অনলাইন ডেস্ক: দুর্নীতি মামলায় বরখাস্ত সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সাবেক উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) পার্থ গোপাল বণিকের জামিনের বিরুদ্ধে আপিল করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার (২০ জুন) দুপুরে দুদক সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
দুদক সচিব বলেন, ‘নিম্ন আদালতে পার্থ গোপাল বণিকের জামিন হওয়ার বিষয়টি আমরা জেনেছি। তার বিরুদ্ধে বিচারের শুনানি চলমান রয়েছে। তার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষের দিকে আছে। এই অবস্থায় তার জামিন হয়েছে। আমরা উচ্চ আদালতে জামিনের বিরুদ্ধে আপিল করব।’
গত বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) প্রায় ২৩ মাস কারাভোগের পর ঘুষ গ্রহণ ও অর্থপাচার আইনের মামলায় জামিন পান পার্থ গোপাল বণিক। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেনের ভার্চুয়াল আদালত আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
রোববার এ বিষয়ে দুদক কী পদক্ষেপ নেবে তা জানতে চেয়েছিল হাইকোর্ট। এরই ধারাবাহিকতায় দুদক সচিব আপিলের কথা জানালেন।
এর আগে ২০১৯ সালের ২৮ জুলাই কারাগারের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পার্থ গোপাল বণিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তাকে নিয়ে অভিযানে যায় দুদক। এ সময় রাজধানীর ভূতেরগলিতে পার্থ গোপালের ফ্ল্যাট থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করে দুদক। এরপরেই তাকে আটক করা হয়। পরদিন ২৯ জুলাই তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪ (২) ধারায় দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলা দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন।
দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, বরখাস্ত হওয়া কারা উপ-মহাপরিদর্শক পার্থ গোপাল বণিক সরকারি চাকরিতে দায়িত্ব পালনের সময় ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে ৮০ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জন করেছেন।
এতে আরও বলা হয়, এসব টাকা গোপন করে তার নামীয় কোনো ব্যাংক হিসাবে জমা না রেখে বিদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে বাসস্থানে লুকিয়ে রেখে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারা, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
জানা যায়, সিলেটে দায়িত্ব পালনের আগে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে দায়িত্ব পালন করেন পার্থ গোপাল বণিক। চট্টগ্রাম কারাগারের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে তাকে এবং চট্টগ্রামের সাবেক সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। তারপরই অভিযানে নেমে পার্থের বাসা থেকে ওই টাকা জব্দ করে সংস্থাটি।
পরে ২০১৯ সালের ৩০ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে পার্থ গোপাল বণিককে গ্রেফতারের দিন থেকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে।
টাকা জব্দের পর অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া দুদক পরিচালক মুহাম্মদ ইউছুফ বলেছিলেন, ‘তার ঘোষিত আয়কর ফাইলে এ টাকার ঘোষণা নেই। আমাদের মনে হয়েছে, এই টাকা অবৈধ আয় থেকে অর্জিত।’
তবে সাবেক ডিআইজি (প্রিজন্স) পার্থ দাবি করেছেন, ওই ৮০ লাখ টাকার মধ্যে ৩০ লাখ টাকা শাশুড়ি তাকে দিয়েছেন। আর বাকি ৫০ লাখ টাকা তার সারাজীবনের জমানো।
মতিহার বার্তা / ইএবি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.