শিরোনাম :
তরমুজ শুধু খেলে হবে না, গরমে মাখতেও পারেন লজ্জা ঢাকতে শেষমেশ গদি জড়িয়ে ছুটলেন উরফি! ভিডিয়ো ফাঁস হতেই চার দিকে শুরু শোরগোল কাফতান পরা মানেই কি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবরে সিলমোহর? প্রশ্ন তুললেন পরিণীতি চোপড়া অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করে শ্রেণি বৈষম্য করেছে রাবি প্রশাসন! তানোর ইউএনও’র বিরুদ্ধে শিক্ষকের মামলা, তোলপাড় তরুণী সন্ধ্যা রানী হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন; সৎ ভাই ও তার বন্ধু গ্রেফতার রাজশাহী বিভাগীয় তায়কোয়ানদো এসোসিয়েশনের ইফতার ও দোয়া মাহফিল- ২০২৪ রাজশাহী মহানগরীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ২১ মহানগরীর ছোটবনগ্রামে লোন দেওয়ার নামে প্রতারণা, প্রতারক তাওহীদ খান আটক নৌবাহিনীর প্রধানের সাথে রাসিক মেয়রের সাক্ষাৎ ও মতবিনিময়
রিকশাচালক-শ্রমিক-কৃষক সবাইকে ‘স্যার’ ডাকেন যে এএসপি

রিকশাচালক-শ্রমিক-কৃষক সবাইকে ‘স্যার’ ডাকেন যে এএসপি

রিকশাচালক-শ্রমিক-কৃষক সবাইকে ‘স্যার’ ডাকেন যে এএসপি
রিকশাচালক-শ্রমিক-কৃষক সবাইকে ‘স্যার’ ডাকেন যে এএসপি

অনলাইন ডেস্ক: পেশায় একজন রিকশাচালক মোতালেব মিয়া। বয়স ৬০-এর বেশি। কয়েকদিন আগে পারিবারিক একটা সমস্যায় আইনগত সেবা নেয়ার জন্য এসেছিলেন রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আনোয়ার হোসেন শামীমের অফিসে।

রাস্তাঘাটের তিক্ত অভিজ্ঞতায় এমনিতেই ভীষণ পুলিশ ভীতি তার। তবে লোকমুখে এলাকায় ভালো এএসপি আসছেন শুনে তার কাছে আসেন সমস্যার সমাধানে।

ওয়েটিং রুমে কিছুক্ষণ অপেক্ষা শেষে এএসপির কক্ষে ঢুকতেই চমকে উঠেন তিনি। এএসপি তাকে ‘স্যার’ সম্বোধন করে বসতে বলেন। কিন্তু নিজ কানে শুনেও বিশ্বাস করাতে পারেন না মোতালেব। তাকে স্যার সম্বোধন করছেন একজন এএসপি! এটা সত্যিই কী একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ অফিসারের মুখের ভাষা!

সেদিন বৃদ্ধ এই রিকশাচালকের সঙ্গে এএসপির ব্যবহার দেখে মুগ্ধ হন পাশে থাকা আরেক ব্যক্তি। তিনি বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেন। এরপরই এএসপির সাধারণ মানুষকে ‘স্যার’ ডাকার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু বৃদ্ধ মোতালেবই নন। এই এএসপির সুন্দর ব্যবহার, আর সবাইকে সম্মান দিয়ে কথা বলার প্রশংসা উত্তর চট্টগ্রামবাসীর সবার মুখে মুখে। রিকশাওয়ালা, ঠেলাওয়ালা, মুচি, মেথর থেকে শুরু করে কৃষক, শ্রমিকসহ সকল শ্রমজীবী মানুষকেই তিনি ‘স্যার’ বলে সম্বোধন করেন।

বিপরীতে কেউ তাকে স্যার ডাকল তিনি নিষেধ করে দিয়ে বলেন, ‘আপনাদের ট্যাক্সের পয়সা দিয়েই আমার বেতন। আপনাদের শ্রম-ঘামের ওপরই আমাদের জীবন-জীবিকা। যেহেতু আমি একজন জনগণের কর্মচারী, তাই প্রকৃতপক্ষে আপনারাই আমার স্যার। দয়া করে আমাকে স্যার না ডেকে ভাই বলে ডাকলেই বেশি খুশি হব।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আলোচিত এই পুলিশ কর্মকর্তার অফিস থেকে কেউ চা না খেয়ে যেতে পারেন না। বয়স্ক কোনো সেবাপ্রার্থী আসলে এএসপি নিজেই উঠে গিয়ে সেই বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে সসম্মানে অফিস কক্ষে নিয়ে আসেন।

এদিকে গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাকে ‘স্যার’ সম্বোধন করা নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা চলছে। তখন এই পুলিশ কর্মকর্তার ব্যবহার ব্যতিক্রমই বলা চলে।

অবশ্য ‘স্যার’ সম্বোধন বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম।

তবে তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনায় এবং আইজিপি মহোদয়ের দক্ষ নেতৃত্বে পুলিশ জনগণের প্রকৃত আস্থার ঠিকানায় পরিণত হচ্ছে। আমিও আমার জায়গা থেকে সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে যথাসাধ্য ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছি।’

জানা গেছে, এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম খাগড়াছড়ি জেলার উত্তর বড়বিল গ্রামের আব্দুল মান্নান এবং বিলকিস বেগম দম্পতির তৃতীয় সন্তান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে ৩৪তম বিসিএস পরীক্ষায় মেধাতালিকায় ১১তম স্থান অধিকার করে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে যোগদান করেন।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশে যোগদানের পূর্বে তিনি র্যাব-৯-এর অধীনে শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের কমান্ডার এবং তারপর ঢাকা র্যাব সদরদফতরের মিডিয়া উইং-এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

শ্রীমঙ্গল র্যাব ক্যাম্পের কমান্ডার হিসেবে তার মানবিক কর্মকাণ্ড এবং র্যাব-৯-এর করোনা রেসপন্স টিমের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে তার করোনা আক্রান্ত মানুষের সরাসরি চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা সিলেটসহ পুরো দেশবাসীর প্রশংসা কুড়ায়।

মতিহার বার্তা / ইএবি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply