২৫) তারা দু’জনেই বর্তমানে রাজশাহী জেলহাজতে রয়েছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, পরিকল্পিতভাবে ও অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্যই আমার মেয়ে ও ছেলেকে জামাই হত্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। অথচ তারা ঘটনার কিছুই জানেন না। সানোয়ারা বেগম বলেন, জামাই মুন্না হত্যাকা-ের সাথে প্রকৃতপক্ষে যারা জড়িত অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। একইসঙ্গে এই মামলায় অন্যায়ভাবে আমার মেয়ে ও ছেলেকে জড়ানোর সাথে যারা জড়িত তাদেরও শাস্তি দাবি করেন তিনি।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সানোয়ারা বেগম বলেন, গত ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর বিকেল ৪টার দিকে আমার জামাই শরিফুল ইসলাম মুন্না প্রতিদিনের ন্যায় অটোরিক্সা নিয়ে ভাড়া মারার জন্য বের হন। ওইদিন দিবাগত রাত ১১টার দিকে আমার জামাই আমার মেয়ে সালমার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বলেন, আমাকে ইনজেকশন পুশ করেছে এবং আমি হাটতে পারছে না। তাড়াতাড়ি সিটিহাট এলাকায় চলে এসো। এ খবর পেয়ে আমার মেয়ে আশেপাশের লোকজনদের বিষয়টি জানান। এরপরে দ্রুত মেয়ে সালমা অটোরিক্সায় করে নগরীর শাহমখদুম থানাধীন সিটি হাট এলাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। যাওয়ার পথে আমার জামাইয়ের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে আবার আমার মেয়ের মোবাইলে কল আসে। অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি ফোনে বলেন, মুন্না মারা যাওয়ার অবস্থা, তাড়াতাড়ি চলে আসেন বলেই কল কেটে দেন ওই ব্যক্তি।
এরপর আমার মেয়ে রাত প্রায় ১টা ৫ মিনিটের দিকে সিটি বাইপাস রাস্তা হয়ে ডাবতলা যাওয়ার পথে আমার জামাইয়ের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দেন। এসময় আমার মেয়ে শাহমখদুম থানাধীন বড়বনগ্রাম এলাকার বিল নওদাপাড়া গ্রামে জনৈক শহরত হাজীর মেহগনী বাগানের ভেতর আমার জামাইয়ের মোবাইল ফোনের রিংটন শুনতে পান এবং মোবাইলের আলো জ্বলতে দেখেন। তখন আমার মেয়ে এবং তার সাথে থাকা লোকজন স্থানীয় খিরশিন এলাকার লোজনদের ঘটনাটি জানান।

এরপর মেয়ে সালমা অন্যান্য লোকজন সঙ্গে নিয়ে মেহগনি বাগানে গিয়ে দেখেন আমার জামাই অর্থাৎ মেয়ে সালমার স্বামী মুন্নার লাশ মাটিতে পড়ে আছে। আর তার থুতনীর নীচে ও পিঠে একাধিক গুরুতর জখম। এ অবস্থায় পুলিশে খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে শাহমখদুম থানা পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পরে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) মর্গে পাঠায়।

পরদিন ১১ নভেম্বর জামাই মুন্নার ভাই মামুন বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে শাহমখদুম থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটি তদন্তের জন্য আদালত পিবিআই’র (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) ওপর দায়িত্ব দেন। এরপর থেকে প্রায়ই আমার মেয়ে ও ছেলেকে পিবিআই কার্যালয় থেকে ডেকে পাঠানো হয় এবং মামলাটির তদন্তের স্বার্থে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে তাদের আবারও পিবিআই অফিস থেকে ডেকে পাঠানো হয়। পরে আমার মেয়ে সালমা ও ছেলে শান্ত দু’জনই বিকেল ৩টার দিকে পিবিআই কার্যালয়ে যান। সেখানে যাওয়ার পর দুইদিন আটকিয়ে রেখে তাদের ওপর চরম নির্যাতন ও মারপিট করা হয়। পরে তাদেরকে মুন্না হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। আব্দুল মান্নান নামে পিবিআই’র একজন অফিসার মেয়ে সালমা ও ছেলে শান্তকে দুইদিন আটকে রেখে চরম নির্যাতন ও মারপিট করেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

সানোয়ারা বেগম বলেন, জামাই মুন্না হত্যাকা-ের সাথে প্রকৃতপক্ষে যারা জড়িত অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। একইসঙ্গে এই মামলায় অন্যায়ভাবে আমার মেয়ে ও ছেলেকে জড়ানোর সাথে যারা জড়িত তাদেরও শাস্তি দাবি করেন তিনি।

এ ব্যাপারে রাজশাহী পিবিআই’র ইন্সপেক্টর আব্দুল মান্নান সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, তাদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ সঠিক নয়। বরং তাদের দেয়া তথ্যানুযায়ী হ্যাপি নামের এক ব্যক্তিকে এই হত্যা মামলায় গ্রেফতার করে ইতোমধ্যে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

মতিহার বার্তা ডট কম: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply