অনলাইন ডেস্ক: নওগাঁর মহাদেবপুরে এক যুবকের অত্যাচার সইতে না পেরে রাজিয়া নামে এক কলেজ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী রাজিয়ার বাবা মহাদেবপুর থানায় অভিযোগ না নেওয়ায় নওগাঁ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেছেন।
ঘটনার প্রায় দুইমাস অতিবাহিত হলেও আসামি ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েগেছে। এতে এলাকাবাসী এবং নিহতের পরিবার পুলিশকে দায়ী করছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রাইগাঁ ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের জুলফিকার আলী ভুট্টর মেয়ে রাজিয়া সুলতানা রাইগাঁ ডিগ্রি কলেজে এইচএসসির একজন শিক্ষার্থী ছিলেন। কলেজে যাওয়া-আসার সময় একই গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান প্রায়ই পথরোধ করে উত্যক্ত করাসহ নানা রকমের কুপ্রস্তাব দিয়ে আসতো। এই অত্যাচার থেকে মেয়ে রাজিয়াকে রক্ষা করার জন্য রাজিয়ার বাবা অন্যত্র বিয়ে দেন।
রাজিয়াকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার কারণে মেহেদীর মোবাইলে দিয়ে তোলা রাজিয়ার আগের ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে। এ বিষয়গুলো রাজিয়া তার বাবাকে জানালে তিনি রাজিয়াকে বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর মেহেদী গত বছরের ২২ এপ্রিল তারিখে রাজিয়াকে বাড়ির সামনে একা পেয়ে ঝাপটে ধরে গালে চুমু খায়। এমতাবস্থায় রাজিয়া চিৎকার করলে মেহেদী বিভিন্ন রকমের হুমকি-ধমকি দিয়ে পালিয়ে যায়।
এ অপমান সইতে না পেরে ওইদিন রাতে ফাঁস দিয়ে রাজিয়া আত্মহত্যা করে। পরে পুলিশ রাজিয়ার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এর পরবর্তীতে রাজিয়ার বাবা থানায় অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ রহস্যজনক কারণে অভিযোগ গ্রহণ করেননি।
মেহেদীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশায় ভুট্টু চলতি বছরের ২৯ মার্চ তারিখে নওগাঁ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে রাজিয়ার বাবা জুলফিকার আলী ভুট্টু বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি; তাকে আত্মহত্যার জন্য বাধ্য করা হয়েছে। আর এ ঘটনার মূল হোতা মেহেদী তার মা জেসমিন ও তার বাবা আনোয়ার এর সাথে জড়িত। তিনি এ ঘটনায় সঠিক বিচার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।
মেহেদী হাসানের মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়ায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আর এলাকাবাসী বলছে, ওই ঘটনার পর থেকে মেহেদী ও তার পরিবার পলাতক রয়েছে। বাড়িতে তালা ঝুলছে।
মতিহার বার্তা / ইএবি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.