শিরোনাম :
গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার! ইজ়রায়েলকে জবাব দিতে সর্বোচ্চ নেতার ফতোয়ার কথাও ভুলতে চায় ইরান, এ বার কি পরমাণু যুদ্ধ?
পুঠিয়ায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের পিটুনিতে পঙ্গু রাজমিস্ত্রি

পুঠিয়ায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের পিটুনিতে পঙ্গু রাজমিস্ত্রি

পুঠিয়ায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের পিটুনিতে পঙ্গু রাজমিস্ত্রি
পুঠিয়ায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের পিটুনিতে পঙ্গু রাজমিস্ত্রি

পুঠিয়া প্রতিনিধি : রাজশাহীর পুঠিয়ায় কাজের সহযোগিতা চাওয়ার কারণে দু’জন ফায়ার ও সিভিল ডিফেন্স কর্মীর পিটুনিতে পঙ্গু হওয়ার পথে আব্দুস সাত্তার মন্ডল (৫৫) নামের একজন রাজমিস্ত্রি। এ ঘটনায় ভূক্তভোগি থানায় অভিযোগ করলে উল্টা তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, মিস্ত্রিকে মারধর করায় এলাকার লোকজন দু’ফায়ারম্যান কর্মীর উপর ক্ষীপ্ত। যার কারণে ধর্ষণের মত মিথ্যা মামলা দিয়ে ও তাদের নৃশংসতা বিভিন্ন মাধ্যমে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

থানার মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ অক্টোবর উপজেলার কাঠালবাড়িয়া গ্রামের তাসের আলী স্বর্ণকারের বাড়িতে কাজ করছিল রাজমিস্ত্রি সাত্তার মন্ডল। ওইদিন বিকেলে সাত্তার মন্ডল প্রতিবেশী ভাড়াটিয়া ফায়ার সার্ভিস কর্মী মনিরুল ইসলামের ছেলে শাহরিয়ার ইসলাম তালহাকে (৭) ইট গাঁথুনির সুতলি ধরতে বলেন।

ছেলেকে হুকুম দেয়ায় ক্ষীপ্ত হয়ে ফায়ারম্যান মনিরুল ইসলাম ওই মিস্ত্রিকে রডদিয়ে পিটুনি শুরু করেন। সে সময় মনিরুল ইসলামের সাথে যোগ দেন খুরশিদ আলম নামের অপর এক ফায়ারকর্মী। দু’জনের পিটুনিতে মাটিতে মুহুর্তের মধ্যে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মিস্ত্রি সাত্তার।

পরে আশে পাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করেন।

ভুক্তভোগি পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার পরেরদিন ২৩ অক্টোবর দুপুরে এ বিষয়ে দু’জন ফায়ারম্যানকে আসামি করে থানায় একটি অভিযোগ দেয়া হয়। আমাদের অভিযোগ দেয়ার পর বিকেলে ফায়ারম্যান মনিরুলের স্ত্রী শাপলা খাতুন ছেলেকে ধর্ষণ করা হয়েছে উল্লেখ করে সাত্তার মিস্ত্রির নামে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৩২ তারিখ-২৩/১০/২০ ইং। আর আমরা আগে অভিযোগ দিলেও আমাদের মামলা তার পরের দিন ২৪ অক্টোবর দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং-৩৬।

তারা মামলায় ধর্ষণ উল্লেখ করলেও ওই ছেলেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তা অস্বীকার করেছে। আবার বিভিন্ন মাধ্যমে আমাদের
বলছেন বিষয়টি মিমাংসা না করলে পরে ধর্ষণ মামলাসহ আরো বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে হবে।

আহত সাত্তার মন্ডলের স্ত্রী নেসপাতি বেগম বলেন, শুধু একটু কাজের সাহায্য চাওয়ায় ওরা আমার স্বামীকে পিটিয়ে মুখের দাঁত ও দু’টি হাত ভেঙে দিয়েছে। যাতায়াত খরচের কারণে ৫দিন রামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে বাড়িতে এনে রেখেছি। আগামি শনিবার ভাঙা দু’হাতের অপারেশন করাতে বলেছেন ডাক্তাররা। আমাদের পরিবারে তিনি একমাত্র উপার্জনকারী। তার কাজের উপর আমাদের সংসার চলে।

এদিকে আমাদের ঘরে দু’টি প্রতিবন্ধী ছেলে-মেয়ে আছে। টাকার অভাবে তার সঠিক চিকিৎসা করাতে পারছি না। আমার স্বামীকে মেরে পঙ্গু বানিয়ে এখন উল্টা তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছে বলে লোকমুখে শুনেছি। তিনি আরো বলেন, আমার স্বামী যদি ধর্ষণ করে থাকে তাহলে পুলিশ তাকে আটক করছেন না কেনো? উল্টা রাজনৈতিক নেতা ও থানার লোকজন আমাদের প্রতিনিয়ত বলছেন বিষয়টি মিমাংসা করে নিতে।

প্রত্যক্ষদর্শী তাসের আলী স্বর্ণকার বলেন, রাজমিস্ত্রি সাত্তার দীর্ঘদিন থেকে আমাদের এখানে কাজ করেন। তিনি অত্যন্ত সহজ সরল ও ভালো মনের মানুষ। ফায়ারম্যানরা তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ওই মিস্ত্রিকে রড দিয়ে পিটিয়ে প্রায় পঙ্গু বানিয়ে দিয়েছে। তারা পিটিয়েই ক্ষান্ত হননি এলাকার জনরোষ ঠেকাতে ওই মিস্ত্রির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে একটি মামলাও দায়ের করেছেন। বর্তমানে বিষয়টি আপস করানোর জন্য ওই মিস্ত্রির পরিবারকে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দেয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসকর্মী মনিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই রাজমিস্ত্রি আমার ছেলেকে বলৎকার করেছে তাই আমি তাকে ধাক্কা দিয়েছি। আইনের আশ্রয় না নিয়ে পিটিয়ে দু’হাত ও মুখের দাঁত ভেঙ্গে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা রাজনীতি আপনি বুঝতে পারবেন না।

তবে মামলার অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কর্মকর্তা ও থানার উপপরিদর্শক শামছুল আলম বলেন, এ সকল বিষয়ে মুঠোফোনে বলা যাবে না। সময় করে থানায় আসেন স্বাক্ষাতে কথা বলবো।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুঠিয়া সার্কেল) আবুল কালাম সাহিদ বলেন, মিস্ত্রির অভিযোগ আগে দিলেও লেখায় কিছু সমস্যার কারণে পরে মামলাভূক্ত করা হয়েছে। আর দু’টি মামলা অতি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

মতিহার বার্তা ডট কম: ০২ নভেম্বর ২০২০

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply