শিরোনাম :
গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার! ইজ়রায়েলকে জবাব দিতে সর্বোচ্চ নেতার ফতোয়ার কথাও ভুলতে চায় ইরান, এ বার কি পরমাণু যুদ্ধ?
রাজশাহী থেকে বিদায় নিলেন রেলওয়ের হিসাব কর্মকর্তা (এফএএন্ডসিএও)

রাজশাহী থেকে বিদায় নিলেন রেলওয়ের হিসাব কর্মকর্তা (এফএএন্ডসিএও)

রাজশাহী থেকে বিদায় নিলেন রেলওয়ের হিসাব কর্মকর্তা (এফএএন্ডসিএও)
রাজশাহী থেকে বিদায় নিলেন রেলওয়ের হিসাব কর্মকর্তা (এফএএন্ডসিএও)

এসএম বিশাল: রাজশাহী থেকে বিদায় নিয়েছেন পশ্চিম রেলওয়ের অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব কর্মকর্তা (এফএএন্ডসিএও)

বিদায় নিলেন রেলওয়ের হিসাব কর্মকর্তা জামশেদ মিনহাজ রহমান।

।আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ৩ টার দিকে সরকারি গাড়িতে করে ঢাকার পথে রওনা দেন তিনি। এসময় তাকে বিদায় জানান তারই দপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

যাওয়ার পথে তিনি সকলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে ইনবক্সে বিষয় গুলি জানাতে।

জানা গেছে, ঢাকা সেগুনবাগিচা আইটি অডিটের মহাপরিচালক পদে তিনি বদলি হয়েছেন। একই পদের মো: মশিহউল হাসান রাজশাহী পশ্চিম রেলওয়ের অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব কর্মকর্তা (এফএএন্ডসিএও) পদে যোগদান করবেন।

উল্লেখ্য সরকারি দপ্তরে সাধারণত কাজের সময় সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা। কিন্তু পশ্চিম রেলওয়ের অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব কর্মকর্তা (এফএএন্ডসিএও) জামশেদ মিনহাজ রহমান দাপ্তরিক কাজকর্ম শুরুই করতেন সন্ধ্যার পর, চলত মধ্যরাত এমনকি গভীর রাত পর্যন্ত। এ নিয়ে বিপাকে পড়তেন অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কর্মক্ষেত্রে অসদাচরণ, কাজের পরিবেশ নষ্ট করাসহ নানা অভিযোগ করেছেন।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাজশাহীতে পশ্চিম রেলওয়ের সদর দপ্তরে যোগ দেন জামশেদ। ওই দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জানান, তখন থেকে অদ্ভুত নিয়মে চলত এ দপ্তর। ওই কর্মকর্তা সাধারণত দুপুরের পর অফিসে আসতেন। তবে দিনে সামান্যই কাজকর্ম করতেন। ধুমধাম করে খাওয়াদাওয়া আর ধূমপান করে ফুর্তিতেই কাটাতেন সারা দিন। সন্ধ্যার পর থেকে ফাইলপত্র দেখা শুরু করতেন। সন্ধ্যা হলে ঠিকাদাররা অফিসে আসত। প্রকাশ্যে দরদাম ও দেনদরবার চলত ওই দপ্তরে। সমঝোতা শেষ হলে তবেই ফাইল ছাড়তেন তিনি। কখনো কখনো এসব করতে ভোরও হয়ে যেত।

তারা আরও জানান, অফিসের প্রধান রাত ১২টা-১টা, কখনো ৩টা পর্যন্ত অফিসে অবস্থান করতেন। ফলে অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এর আগে অফিস ত্যাগ করতে পারতেন না। অতিরিক্ত সময় দায়িত্ব পালনের জন্য কাউকে ওভারটাইমও (অতিরিক্ত মজুরি) দেওয়া হয় না। অন্যদিকে গভীর রাত পর্যন্ত অফিসে থাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পরিবার থেকে একরকম বিচ্ছিন্ন তেকেছেন। এতে অনেকের পরিবারে অশান্তি ও অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। যে বাসভবনে তিনি থাকেন, সেখানকার প্রহরী ও তত্ত্বাবধায়কদেরও তার ফেরার অপেক্ষায় গভীর রাত পর্যন্ত বসে থাকতে হত। এ নিয়ে কেয়ারটেকারদের সঙ্গে তার কয়েক দফা সমস্যাও তৈরি হয়। পরে ভাড়া বাসার কেয়ারটেকারদের রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য দিয়ে শাসানোর চেষ্টা করতেন। এ কারণে গত সেপ্টেম্বরে ভবন মালিক তাকে বাসা ছেড়ে দেওয়ার জন্য মৌখিকভাবে নোটিশও দেন। তবে তিনি বাসা ছেড়ে যাননি।

কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আরও অভিযোগ করেন, পশ্চিম রেলওয়ের অতিরিক্ত অর্থ উপদেষ্টা ও হিসাব কর্মকর্তাকে পাশ কাটিয়ে অধিকাংশ ফাইলপত্র নিজের কাছে নিয়ে নিতেন জামশেদ মিনহাজ রহমান। তারপর নিজের মতো করে বিল ছাড়করণসহ এককভাবে অন্য সব সিদ্ধান্ত নিতেন। এ নিয়ে সম্প্রতি অতিরিক্ত অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে তার উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ও হয়েছে। কর্মচারীরা অভিযোগ করেন, গভীর রাত পর্যন্ত অফিস করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে বা তার কোনো কাজে প্রতিবাদ করলে ওই কর্মচারীকে বদলি করে থাকেন প্রধান হিসাব কর্মকর্তা।

এ পর্যন্ত প্রায় ১০ জনকে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বা লালমনিরহাট বিভাগে বদলি করেগেছেন তিনি। সমঝোতার পর কারও কারও বদলি বাতিলও করেছেন। তারা আরও বলেন, অর্থ উপদেষ্টা দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এ পর্যন্ত অনেকটা গোপনে অস্থায়ী ভিত্তিতে ১৬ কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন। অথচ সরকারি নির্দেশে রেলওয়েতে সব ধরনের নিয়োগ বন্ধ। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, তার সংলগ্ন শৌচাগারে (অ্যাটাস্ট বাথরুম) আলিশান একটি চেয়ার রয়েছে। মাঝেমধ্যেই তিনি ওই চেয়ারে সময় কাটান। কর্মচারীরা তার ডোপ টেস্টের (মাদকাসক্তি পরীক্ষা) অনুরোধ জানিয়েছেন।

জামশেদ মিনহাজ রহমান ১৮তম বিসিএসের মাধ্যমে হিসাব ক্যাডারে চাকরি পান। খাদ্য মন্ত্রণালয়ে হিসাব কর্মকর্তা হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর সরকারি অনুমতি বা ছুটি না নিয়েই কানাডায় চলে যান পরিবারসহ। ফলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী শৃঙ্খলা আইনে তার চাকরি চলে যায়। প্রায় ১০ বছর পর দেশে ফিরে চাকরি ফেরত পেতে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। বহু দেনদরবার ও তদবিরের মাধ্যমে মামলায় রায় পক্ষে নেন। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাকে রাজশাহীতে পশ্চিম রেলের অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব কর্মকর্তা হিসাবে পদায়ন করা হয়।

তবে বদলির বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা (এফএএন্ডসিএও) জামশেদ মিনহাজ রহমান কোনো মন্তব্য করতে চাননি। এদিকে ওই দপ্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তা অর্থ উপদেষ্টার বদলির বিষয়টি নিশ্চত করেছেন।

মতিহার বার্তা ডট কম: ১১  ফেব্রয়ারি ২০২১

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply