শিরোনাম :
গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার! ইজ়রায়েলকে জবাব দিতে সর্বোচ্চ নেতার ফতোয়ার কথাও ভুলতে চায় ইরান, এ বার কি পরমাণু যুদ্ধ?
রাজশাহীর উপকন্ঠ কাটাখালিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গড়ে উঠেছে মিষ্টির কারখানা!

রাজশাহীর উপকন্ঠ কাটাখালিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গড়ে উঠেছে মিষ্টির কারখানা!

রাজশাহীর উপকন্ঠ কাটাখালিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গড়ে উঠেছে মিষ্টির কারখানা!

নিজস্ব প্রতিবেদক: নোংরা পরিবেশে চিনির সিরা ও নামমাত্র দুধ দিয়ে তৈরি হচ্ছে মিষ্টি ও রসমালাই। এসব খাবারে যেমন পুষ্টির অভাব রয়েছে তেমনি স্বাস্থ্যের জন্যও এই খাবার ভয়াবহ ক্ষতিকর বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
রাজশাহীর উপকন্ঠ কাটাখালি থানাধীন পূর্বপাড়া নাছিমুদ্দিন মিষ্টান্ন ভান্ডারের কারখানার মিষ্টি ও রসমলাই তৈরিতে চিনির সিরাতে ভাসছে তেলাপোকা। যা দেখলে যে কারও ভ্রু কুঁচকে উঠতে পারে।
চুলায় ছানা তৈরির দুধে পানি, তাতে আবার ময়দা মেশানো। পাশে রাখা চিনির সিরায় ভাসছে পোকা-মাকড়। দেখলে অরুচি হতে বাধ্য। মিষ্টি কারখানার মালিক ইলিয়াস আলী বলেন, রাতের বেলা আমরা কাজ করি। এক কেজি ছানা থেকে ৪ কেজি মিষ্টি তৈরি হয়। তাহলে বুঝায় যায়,মিষ্টির মধ্যে কি থাকতে পারে!
কোনও ভ্রাম্যমাণ আদালত বা আইনি জটিলতায় না পড়তে হয়। নিজেদের ব্যবহারের জন্য তারা অন্য দরজা ব্যবহার করে। হঠাৎ বাইরের কেউ এলে আগেভাগে সতর্ক হওয়ার জন্য বাইরে আছে তার আত্মীয়স্বজনসহ সোর্স । অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে তৈরি হয় নানা রং মিশিয়ে কালোজাম, কমলাভোগ, লালমোনসহ অন্যান্য মিষ্টি।
যার নেই কোনও মানদণ্ড, নেই অনুমোদনও। এমন অপুষ্টিকর ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের ব্যাপারে জানতে চাইলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বলেন, আমরা প্রত্যক্ষভাবে বিষ না খেলেও পরোক্ষভাবে বিষ খাচ্ছি। বেকারির অনেক খাবারে অনেক সময় কাপড়ের রং ব্যবহার করা হয়। এই রংযুক্ত খাবারগুলো সরাসরি আমাদের পাকস্থলিতে ক্ষতি করে।
অন্যদিকে মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা বলেন, এইসব খাবার খেলে দুই ধরনের সমস্যা হতে পারে। এক হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা আবার তাৎক্ষণিক কিছু সমস্যা। তাৎক্ষণিক সমস্যার মধ্যে শরীরে এলার্জি হতে পারে। আর দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার মধ্যে ডায়রিয়া ও ক্যানসাসের মতো বড় ধরনের রোগও হতে পারে। তাই আগামী প্রজন্মকে রক্ষায় ভেজাল খাবার বন্ধে, সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। পাশাপাশি ক্রেতাদেরও সচেতন হতে হবে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় চলছে মিষ্টি কারখানার কার্যক্রম। মিষ্টি কারখানার পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে পাওয়া যায় দুর্গন্ধ। এই দুর্গন্ধের কারণে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। শুধুমাত্র ট্রেড লাইসেন্স দিয়েই চলছে মিষ্টি তৈরির কারখানা। পরিবেশ অধিদপ্তর, বিএসটিআই,ফায়ার সার্ভিস এর কোন অনুমোদনপত্র তারা দেখাতে পারেনি। গত তিন বছর থেকে চলছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টি তৈরি। এভাবেই সরকারের ট্যাক্স ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে চলছে মিষ্টি তৈরির কার্যক্রম।

বসত বাড়ির মাঝখানে খাদ্য অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া চলছে মিষ্টি কারখানা ও পরিবেশ দূষণ। পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বসবাস করা কষ্ট সাধ্য হয়ে পরেছে এলাকাবাশীর। পানি দূষণ সহ দূর্গন্ধ ও মশার উপদ্রব বেড়ে গেছে। দূর্গন্ধের কারনে বসবাস করা দুষ্কর। স্থানীয় ভুক্তভোগীদের মধ্যে মিজানুর রহমান, সেফালি বেগম, বেলী বেগম, বিনা বেগম, সদরুল, গাফফার,রাহেলা ও মুস্তাফিজুর রহমানসহ একাধিক প্রতিবেশীরা অভিযোগ করে বলেন, মিষ্টি তৈরীর ময়লা পানি আশেপাশের জমিতে ফেলার কারনে জলাবদ্ধতা, পানি দূষন সহ দূর্গন্ধ ও মশার উপদ্র, বসবাস করা অসাধ্য হয়ে পরেছে। অনেক বার বাধা দেওয়ার পর ও পানির দূর্গন্ধ বন্ধ করার ব্যবস্থা নেয়নি কারখানার মালিক। এনিয়ে কথা বলতে গেলে ঝগড়াসহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মিষ্টি কারখানার মালিক ইলিয়াস ও তার স্ত্রী।
জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের ইডি মিজানুর রহমান জানান মিষ্টি তৈরির কারখানায় অবশ্যই পরিবেশের ছাড়পত্র লাগবে। কারখানার মালিককে খেয়াল রাখতে হবে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হচ্ছে কিনা কারখানার পাশের লোকজনের কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা, কারখানা থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে প্রতিবেশীদের সমস্যা হচ্ছে কিনা। এছাড়া ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় মিষ্টি তৈরীর কারখানা কার্যক্রম সরকারিভাবে নিষিদ্ধ রয়েছে।

ইডি আরো জানান যদি প্রতিবেশীদের ব্যাপক অভিযোগ থাকে তাহলে কারখানা স্থান পরিবর্তন করতে হবে। তা না হলে কারখানার মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

মতিহার বার্তা ডট কম: ২১ অক্টোবর ২০২০

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply