স্টাফ রিপোর্টার: করোনা মহামারীতে দীর্ঘদিন ধরে চলা লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন মানুষ। সঞ্চয়ের টাকা দিয়ে তারা নিজ নিজ সংসার চালিয়েছেন। এর মধ্যে দিনমুজুর আর খেটে খাওয়া মানুষদের ছিলো করুন অবস্থা।
তারা সরকারী প্রনোদনা আর রাসিক মেয়রের খাদ্য সহায়তা নিয়ে ছেলে মেয়েদের আহার যুগিয়েছেন। আর এই করোনা মহামারীতে কিস্তি না নেয়ার জন্য এনজিও গুলির উপর সরকারী নির্দেশ ছিলো।
নির্দেশনা অনুযায়ী এনজিও মাঠকর্মীরা কিস্তি আদায় থেকে বিরত ছিলেন। এরই মধ্যে লকডাউন শেষ হয়ছে। এনজিও’র মাঠকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গ্রাহকদের কাছে কিস্তি আদায়ের জন্য যাচ্ছেন। স্বাভাবিক নিয়মেই সাপ্তাহিক ও মাসিক কিস্তির টাকা পরিশোধ করছেন গ্রাহকরা।
তবে সমস্যায় পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ ও দিনমজুররা। তারা কিস্তি সম্পূর্ণ টাকা দিতে পারছেননা। এতে মাঠকর্মীরা গ্রাহকদের সাথে হৈচৈ করা সহ দূরব্যবহার করছেন।
এ নিয়ে গতকাল বুধবার নগরীর চন্দ্রিমা থানা ও শাহমখদুম থানার গাংপাড়া এলাকার মোসাঃ ফিরোজা আক্তার ও মোসাঃ আফরোজা বেগম নামে দুই নারী রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কাছে পৃথক পৃথক দু’টি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, পারিবারিক প্রয়োজনে প্রয়াস, ব্র্যাক ও ডাম ফাউন্ডেশন থেকে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়েছিলাম। নিয়মিত কিস্তিও দেই। কিন্তু গত করোনা মহামারীতে আমার স্বামী একবারেই বেকার হয়ে পড়েছিলেন। চক্ষু লজ্জার মাথা খেয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে চাউল এনে ছেলে মেয়ের মুখে অন্ন দিয়েছি।
এখন লকডাউন শেষ হয়েছে। আমার স্বামীও কর্মস্থানে গেছে। আবারও স্বাভাবিক নিয়মে এনজিও মাঠকর্মীদের নিকট কিস্তি প্রদান করবো। কিন্তু তারা কোনভাবেই অল্প টাকা নিতে চাচ্ছেন না। বলছে ঘরের টিন খুলে নিয়ে যাবে। সকাল, দুপুর, বিকেল, রাত ইচ্ছা মতো বাড়িতে আসছে চিৎকার হৈচৈ করছে।
কোন ভাবেই তারা সমস্যার কথা শুনবে না। দিতেই হবে কিস্তির টাকা। এছাড়াও এই এলাকায় অধিকাংশই অসহায় নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাস। ঘরে ঘরে কিস্তি। তাদের সাথেও একইরকম আচারণ করছে টিএমএসএস ইসলামী ফাউন্ডেশান, পল্লী মঙ্গল কর্মসূচী, জিবিকা, মানবসেবা অভিযান, প্রয়াস, ঢাকা ড্রাম, গাক, ইউডিপিএস ফাউন্ডেশান, পদক্ষেপ, আরআরএফ, ব্যুরো বাংলাদেশ নামে এনজিও কর্মীরা।
ঘুম কেড়ে নিয়েছে ওই এলাকার দিশা, ইতি, পারভিন, বেদানা, ফিরোজা, সেলিনা, মিরাসহ একাধিক নারীর। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী তারা আগে যা কিস্তি প্রদান করতেন, এখন থেকে তার অর্ধেক প্রদান করবেন। স্বচ্ছলতা ফিরে আসলে আগের মতোই স্বাভাবিক নিযমে তারা কিস্তির টাকা পরিশোধ করবেন।
তাদের দয়া দরখাস্ত হাতে নিয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল বলেন, কিস্তির টাকা আমি মওকুফ করতে পারিনা। তবে এনজিও‘র প্রধানদের চিঠি করে ডাকবেন এবং আগামী তিন মাস কিস্তির অর্ধেক টাকা নেয়ার জন্য বলবেন। পরে জেলা প্রশাসকের আশ্বাস পেয়ে খুশি হয়ে ফিরে যান তারা।
মতিহার বার্তা / ইএবি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.