নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর পুঠিয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারীর অভাবে ভাটা মালিকরা মানহীন ও পরিমাপে ছোট ইট তৈরি করছেন। সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগ ভাটা মালিকদের কারসাজিতে অতিরিক্ত দামে ইট কিনে তারা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।
জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় মোট ১৪টি ইটভাটা চালু রয়েছে। সরকারী নিয়ম অনুসারে প্রতিটি ইটের পরিমাপ হবে দৈর্ঘ ১০ ইঞ্চি, প্রস্তু ৫ ইঞ্চি ও উচ্চতা ৩ ইঞ্চি। অথচ ভাটা মালিকরা ওই নিয়মকে বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়ে তাদের ইচ্ছেমত ইট তৈরি করছেন।
ইটভাটা গুলো ঘুরে দেখা গেছে কোনো ভাটার মালিক নিয়ম অনুসারে ইট তৈরি করছেন না। তারা প্রতিটি ইটের দৈঘ্য ১০ এর পরিবর্তে সাড়ে ৯ ইঞ্চি, প্রস্ত ৫ এর পরিবর্তে সাড়ে ৪ ইঞ্চি ও উচ্চতা তিনের পরিবর্তে পৌনে তিন ইঞ্চি করে তৈরি করছেন।
ইট তৈরির সংশ্লিষ্ঠ কারিগররা বলেন, প্রতিটি ইটের ফর্মার দু’দিকে আকারে হাফ ইঞ্চি ছোট করা আছে। তবে মালিকরা আমাদের যে ফর্মা দিচ্ছেন আমরা সে ভাবেই ইট তৈরি করছি। এর ফলে এক হাজার ইট তৈরির মাটিতে ৬০ পিস অতিরিক্ত তৈরি হয়।
উপজেলা ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দীন বলেন, বিগত দিনে দু’একটি ভাটার ইট সাইজে ছোট তৈরি হতো। গত দু’বছর থেকে সকল ভাটা মালিকরা পরিমাপে কম করে একই মাপের ইট তৈরি করছে।
জিউপাড়া এলাকার ইট ক্রেতা বেলাল হোসেন বলেন, ভাটা মালিকরা বর্তমানে ১নং ইটের দাম নিচ্ছে ৮ হাজার ৫০০ টাকা। অথচ তারা ইট আকারে অনেক ছোট করে আমাদের সাথে প্রতারনা করছেন। এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার অথবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকট অভিযোগ দিচ্ছেন না কেনো? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অভিযোগ দিলে আইনী জঠিলতার পাশাপাশি ভাটা মালিকদের রোষানলে পড়তে হবে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন ভাটা মালিক বলেন, আমাদের একটি মালিক সমিতি রয়েছে। ভাটার কোনো সমস্যা ও পুলিশ-প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তর দেখার দ্বায়িত্ব সমিতির। সে মোতাবেক প্রতিটি ইটভাটা থেকে মাসে মোটা অংকের একটি অর্থ সমিতিতে দিতে হয়। এছাড়া উপজেলায় বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান গুলোতে আলাদা ভাবে আমরা চাঁদা দিয়ে থাকি।
তবে উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি নাসির উদ্দীন মন্ডল বলেন, আমরা ইট কাঁচা অবস্থায় সঠিক মাপে তৈরি করি। পোড়ানোর পর সাইজ কি হলো সেটা দেখার বিষয় নয়। ক্রেতারা পছন্দ হলে নিবেন না হলে নয়। আমরা ক্রেতাদের জোর করে দিচ্ছি না। তবে বিভিন্ন এলাকার ভাটার চেয়ে আমাদের সমিতির ইটের সাইজ ভালো আছে। আর যে ভাটা গুলো অবৈধ সে গুলোর বিষয়ে কিছুই জানা নেই।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ বলেন, ভাটা গুলো ইটের সাইজ ছোট করার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আর এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে ইট তৈরিতে পরিমাপ কম দেয়ার কোনো নিয়ম নেই। যারা এই কাজ করছেন তাদের বিরুদ্ধে অব্যশই আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে শিঘ্রই অভিযান করবেন তারা বলেও জানান তিনি।
মতিহার বার্তা / ইএবি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.