শিরোনাম :
প্রেমিকার বাড়ির সামনে বিষপানে প্রেমিকের মৃত্যু; বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য ‘শাড়ি ক্যানসার’ কেন হয়? তার উপসর্গই বা কী? জানালেন চিকিৎসক ডায়াবেটিকেরাও ভাত খেতে পারেন, তবে মানতে হবে কিছু নিয়ম মল্লিকার সঙ্গে চুমু বিতর্ক, মুখ দেখাদেখি বন্ধ কুড়ি বছর, সাক্ষাৎ পেয়ে কী করলেন ইমরান? ক্যাটরিনার জন্যই সলমনের সঙ্গে সম্পর্কে দূরত্ব, ইদে স্বামীকে নিয়ে ভাইজানের বাড়িতে আলিয়া! রাজশাহী মহানগরীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ২৬ ১৬ মাসের মেয়েকে বাড়িতে একা রেখে ছুটি কাটাতে যান মা, না খেয়ে, জল না পেয়ে মৃত্যু! সাজা যাবজ্জীবন রাজশাহীতে ট্রাকে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি, আটক ২ পুঠিয়ায় পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে গ্রেফতার ৩ ঈদের সাথে যুক্ত হওয়া নববর্ষের উচ্ছ্বাসে বিনোদন স্পট পরিপূর্ণ
করোনা সচেতনতার সুফল পাচ্ছেন কাঁটাখালী পৌরসভা মানুষ

করোনা সচেতনতার সুফল পাচ্ছেন কাঁটাখালী পৌরসভা মানুষ

করোনা সচেতনতার সুফল পাচ্ছেন কাঁটাখালী পৌরসভা মানুষ
করোনা সচেতনতার সুফল পাচ্ছেন কাঁটাখালী পৌরসভা মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর কাঁটাখালী পৌরসভা বাজারে ঢুকতেই শোনা যায় মাইকিং, বলা হচ্ছে, ‘মাস্ক ছাড়া পৌরসভায় ঢোকা যাবে না।’ বাজারে দেখা যায়, প্রায় সবার মুখেই মাস্ক। স্বাস্থ্যবিধিও মেনে চলছেন তাঁরা।

করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এমন নানা কার্যক্রম হাতে নিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। গত মঙ্গলবার পৌর এলাকায় আরোপ করা হয়েছে বিভিন্ন বিধিনিষেধ। সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন পয়েন্টে রাখা হয়েছে হাত জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা। বাইরে থেকে কেউ এলাকায় এলে পরিবারের জন্য এক মাসের ত্রাণ দিয়ে তাঁকে বাড়িতে রাখা হচ্ছে।

রাজশাহী অঞ্চলে ঈদের পর থেকেই আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। রাজশাহীতে শনাক্তের হার ৪০ শতাংশের বেশি। মহানগরের লাগোয়া হওয়ায় রাজশাহী নগরের পরেই সর্বাধিক রোগী শনাক্ত হয়েছে পবা উপজেলায়। যদিও এই উপজেলারই একটি পৌরসভা কাঁটাখালী শুরু থেকেই করোনার সংক্রমণ অনেক কম। এর পেছনে রয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ ও এলাকাবাসীর সচেতনতা।

পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় গত দেড় বছরে ৩৫০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৯ জন। জনবহুল হওয়া সত্ত্বেও কাঁটাখালী পৌর এলাকায় দেড় বছরে আক্রান্ত হয়েছেন মাত্র ৩০ জন রোগী। আর এ বছর আক্রান্ত হয়েছেন মাত্র ১০ জন। এর মধ্যে পাঁচজন সুস্থ হয়েছেন। চারজন চিকিৎসাধীন। আর এ পর্যন্ত একজন মারা গেছেন।

২০০২ সালে রাজশাহীর পবা উপজেলার একটি অংশ নিয়ে কাঁটাখালী পৌরসভা গঠন করা হয়। উপজেলা তথ্য বাতায়নের তথ্যমতে, ২৫ বর্গকিলোমিটার এলাকায় প্রায় ৪৭ হাজার মানুষের বসবাস। যদিও এই হিসাব ২০১১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী বলে জানিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ।

গত বছরের মার্চে করোনাভাইরাস আসার পর থেকেই পৌরসভাজুড়ে মানুষকে করোনা বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করে পৌর কর্তৃপক্ষ। এ বছরও পৌরসভাকে করোনা থেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।

গত শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কাঁটাখালী পৌরসভার বিভিন্ন পয়েন্টে গিয়ে অন্তত ১৬টি জায়গায় পৌর কর্তৃপক্ষের মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার কার্যক্রমের বুথ দেখা গেছে। শুধু বাজারে বসানো হয়েছে ছয়টি বুথ। বাজারে ঢুকতে হচ্ছে হাত জীবাণুমুক্ত করে। বাজারের ভেতরে গিয়ে দেখা গেল ক্রেতা–বিক্রেতা সবার মুখেই মাস্ক। বাজারের সব ধরনের ব্যবসায়ীকে বলা হয়েছে মাস্ক ছাড়া কোনো জিনিস ‘বেচবও না, নিজেরাও মাস্ক পরব।’ সেখানে থাকা শ্যামপুরের বাসিন্দা ফায়সাল হোসেন বলেন, পৌরসভায় কেউ মাস্ক ছাড়া ঢুকতেই পারেন না। প্রতিটি মোড়ে মেয়রের উদ্যোগে মাস্ক আর স্যানিটাইজার দেওয়া হচ্ছে।

কাঁটাখালীর পৌরসভার মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের নিচে গলিটা সবচেয়ে জনবহুল এলাকা। ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, মোড়ের সামনে পৌরসভার একটি মাস্ক আর হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণের বুথ বসানো হয়েছে। সেখান থেকে বাজারের ভেতরে ঢোকা সবাইকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার করানো হচ্ছে। যাঁদের মুখে মাস্ক নেই, কিংবা মাস্ক ঠিকমতো পরেননি, তাঁদের জেরার মুখে ফেলা হচ্ছে।

কাঁটাখালী থানা পুলিশও স্বাস্থ্যবিধি মানাতে তৎপর রয়েছে। এই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর আলম বলেন, পৌরসভার মানুষকে মেয়র এমনভাবে উদ্বুদ্ধ করেছেন, সব মানুষই মাস্ক পরছেন, স্বাস্থ্যবিধি মানছেন। তাঁরাও কাজ করছেন।

পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ বলেন, আগে থেকেই কাঁটাখালী পৌরসভা কর্তৃপক্ষ তৎপর থাকায় সেখানে করোনার সংক্রমণ অনেকটা কম। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ, স্বাস্থ্য বিভাগ এবং সেখানকার মানুষের সমন্বয়ে সুন্দর একটি পরিস্থিতি তৈরি করা গেছে।

তিনি আরও বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষের তৎপরতায় ওই এলাকার আড়াই থেকে তিন হাজার মানুষ করোনার টিকা পেয়েছেন। এটা অন্য এলাকার থেকে অনেক বেশি।

পৌর মেয়র আব্বাস আলী বলেন, গত বছর করোনার শনাক্তের পর থেকে তিনি সবাইকে নিয়ে সমন্বয় করে কাজ করে যাচ্ছেন। সবাইকে নিয়েই তিনি সিদ্ধান্ত নেন। সবার পাশাপাশি এলাকার শিক্ষিত যুবক শ্রেণি এ কাজে তাঁকে সাহায্য করে আসছেন। খাদ্যসহায়তার জন্য হট লাইন খুলেছেন। করোনা প্রতিরোধে তাঁরা এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত রাখবেন।

মতিহার বার্তা / ইএবি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply