শিরোনাম :
গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার! ইজ়রায়েলকে জবাব দিতে সর্বোচ্চ নেতার ফতোয়ার কথাও ভুলতে চায় ইরান, এ বার কি পরমাণু যুদ্ধ?
রাজশাহী নগরীতে পুকুর খননের মাটি দিয়ে পুকুর ভরাট, দেখার নেই কেউ

রাজশাহী নগরীতে পুকুর খননের মাটি দিয়ে পুকুর ভরাট, দেখার নেই কেউ

রাজশাহী নগরীতে পুকুর খননের মাটি দিয়ে পুকুর ভরাট, দেখার নেই কেউ
রাজশাহী নগরীতে পুকুর খননের মাটি দিয়ে পুকুর ভরাট, দেখার নেই কেউ

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী নগরীর চৌদ্দপায় সংলগ্ন ফায়ার সার্ভিস থেকে উত্তর দিকে চলে যাওয়া রাস্তা দিয়ে কিছুদূর যেতেই চোখে পড়বে বিশাল আয়োতনের পুকুর ভরাট কাজ চলছে। রাতের বেলা রাজশাহী বিশ্বাবিদ্যালয়ের ভেতর থেকে খননকৃত পুকুরের মাটি নিয়ে গিয়ে ব্যক্তি মালিকানাধীন বুধপাড়া এলাকার পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছে। পুকুর ভরাটের স্থানে একটি সাইনবোর্ডও চোখে পড়ে। তাতে লেখা রয়েছে- ‘বায়না সূত্রে এই জমির মালিক আত তিজারা রাজশাহী লিমিটেড।’

উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী- রাজশাহী নগরীতে সব ধরণের জলাশয় ও পুকুর ভরাট করা যাবে না। কিন্তু এই নির্দেশনা কেউই মানছেন না। এই আইন অমান্য করা যেনো অঘোষিত নিয়মে পরিণত হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে উচ্চ আদালতের এই নির্দেশনা কার্যকর রয়েছে। কিন্তু এখনো সেটি বাস্তবায়নের নজির দেখতে পাচ্ছেন না নগরবাসী। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে একের পর এক পুকুর ভরাট চলছেই। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রশাসন এবং পুলিশের কতিপয় কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করেই এসব অবৈধ কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রকল্পের আওতায় পুকুর খনন করা হচ্ছে। আর সেই পুকুরের মাটি ট্রাকে করে নিয়ে গিয়ে নগরীর বুধপাড়া এলাকায় ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু প্রভাবশালীদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস করছেন না। তবে এলাকার পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা থেকে অনেকেই ফোন করছেন গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে।

পরে সরেজমিনে গিয়ে ওই পুকুর ভরাটের ছবি তোলার সময় সাংবাদিকদের বাধা প্রদান করেন পুকুর ভরাট কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত সজিব নামের এক ব্যক্তি। এসময় তিনি জাতীয় দৈনিকের ফটো সাংবাদিকের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও দুর্ব্যবহার করেন। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে অন্যান্য সাংবাদিকরা এর প্রতিবাদ জানান। এসময় সজিব দম্ভোক্তি প্রকাশ করে বলেন, আজকে, ২২ এপ্রিল (গতকাল বৃহস্পতিবার) মতিহার থানার পাঁচজন পুলিশ এসে টাকা নিয়ে গেছেন। আমরা প্রশাসন ও পুলিশকে ম্যানেজ করেই কাজ করছি বলেও দাবি করেন সজিব।

সজিব আরো জানান, এটা আপনারা বুঝেন না। কোটি টাকা খরচ করে কাজ করছি। ছবি তুলে পত্রিকায় দিলে আমাদের ক্ষতি হবে। তাই ছবি তুলতে দেওয়া হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আত তিজারা রাজশাহী লিমিটেডের ব্যবস্থপনা পরিচালক আব্দুল হালিম ওই পুকুরটির একটি অংশ কিনে নিয়েছেন। জেবের মিয়া নামের এক ব্যক্তির ৪০ বিঘা আয়তনের ওই বিশালাকার পুকুরটি কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি মিলে কিনে নিয়েছেন। তারাই এখন রাতের আঁধারে ট্রাকে করে মাটি নিয়ে গিয়ে পুকুরটি ভরাট শুরু করেছেন। আর ভরাটের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে খননকৃত নতুন পুকুরের মাটি।

সূত্র জানায়, পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকাতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নিজস্ব জমিতে কয়েকটি পুকুর খননের উদ্যোগ নিয়েছে। প্রকল্পের অর্থায়নে এ পুকুর খনন করা হচ্ছে। কিন্তু ওই পুকুর খননকৃত মাটি দিয়েই সামান্য দূরেই নগরীর মতিহার থানা সীমানার মধ্যে ব্যক্তি মালিকাধীন বিশালাকার পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে পুকুর খনন করছে। আর সেই মাটি দিয়ে যদি নগরীতে পুকুর ভরাট হয়, তাহলে সেই প্রকল্পের কার্যকারীতা কোথায়? এটি শুধুমাত্র লোক দেখানো প্রকল্পের নামে সরকারি অর্থ তছরুপাতের কৌশল।’ পুকুর কেটে পাশেই ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুর ভরাট যারা করছে, তাদের আইনের আওতায় আনারও দাবি জানান তারা।

এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে আত তিজারার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল হালিম সাংবাদিকদের বলেন, জায়গাটি তিনি ধানি ও ভিটে বলে কিনেছেন। তবে সেখানে পানি রয়েছে। তাই তিনি সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের খননকৃত পুকুরের মাটি কিনে ভরাট করছেন।
আব্দুল হালিম দাবি করেন, আমি কোনো পুকুর ভরাট করছি না। আমি আমার কেনা জায়গা ভরাট করছি।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে মতিহার থানার ওসি মো: সিদ্দিকুর রহমান বলেন, পুকুর ভরাটের বিষয়টি আমার জানা নেই। আর পুলিশের টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। সত্যতা পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মতিহার বার্তা / জি আর

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply