শিরোনাম :
গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার! ইজ়রায়েলকে জবাব দিতে সর্বোচ্চ নেতার ফতোয়ার কথাও ভুলতে চায় ইরান, এ বার কি পরমাণু যুদ্ধ?
রাজশাহীতে নার্স হত্যায় পুলিশ কনস্টেবলসহ আটক-৪

রাজশাহীতে নার্স হত্যায় পুলিশ কনস্টেবলসহ আটক-৪

রাজশাহীতে নার্স হত্যায় পুলিশ কনস্টেবলসহ আটক-৪
রাজশাহীতে নার্স হত্যায় পুলিশ কনস্টেবলসহ আটক-৪

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে ড্রামের ভেতর থেকে উদ্ধার করা তরুণীর লাশের পরিচয় মিলেছে। তাঁর নাম ননিকা রাণী রায় (২২)। তিনি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মিলনপুর গড়েয়া গ্রামের নিপেন চন্দ্র বর্মণ কন্যা। পেশায় একজন নার্স ছিলেন তিনি। রাজশাহী নার্সিং ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা করেছেন। এই যুবতীকে হত্যায় জড়িত নিমাই চন্দ্র সরকার (৪৩) নামের পুলিশের এক কনস্টেবলসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে এসব বেরিয়ে এসেছে। ওই নার্স অবিবাহিত ছিলেন। অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবলের সাথে তাঁর সাত-আট বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তিনি পাবনার আতাইকুলা উপজেলার চরাডাঙ্গা গ্রামের মৃত হেমান্ত সরকারের ছেলে। নিমাই রাজশাহীতে রেলওয়ে পুলিশে কর্মরত ছিলেন। গত ৬ এপ্রিল নগরীর তেরোখাদিয়া এলাকায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে একটি ভাড়া বাসায় উঠেছিলেন নিমাই ও ননিকা। তাঁরা লিভ টুগেদার করছিলেন বলে জানিয়েছেন পিবিআই কর্মকর্তারা।

গত শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) সকালে রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠ সিটিহাট এলাকা থেকে ননিকার ড্রামের ভেতর লাশ উদ্ধার করা হয়। সেদিন তাঁর পরিচয় জানা যায়নি। এ নিয়ে নগরীর শাহমখদুম থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে একটি মামলা করা হয়। থানা পুলিশ বিষয়টির তদন্ত শুরু করে। পাশাপাশি ছায়া তদন্ত করছিল পিবিআই। শেষে পিবিআই এই তরুণীর পরিচয় উদঘাটনের পাশাপাশি ঘাতকদেরও গ্রেফতার করেছে।

পুলিশ কনস্টেবল নিমাই ছাড়া গ্রেফতার অন্যরা হলেন- নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার আদারীপাড়া এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে কবির আহম্মেদ (৩০), রাজপাড়া থানার বিলশিমলা এলাকার সতীশ রায়ের ছেলে আব্দুর রহমান (২৫) এবং শ্রীরামপুর টি-বাঁধ এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে সুমন আলী (৩৪)। আব্দুর রহমান মাইক্রোবাসের চালক। তিনি আগে হিন্দু ছিলেন। তখন তাঁর নাম ছিল সঞ্জয় রায়। তাঁর মাইক্রোবাসে করেই লাশ ফেলে আসা হয়েছিল।
গতকাল সোমবার (১৯ এপ্রিল) পিবিআইয়ের রাজশাহী কার্যালয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আযাদ জানান, কনস্টেবল নিমাই বিবাহিত। তাঁর স্ত্রীর নাম বুলবুলি রাণী দাস। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত। স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ভাল নয় বলে এক সন্তানকে নিয়ে আলাদা থাকেন তিনি। আর গত ৬ এপ্রিল ননিকাকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বাসা ভাড়া করেছিলেন নিমাই। ননিকা তাঁকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। সে কারণেই তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।

হত্যার সময় নিমাইয়ের বন্ধু কবির আহম্মেদ ও সুমন আলী ননিকার হাত-পা চেঁপে ধরেছিলেন। আর নিমাই গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করেন। পরে বাজার থেকে চাল রাখা একটি ড্রাম কিনে আনেন। সেই ড্রামে লাশ ঢুকিয়ে মাইক্রোবাসে তুলে সেটি নির্জনে ফেলে আসা হয়।

পরিবার জানায়, ননিকা সদ্য নার্সিং পাস করেছেন। এরপর রাজশাহী শহরের একটি ক্লিনিকে চাকরি নিয়েছিলেন। একটি ছাত্রীনিবাসে থাকতেন নগরীর পাঠানপাড়া এলাকায়। সরকারি চাকরির জন্য পরীক্ষাও দিয়েছিলেন। মৌখিক পরীক্ষার জন্য তিনি অপেক্ষা করছিলেন। পুলিশ কনস্টেবল নিমাইয়ের সঙ্গে গিয়ে আলাদা বাসায় ওঠার বিষয়টি পরিবার জানত না। হত্যাকা-ের পর তাঁরা এটি জেনেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘ দিন ধরেই রাজশাহীতে কর্মরত ছিলেন কনস্টেবল নিমাই। সাত বছর ধরে আছেন রাজশাহী রেল পুলিশে। এর আগে তিনি রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) ছিলেন। সে সময় ডিবি কার্যালয় এলাকার এক কলেজ ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাঁর নগ্ন ভিডিও ধারণ করেছিলেন। ভিডিওটি কম্পিউটারের দোকান থেকে ছড়িয়ে পড়ে। তখন তাঁকে বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তীতে নানা কৌশলে চাকরি ফিরে পেয়ে রেল পুলিশে যোগ দেন। এবার আগের চেয়েও ভয়াবহ ঘটনা ঘটালেন এই কনস্টেবল।

সোমবার দুপুর পৌনে ৩টায় পিবিআই কর্মকর্তা আবুল কালাম আযাদ জানান, শাহমখদুম থানা পুলিশ হত্যা মামলাটি তাঁদের কাছে হস্তান্তর করেছে। এরপর এখন আসামিদের আদালতে তোলার জন্য গাড়িতে তোলা হচ্ছে। আসামিরা পিবিআইয়ের কাছে প্রাথমিকভাবে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার সমস্ত বিষয় স্বীকার করেছেন। তাঁরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীও দিতে পারেন। তিন দিনেই এ হত্যাকান্ডের সমস্ত বিষয় উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে। দ্রুতই আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে বলেও জানান তিনি।

মতিহার বার্তা / ইএবি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply