এসএম বিশাল: রাজশাহীতে প্রখর রোদে পুড়ছে রাজশাহী মহানগরীসহ বরেন্দ্রের পথ-ঘাট। বয়ে যাচ্ছে মৌসুমের তীব্র তাপদাহ। গত কয়েকদিনের তাপে তেঁতে উঠেছে মাঠ, ঘাট, প্রান্তর। বাহির বা ঘরে কোথাও স্বস্তি নেই। এমন গরমে মানুষসহ প্রাণীকুলের জীবন এখন ওষ্ঠাগত।
আগুন ঝরা আবহাওয়ায় তেঁতে উঠেছে পথঘাট। বাতাসে যেন আগুনের হল্কা। বাইরে বের হলে চোখ-মুখ যেন পুড়ে যাচ্ছে। ঘরেও স্বস্তি নেই। দিনভর সূর্যের প্রখরতায় গোমট গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে মানুষ ও পশুপাখিরা। এক পশলা বৃষ্টির জন্য চাতক পাখির মত আকাশের দিকে চেয়ে রয়েছে মানুষ। বৈশাখেও রাজশাহী অঞ্চলে এবার বৃষ্টির দেখা নেই। আকাশে দেখা নেই মেঘেরও। প্রকৃতি যেন রদ্রমূর্তি ধারণ করেছে। বৈশাখী খরতাপে পুড়ছে রাজশাহী।
একদিকে লকডাউন আরেক দিকে তাপপ্রবাহ। নগরীর প্রধান প্রধান প্রবেশ মুখে পুলিশের কঠোর নিরাপত্ত বেষ্টনী। বৃষ্টি না হওয়ায় যত দিন যাচ্ছে তাপমাত্রা ততই বাড়ছে। কৃষিতেও বেড়েছে খরচ। কৃষকের বেরো ধানে লাগছে বেশি সেচ। খরতাপে শুকিয়ে যাচ্ছে গাছে থাকা আম ও লিচুর গুটি।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত রাজশাহীতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। তবে এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস। গত কয়েক দিন থেকেই রাজশাহীজুড়ে মৃদু থেকে মাঝারি তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। ফলে রাজশাহীতে এখন চলছে তীব্র তাপদাহ।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস সুত্র জানায়, রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল গত ১৪ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত সোমবার (১৯ এপ্রিল) রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল মঙ্গলবার তা বেড়ে দাড়ায় ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আপাতত বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই বলেও জানান রাজশাহীর এই আবহাওয়া কর্মকর্তা।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্য মতে, এর আগে ২০০০ সালে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর ২০১৪ সালের ২৫ এপ্রিল রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তারপর তাপমাত্রা বাড়লেও এখন পর্যন্ত রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা আর ৪২ ডিগ্রি অতিক্রম করেনি। ১৯৪৯ সাল থেকে দেশে তাপমাত্রার রেকর্ড শুরু হয়। এর মধ্যে ১৯৭২ সালের ১৮ মে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। যা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বলেও পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয়েছে।
মতিহার বার্তা / ইএবি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.