স্টাফ রিপোর্টার: গতবছর পুকুর খননের জন্য চারটা মামলার আসামি হয়েছেন দালাল মিনারুল। তারপরও এবার নির্বিঘ্নেই পুকুর কাটছেন মিনারুল ইসলাম । রাজশাহীর পবা উপজেলার সরিষাকুঁড়ি গ্রামের বাসিন্দা তিনি। গ্রামের পাশেই বড়বিল নামের এক মাঠে কয়েকদিন ধরে বিশাল পুকুর কাটছেন তিনি।
বর্তমানে পুকুর খননের ক্ষেত্রে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু নির্বিঘ্নেই পুকুর কাটছেন মিনারুল ইসলাম। মিনারুল কর্ণহার থানার ‘দালাল’ হিসেবে পরিচিত। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলী তুহিনের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক। এলাকায় নানা অপকর্মের হোতা এই মিনারুল।
বড়বিলে মিনারুল প্রায় ১৩ বিঘা ফসলি জমিতে পুকুর খনন করছেন। গতবার পুকুর খননের জন্য চারটা মামলা হলেও এবার তার ব্যাপারে চুপ স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন। ফলে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা মিনারুলের পুকুর কাটা হচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয় চাষিরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তারা বলছেন, বিলের ভেতর এই পুকুরটি খনন শেষ হলে পাড়ের কারণে বর্ষায় পানি নামবে না। তাদের জমিয়ে তলিয়ে থাকবে।
বুধবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একটি ড্রেজার মাটি কেটে যাচ্ছে। তিনটি ট্রাক্টর সেই মাটি তুলে নিয়ে ইটভাটায় যাচ্ছে। শ্রমিকেরা জানালেন, কয়েকদিন ধরে তারা দিনরাত সব সময় কাজ করছেন যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে পুকুর কাটা শেষ হয়। এ পর্যন্ত তারা কোন বাধা পাননি।
পুকুর কাটার স্থানেই ছিলেন মিনারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘১৩ বিঘা জমিতে পুকুর কাটছি। এর মধ্যে সাড়ে ছয় বিঘা জমি আমার নিজের। আর বাকি জমি আমার চাচা সদর হাজির।’ পুকুর খননে আদালতের নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে জানতে চাইলে মিনারুল বলেন, ‘আমি আমার জমিতে পুকুর কাটছি। এতে কার কী? পুকুর কাটতে না পারার কী আছে?’ উল্টো প্রশ্ন করেন তিনি।
বড়বিলের কৃষকেরা জানিয়েছেন, মিনারুল ইসলাম থানার দালাল হিসেবে পরিচিত। পুলিশের সঙ্গে তার ভাল সম্পর্ক। এই প্রভাব খাটিয়েই তিনি পুকুর কাটছে। পুকুরটি খনন শেষ হলে বর্ষকালে বিল থেকে আর পানি বের হতে পারবে না। তখন তাদের জমি দীর্ঘ সময় পানিতে নিমজ্জিত থাকবে। ফসল হবে না। তারা সমস্যায় পড়বেন। তাই তারা পুকুর খনননের কাজটি বন্ধ করে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। তা না হলে উপজেলা প্রশাসন ঘেরাও করা হবে।
জানতে চাইলে পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিমুল আকতার বলেন, পুকুর খননের বিষয়টি তার জানা নেই। কেউ অভিযোগ করলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
মিনারুলের নাম বললেই কর্ণহার থানার ওসি আনোয়ার আলী তুহিন তাকে চিনতে পারেন। তবে তার সঙ্গে বিশেষ কোন সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেন। ওসি বলেন, গতবারও মিনারুল পুকুর কাটার চেষ্টা করেছিলেন। তখন তার নামে চারটা মামলা নিয়েছিলাম। ভূমি অফিস মামলা করেছিল। সে কারণে মিনারুলকে চিনি। এবারও তিনি পুকুর কাটছেন বলে শুনেছি। উপজেলা প্রশাসন আর ভূমি অফিসই এ ব্যাপারে অভিযান চালায়। তারা ব্যবস্থা নিতে পারে।
মতিহার বার্তা ডট কম: ১১ জানুয়ারী ২০২১
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.