নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্ধারিত বেডের চাইতে করোনা রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে। এমন অবস্থায় অন্যান্য রাগীদের চিকিৎসা বন্ধ করে সেসব ওয়ার্ডে করোনা ও উপসর্গে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু ফাঁকা না থাকায় আইসিইউ বেডের জন্য হাহাকার। আক্রান্তের পাশাপাশি প্রতিদিনই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। পাশাপাশি রাজশাহীতে সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বেড়ে গেছে।
এদিকে হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীদের চাইতে তিনগুণ বেশি তাদের স্বজন হাসপাতালে অবস্থান করছে। এরা নিয়মিত হাসপাতালসহ আশপাশের এলাকায় ঘোরাফেরা করছে তাদের কাছ থেকেও সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। ভ্রাম্যমাণ র্যাপিড এ্যন্টিজেন টেস্টে দেখা গেছে নগরীর ১৩টি মোড়ের মধ্যে লক্ষ্মীপুর মোড়ের সংক্রমণ বা আক্রান্তের সংখ্যা বেশি।
বৃহস্পতিবার রামেক হাসপাতালের দেয়া তথ্য মতে, হাসপাতালের ৫৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য নয়টি আইসোলেশন ওয়ার্ডে (করোনা ওয়াার্ড) ২৩৫টি বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ভর্তি রোগীদের প্রত্যেকেরই অক্সিজেন লেভেল কম থাকায় তাদের জন্য অক্সিজেন সঙ্কুলান করতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম যেসব ওয়ার্ডে চালু আছে সেসব ওয়ার্ড করোনা রোগীদের জন্য ছেড়ে দেয়া হয়েছে। করোনা রোগীদের চিকিৎসায় প্রতিদিন অন্তত ৮ হাজার লিটার অক্সিজেন প্রয়োজন পড়ছে।
হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের একটা বড় অংশই চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকার। গত তিন দিন থেকে হাসপাতালে কেবল মাত্র গুরুতর রোগীদেরকেই ভর্তি করা হচ্ছে।
এদিকে রোগী ও স্বজনদের দাবি করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসক প্রবেশ করেন না। তারা রোগীদের স্বজনদের দিয়ে অক্সিজেন পালস দেখিয়ে নিচ্ছেন এবং এর ওপর ভিত্তি করে প্রেসক্রিপশন করছেন। এমনকি রোগীদের অক্সিজেন লাইন ও মাস্ক পর্যন্ত স্বজনরাই ঠিক করে দিচ্ছেন। এজন্য নার্স বা চিকিৎসককে তারা ডেকেও রোগীর পাশে পাচ্ছেন না।
আর এসব কারণে হাসপাতালে রোগীদের সাথে দুই থেকে তিন জন করে স্বজন উপস্থিত থাকছেন। এসব স্বজন করোনা রোগীদের সংস্পর্শে আসছে, আবার হাসপাতালের বাইরে বের হচ্ছে, অন্যান্যদের সাথে মিশছে। পুরো হাসপাতাল এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি কোন বালাই নেই।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. খলিকুর রহমান জানান, করোনা রোগী এভাবে বাড়তে থাকলে হাসপাতালের এ্যকোমোডেশন (জায়গা সংকুলান) ফল করবে। হাসপাতালেই সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলে চিকিৎসা দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে। এই হাসপাতালে অন্যান্য রোগীরাও চিকিৎসা নিচ্ছে এটা ভুলে গেলে চলবে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে রোগীদের চিকিৎসা এবং হাসপাতাল এলাকায় সংক্রমণ রোধ এই দুইটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. নওশাদ আলী জানান, করোনা ইউনিটে চিকিৎসা দেয়ার জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসক নাই। এজন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জনবল চেয়ে স্বাস্থ্য বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
মতিহার বার্তা / ইএবি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.