শিরোনাম :
প্রেমিকার বাড়ির সামনে বিষপানে প্রেমিকের মৃত্যু; বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য ‘শাড়ি ক্যানসার’ কেন হয়? তার উপসর্গই বা কী? জানালেন চিকিৎসক ডায়াবেটিকেরাও ভাত খেতে পারেন, তবে মানতে হবে কিছু নিয়ম মল্লিকার সঙ্গে চুমু বিতর্ক, মুখ দেখাদেখি বন্ধ কুড়ি বছর, সাক্ষাৎ পেয়ে কী করলেন ইমরান? ক্যাটরিনার জন্যই সলমনের সঙ্গে সম্পর্কে দূরত্ব, ইদে স্বামীকে নিয়ে ভাইজানের বাড়িতে আলিয়া! রাজশাহী মহানগরীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ২৬ ১৬ মাসের মেয়েকে বাড়িতে একা রেখে ছুটি কাটাতে যান মা, না খেয়ে, জল না পেয়ে মৃত্যু! সাজা যাবজ্জীবন রাজশাহীতে ট্রাকে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি, আটক ২ পুঠিয়ায় পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে গ্রেফতার ৩ ঈদের সাথে যুক্ত হওয়া নববর্ষের উচ্ছ্বাসে বিনোদন স্পট পরিপূর্ণ
রাবি’র বিভিন্ন টেন্ডার নিয়ন্ত্রণে ডন

রাবি’র বিভিন্ন টেন্ডার নিয়ন্ত্রণে ডন

রাবি’র বিভিন্ন টেন্ডার নিয়ন্ত্রণে ডন
ফাইল ফটো

স্টাফ রিপোর্টার : মমতাজুর রহমান ডন। ছাত্রদল সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন তিনি। বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বড় বড় ঠিকাদারি কাজ করেন নামে-বেনামে। কোটেশনের কাজগুলোও করেন একক নিয়ন্ত্রণে। বর্তমানে তিনি বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক। নির্মাণ করছেন আলিশান বাড়িও। রাবিতে তিনি টেন্ডার ডন নামেই পরিচিত। আ’লীগ ঘরানার লোকদের ও রাবি কর্তৃপক্ষর একটি অংশকে ম্যানেজ করেই তিনি নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে সমর্থ হয়েছেন। তিনি এখনও তিনি নানা উপায়ে তাদের ম্যানেজ করেই টে-ার বাণিজ্য করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মতিহার থানা আওয়ামী লীগের এক নেতা জানিয়েছেন, দিনের বেশিভাগ সময়ই রাবিতে কাটান ডন। অভিযোগ রয়েছে, রাবি প্রশাসনের ইঞ্জিনিয়াদের একটি অংশকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে কোটি কোটি টাকার টে-ার কাজ বাগিয়ে নিচ্ছেন তিনি। এছাড়া কোটেশনের ২ থেকে ৫ লাখ টাকার কাজগুলিও তার নিয়ন্ত্রণেই হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহী নগরীর মতিহার থানাধীন ধরমপুর এলাকার ব্যাংক কর্মচারী মৃত হাশেমের ছেলে ডন। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে বিএনপির রাজনৈতিক ও দলীয় কার্যক্রম থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন তিনি। তবে বিএনপি’র শীর্ষ কয়েকজন নেতার সাথে দীর্ঘদিন ধরেই গভীর সখ্যতা রয়েছে তার। আজ থেকে ১২ বছর আগে পেশাগতভাবে তিনি সাটারিং-এর কাঠ বিক্রির কাজ করতেন। কিন্তু এক যুগ পরে এসে তিনি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়েছেন। বর্তমানে তিনি বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক। নির্মাণ করছেন আলিশান বাড়ি। অনেকের মনে প্রশ্ন তিনি কীভাবে এই সময়ের মধ্যে এতো অর্থসম্পাদের মালিক হলেন।

রাবি’র প্রকৌশল শাখার একটি সূত্র জানায়, বর্তমানে ব্রাইট, ভারসন, স্মাট, খালেদসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে নিজেই কয়েক কোটি টাকার কাজ করছেন বর্তমানে ডন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে নিজেই কয়েক কোটি টাকার কাজ করছেন। টেন্ডার ছাড়াই কোটেশনের মাধ্যমে অনেক কাজও হাতিয়েছেন তিনি। এভাবে প্রায় এক যুগ ধরে কাজ করে তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার এসব কর্মকা-ের নেপথ্যে রয়েছেন রাবির ইঞ্জিনিয়ারদের একটি সিন্ডিকেট। এছাড়া ডনকে ঠিকাদারী কাজ পাইয়ে দিতে প্রকৌশলীদের সাথে যোগাযোগ ও সার্বিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে সমন্বয় করেন প্রকৌশল শাখার নি¤œমান সহকারী নূরে আলম মামুন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাবির একাধিক ঠিকাদার জানান, ডনের সাথে গোপন সখ্যতা রয়েছে রাবি প্রকৌশল শাখার চার কর্মকর্তার। তারা হলেন- রাবি’র ভারপ্রাপ্ত চিফ ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম আজাদ, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবুল কাশেম, পরিকল্পনা উন্নয়ন দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার শাহারিয়ার রহমান ও একই দপ্তরের উপ-পরিচালক মশিউর রহমান। এসব কর্মকর্তার সাথে গোপন লেনদেনের মাধ্যমে কোটেশনের কাজগুলি নিয়ন্ত্রণ করছেন ডন। এছাড়া কোটি কোটি টাকার বড় কাজগুলো ইজিপির মাধ্যমে হলেও ডন উপর মহলের সংশ্লিষ্ট কর্তাদের ম্যানেজ করে কাজগুলো তার পছন্দের লাইসেন্সের অনুকুলে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এতে গোপন পিন নম্বর (পাসওয়ার্ড) দিয়ে থাকেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তিনজন ইঞ্জিনিয়ার বলেও অভিযোগ একাধিক ঠিকাদারের।

১৮ হতে ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে ইজিপির মাধ্যমে ৭-৮টি টেন্ডার দাখিল ও ওপেন করার কথা রয়েছে। ঠিকাদারদের আশংকা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রাবির টেন্ডার সিন্ডিকেটের কর্মকর্তারা পিন কোর্ড (পাসওয়ার্ড) পাচার করে দিয়ে সিন্ডিকেটের হোতাকে কাজ পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করতে পারেন। এই ডনের নেতৃতেই রয়েছে প্রভাবশালী টেন্ডার সিন্ডিকেট।

এ ব্যাপারে ঠিকাদার মমতাজুর রহমান ডন বলেন, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে আমি নিয়মিত ঠিকাদারী কাজে অংশ গ্রহণ করি এবং ইজিপি‘র মাধ্যমে ব্রাইট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সে পাওয়া কাজগুলো ক্রয় করে কাজ করে থাকি। ইজিপি‘র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে গোপন সখ্যতার বিষয়টি অস্বিকার করে তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী আর বাকি ঠিকাদারদের মতই আমি কাজ করে থাকি। আমি কোন অনিয়মের সাথে জড়িত নই।

প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম আদাজ বলেন, ইজিপি‘র মাধ্যামে যে টেন্ডারগুলো হয়, সে গুলো আমরা শুধুই দেখভাল করি। কোটেশনের কাজগুলো নিয়ম অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়।

পরিকল্পনা উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক প্রকৌশলী -শাহারিয়ার আলম বলেন, আমার জানামতে ইজিপি‘র মাধ্যমে পাওয়া শেখ রাসেল স্কুলের কাজ করছেন মমতাজুর রহমান ডন। এই কাজটি ১২কোটি টাকার। ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নাম শিকদার কন্সট্রাকশন। এছাড়া আমার অন্যকোন বিষয় জানা নাই। তবে তিনি পিনকোর্ড (পাসওয়ার্ড) পাচারের বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আবুল কাশেম বলেন, এ সমস্ত ব্যাপারে আমার কোন কিছু জানা নাই। তিনি প্রধান প্রকৌশলীর নিকট জানুন বলে ফোন কেটে দেন।

মতিহার বার্তা ডট কম- ২০ ডিসেম্বর ২০২০

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply