অনলাইন ডেস্ক: রাজশাহীতে ওয়াসার পানিতে পেটের পীড়ার অন্যতম উপাদান কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ওয়াসা নিজ উদ্যোগে সম্প্রতি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে এই পরীক্ষা করিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওয়াসার পানিতে এই ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি শূন্য থাকার কথা। সেখানে রাজশাহী মহানগরের ওয়াসার পানিতে ‘কলোনি ফর্মিং ইউনিট’ ১ হাজার পর্যন্ত পাওয়া গেছে।
ওয়াসা রাজশাহী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ওয়াসা ২০১১ সাল থেকে রাজশাহী মহানগরে পানি সরবরাহের কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে শহরে দৈনিক পানির চাহিদা ১২৫ মিলিয়ন লিটার। এর বিপরীতে ওয়াসা দৈনিক ১০৪ মিলিয়ন লিটার পানি সরবরাহ করে। রাজশাহী নগরের খাবারের হোটেলগুলোতে ওয়াসার পানি সরবরাহ করা হয়। একটু উন্নতমানের হোটেলগুলোতে পরিশোধিত পানির ব্যবস্থা রয়েছে। প্রথম আলো
সম্প্রতি ওয়াসা কর্তৃপক্ষ নিজ উদ্যোগে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে এই পানি পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে। জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের রসায়নবিদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রাজশাহী শহরজুড়েই নিমার্ণকাজ চলছে। রাস্তা খুঁড়তে গিয়ে পাইপ ফেটে যায়। এগুলো হয়তো পলিথিন দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়। কোনোভাবে এই পলিথিন ছিঁড়ে গেলেই সেখান দিয়ে সুয়ারেজ লাইনের পানি ওয়াসার পাইপলাইনে ঢুকে পড়ে। এই পানিতে গবাদিপশু এমনকি মানুষের বর্জ্য মিশে থাকতে পারে। এই বর্জ্য থেকেই কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয়। পরীক্ষায় ওয়াসার পানিতে কলোনি ফর্মিং ইউনিট ৫ থেকে ১ হাজার পর্যন্ত পাওয়া গেছে, যা খাওয়ার পানিতে থাকার কথাই নয়।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বিজ্ঞানী এম মনজুর হোসেন বলেন, কলিফর্ম ভয়ংকর ব্যাকটেরিয়া। এই ব্যাকটেরিয়া মিশ্রিত পানির কারণেই মানুষের খাদ্যে বিষক্রিয়া হয়ে থাকে। খাওয়ার পানিতে এই ব্যাকটেরিয়ার কোনো সহনীয় মাত্রা নেই। পেটের পীড়ার জন্য অন্যতম উপাদান হচ্ছে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া।
জানতে চাইলে ওয়াসা রাজশাহী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহাবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এই প্রথম নয়, এর আগেও তাঁরা ওয়াসার পানি পরীক্ষা করেছেন। তাঁরা প্রতিকারের ব্যবস্থা নিয়েছেন। তাঁদের নিজস্ব পানি পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। তারপরেও তাঁরা অধিকতর নিশ্চয়তার জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে পানি পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছেন।
এ বিষয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নূর ইসলাম বলেন, তাঁরা বারবার ওয়াসাকে বলেছেন যে পানির পাইপ তিন ফুট নিচ দিয়ে বসাতে। এর ওপরে থাকলে রাস্তা রোলার করার সময় পাইপ ফেটে যায়। এ ব্যাপারে তাঁরা চিঠিও দিয়েছেন। তারপরেও তাঁদের ঠিকাদারেরা কোনো জায়গায় পাইপ ফাটার সঙ্গে সঙ্গে মেরামতের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে দিয়ে সহযোগিতা করে থাকেন।
মতিহার বার্তা / ইএবি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.