স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে (২৪) নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে তারই স্বামী আমিনুল ইসলাম (৩০) নামের এক রেল কর্মচারী বিরুদ্ধে।
রোববার (০৬ জুন) বেলা ১১টার দিকে নগরীর চন্দ্রিমা থানাধিন শিরোইল কলোনী এলাকায় (রেল কোয়াটারে) এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এ সময় আমিনুল তার স্ত্রীকে লাঠি দ্বারা নির্যাতন করে রক্তাক্ত জখম করে।
পরে খবর পেয়ে গৃহবধূর পিতা জলিল পরামানিক, মা রতে বেগম, বোন বেবি খাতুন গৃহবধূকে তার স্বামীর বাড়ি থেকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ রামেকের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস (ওসিসি) ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গৃহবধূর পিতা জলিল পরামানিক জানান, গত ৭বছর বছর পূর্বে আমার মেয়ের সাথে পারিবারিক ভাবে রেল কর্মচারী আমিনুলের বিবাহ্ সম্পন্ন হয়। তাদের সংসারে ৫ বছরের একটি পূত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের সময় রেলে চাকরির জন্য যৌতুক হিসেবে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা নগদ গ্রহণ করে আমিনুল ওতার পিতা মৃত সাহেব আলী। বিয়ের ২ বছর পরে রেলে (আরএনবি) পদে চাকরিতে যোগদান করেন আমিনুল। কিন্তু যৌতুক লোভী আমিনুল নতুন কৌশলে আমার মেয়েকে বলে তোমার বাবার কাছে থেকে তোমার ভাগের জমি বিক্রি করে টাকা দাও। কারন হিসেবে সে জানায় নগরীর শিরোইল এলাকায় জমি ক্রয় করে বাড়ি করবে।
তার কথায় আমার মেয়ে জানায় বাবা জিবিত থাকা অবস্থায় জমির ভাগ চাইতে পারবো না। এমন কথায় সে ক্ষুদ্ধ হয়ে তার ডিউটিতে ব্যবহার করা লাঠি দ্বারা মাথাসহ পুরো শরীরে আঘাত করে। এতে গৃহবধূর বাম চোখের উপরে কেটে রক্তাক্ত জখম হয়। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন অংগে ছিলা ফুলা জখম হয়। আমরা মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমিনুলের বাড়িতে গেলে সে অকাথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং মারার জন্য তেড়ে আসে। ওই সময় স্থানীয়দের বাধার মুখে আমরা তার হাত থেকে রক্ষা পাই।
তিনি আরও বলেন, সকাল ১১টায় আমার মেয়েকে পিটিয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ঘরে ফেলে রাখে আমিনুল। খবর পেয়ে আমরা ৫টার দিকে তাকে উদ্ধার করে রামেকে ভর্তি করি। গত আড়াই মাস পূর্বেও যৌতুকের দাবিতে একই কায়দায় আমিনুল আমার মেয়েকে পিটিয়ে আহত করেছিলো। তবে এবার হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে থানায় মামলা করবো বলেও জানান গৃহবধূর পিতা জলিল পরামানিক।
এদিকে, গৃহবধুকে নির্যাতনের ঘটনায় ঘটনাস্থলে স্থানীয়রা জড়ো হয়। এ সময় ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন ফটো সাংবাদিক মিজানুর রহমান টনি। তিনি ঘটসাস্থলে উপস্থিত হয়ে কি হয়েছে জানতে চান স্থানীয়দের কাছে। এ সময় (আরএনবি) রাজশাহী রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনির সদস্য আমিনুর পোশাক পরিহিত অবস্থায় টনির পরিচয় জানতে চান। টনি সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার সাথে সাথেই টনিকে অশ্লিল ভাষায় গালিগালাজ করা সহ মারার চেষ্টা করে আরএনবি এই সদস্য। তবে সেখানে স্থানীয়দের বাঁধার মুখে রক্ষা পায় সাংবাদিক টনি।
জানতে চাইলে আরএনবি‘র সদস্য আমিনুল জানায়, সাংবাদিক টনিকে আমি কোন গালি দেইনি। এটা অমার নামে অপপ্রচার করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
মতিহার বার্তা / ইএবি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.