শিরোনাম :
প্রেমিকার বাড়ির সামনে বিষপানে প্রেমিকের মৃত্যু; বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য ‘শাড়ি ক্যানসার’ কেন হয়? তার উপসর্গই বা কী? জানালেন চিকিৎসক ডায়াবেটিকেরাও ভাত খেতে পারেন, তবে মানতে হবে কিছু নিয়ম মল্লিকার সঙ্গে চুমু বিতর্ক, মুখ দেখাদেখি বন্ধ কুড়ি বছর, সাক্ষাৎ পেয়ে কী করলেন ইমরান? ক্যাটরিনার জন্যই সলমনের সঙ্গে সম্পর্কে দূরত্ব, ইদে স্বামীকে নিয়ে ভাইজানের বাড়িতে আলিয়া! রাজশাহী মহানগরীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ২৬ ১৬ মাসের মেয়েকে বাড়িতে একা রেখে ছুটি কাটাতে যান মা, না খেয়ে, জল না পেয়ে মৃত্যু! সাজা যাবজ্জীবন রাজশাহীতে ট্রাকে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি, আটক ২ পুঠিয়ায় পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে গ্রেফতার ৩ ঈদের সাথে যুক্ত হওয়া নববর্ষের উচ্ছ্বাসে বিনোদন স্পট পরিপূর্ণ
বাঘায় পানিবন্দি মানুষের ভোগান্তি চরমে, ত্রাণসামগ্রীর অপ্রতুলতায় ক্ষোভ

বাঘায় পানিবন্দি মানুষের ভোগান্তি চরমে, ত্রাণসামগ্রীর অপ্রতুলতায় ক্ষোভ

বাঘায় পানিবন্দি মানুষের ভোগান্তি চরমে, ত্রাণসামগ্রীর অপ্রতুলতায় ক্ষোভ
বাঘায় পানিবন্দি মানুষের ভোগান্তি চরমে, ত্রাণসামগ্রীর অপ্রতুলতায় ক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চরাঞ্চলের বহু পরিবার বন্যায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এতে করে পানিবন্দি মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে সরকারিভাবে জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও স্থানীয় এমপি শাহরিয়ার আলমের নিজস্ব অর্থায়নে আর্থিক সহায়তা ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। তবে ত্রাণসামগ্রীর অপ্রতুলতায় এবং এখনো ত্রাণ না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

জানা গেছে, পদ্মায় হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চল, গড়গড়ী ও পাকুড়িয়া ইউনিয়নের আংশিক পদ্মার চর এলাকায় তিন সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। বন্যাকবলিত চর এলাকায় বসবাসরত পানিবন্দী মানুষ এখনও অসহায় ও মানবেতর জীবন যাপন করছেন। পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে গত কয়েক দিনে গড়গড়ী ইউনিয়নের ব্যাংগাড়ী, চাঁদপুর, ব্রাক্ষণডাঙ্গা, কড়ালী নওশারা, সুলতানপুর, পাকুড়িয়া ইউনিয়নের কিছু অংশ ও চকরাজাপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা পানিতে ডুবে গেছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন চরাঞ্চলের তিন সহস্রাধিক পরিবার। এছাড়া এক হাজার একর জমির সবজিসহ বিভিন্ন ফসল পানিতে ডুবে গেছে। নদী ভাংগনে এরইমধ্যে প্রায় ৫০টি পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। এসব এলাকায় গরু-ছাগলের খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, গত কয়েকদিন ধরে পদ্মায় হঠাৎ পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের অনেক নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার। তবে চকরাজাপুর, গড়গড়ি ও পাকুড়িয়া ইউনিয়নের ফসলি জমি ও বিভিন্ন বাগানসহ পদ্মার চরাঞ্চলে কত হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে তা নিরুপণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান।

স্থানীয়রা জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে সরকারিভাবে জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও স্থানীয় এমপি শাহরিয়ার আলমের নিজস্ব অর্থায়নে আর্থিক সহায়তা ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। তবে ত্রাণসামগ্রীর অপ্রতুলতায় এবং এখনো ত্রাণ না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগীদের কয়েকজন জানান, চকরাজাপুর ইউনিয়নে অর্থিক সহায়তা ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ শুরু হলেও গড়গড়ী ইউনিয়নে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা এখনো ত্রাণসামগ্রী পাননি। এছাড়া পাকুড়িয়া ইউনিয়নের অল্প কিছু লোক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে।

বাঘা উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল ইসলাম জানান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও স্থানীয় এমপি শাহরিয়ার আলমের নিজস্ব অর্থায়নে দলের পক্ষ থেকে দেড় হাজার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। তবে গড়গড়ী ইউনিয়নে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা এখনো প্রতিমন্ত্রীর বরাদ্দ দেয়া ত্রাণসামগ্রী না পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ত্রাণসামগ্রী বিতরণ শেষ হওয়ার পর বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। পরে ত্রাণ এলে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।

গড়গড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম জানান, তার ইউনিয়নে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে এখনো কেউ ত্রাণসামগ্রী পাননি। হয়তো দু’একদিনের পেয়ে যাবেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে। গড়গড়ী ইউনিয়নে সাড়ে তিন শতাধিক মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ও পানিবন্দি বলে জানান এই ইউপি চেয়ারম্যান।

তিনি আরো বলেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি’র নিজস্ব অর্থায়নে বন্যার্তদের মাঝে দলীয় নেতা-কর্মীদের মাধ্যমে যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে সেগুলো থেকেও আমরা এখন পর্যন্ত বঞ্চিত রয়েছি।

জানতে চাইলে চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে। তার ইউনিয়নে তিন হাজার পরিবার পানিবন্দি ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তবে ত্রাণ সামগ্রীর অপ্রতুলতার বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে মোবাইলে পাকুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলামের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। ফলে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাপিয়া সুলতানা বলেন, গত শুক্রবার থেকে চকরাজাপুর ইউনিয়নের চর এলাকার পানিবন্দি পরিবারের মাঝে সরকারিভাবে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে গড়গড়ি ইউনিয়নসহ ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্যদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হবে। এরইমধ্যে জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় ১০ টন চাল ও নগদ ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। চকরাজাপুর ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডে ৫শ’ পরিবারের মাঝে ৫শ’ ব্যাগ চালসহ বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এই ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলমান থাকবে।

মতিহার বার্তা / ইএবি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply