শিরোনাম :
প্রেমিকার বাড়ির সামনে বিষপানে প্রেমিকের মৃত্যু; বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য ‘শাড়ি ক্যানসার’ কেন হয়? তার উপসর্গই বা কী? জানালেন চিকিৎসক ডায়াবেটিকেরাও ভাত খেতে পারেন, তবে মানতে হবে কিছু নিয়ম মল্লিকার সঙ্গে চুমু বিতর্ক, মুখ দেখাদেখি বন্ধ কুড়ি বছর, সাক্ষাৎ পেয়ে কী করলেন ইমরান? ক্যাটরিনার জন্যই সলমনের সঙ্গে সম্পর্কে দূরত্ব, ইদে স্বামীকে নিয়ে ভাইজানের বাড়িতে আলিয়া! রাজশাহী মহানগরীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ২৬ ১৬ মাসের মেয়েকে বাড়িতে একা রেখে ছুটি কাটাতে যান মা, না খেয়ে, জল না পেয়ে মৃত্যু! সাজা যাবজ্জীবন রাজশাহীতে ট্রাকে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি, আটক ২ পুঠিয়ায় পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে গ্রেফতার ৩ ঈদের সাথে যুক্ত হওয়া নববর্ষের উচ্ছ্বাসে বিনোদন স্পট পরিপূর্ণ
চলাচলের রাস্তায় প্রাচীর! পরিত্রানে দ্বারে দ্বারে মুক্তিযোদ্বার কন্যা

চলাচলের রাস্তায় প্রাচীর! পরিত্রানে দ্বারে দ্বারে মুক্তিযোদ্বার কন্যা

চলাচলের রাস্তায় প্রাচীর! পরিত্রানে দ্বারে দ্বারে মুক্তিযোদ্বার কন্যা
চলাচলের রাস্তায় প্রাচীর! পরিত্রানে দ্বারে দ্বারে মুক্তিযোদ্বার কন্যা

বাঘা প্রতিনিধি: রাজশাীর বাঘায় বাড়ির প্রবেশদ্বারে ইটের প্রাাচীর দিয়ে বন্ধ করে দেয়ায় চরম দূর্ভোগে পড়েছেন এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবার। বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার না পেয়ে এখন চরম কষ্টে বাড়িতে প্রবেশ এবং বের হচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা।

জানা গেছে, বাঘা উপজেলা পরিষদ ভবনের সামনে দক্ষিন মিলিক বাঘা গ্রামে প্রায় পঁচিশ বছর আগে ৫ শতক জমি ক্রয় করে বাড়ি নির্মান করেন মৃত: আশরাফ আলীর (বীর মুক্তিযোদ্ধা) মেয়ে ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা নাসিমা আক্তার। অসুস্থ মা ও স্বামি সন্তান নিয়ে নাসিমা ওই বাড়িতে বসবাস করেন। এমতাবস্থায় গত ডিসেম্বর (২০২০) মাসে তার বাড়ী থেকে পশ্চিম দিকে পাকা রাস্তায় আসার একমাত্র পথটি পাশের জমির মালিক সাজদার রহমান ইটের প্রাাচীর দিয়ে বন্ধ করে দেয়। বাড়ির মেইন গেটের সামনে ইটের প্রাচীর নির্মাণ করায় পরিবারটি এখন চরম সমস্যায় ভুগছেন। প্রতিকারের আশায় বাঘা পৌর মেয়র বরাবর অভিযোগ দিলে পৌর মেয়র আব্দুর রাজ্জাক সাজদার রহমান কে প্রাচীর ভাঙ্গার নোটিশ দেন। কিন্তু নয় মাস পেরিয়ে গেলেও সাজদার প্রাচীর অপসারন করেননি। ফলে, মাত্র ৮/১০ হাত দৈর্ঘের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চলাচলে এখন তাদের চরম কষ্ট করতে হচ্ছে। প্রতিবেশির এমন অমানবিক আচরণ কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না স্থানীয়রা। এ ঘটনাকে চরম অমানবিক বলে মনে করেন তারা। মানুষের চলাচলের রাস্তা কখনোই বন্ধ করা ঠিক নয় বলেও দাবি স্থানীয়দের।

সরেজমিনে গিয়েও দেখা যায়, নাসিমার বাড়ি থেকে সরকারি পাকা সড়কে উঠার কাঁচা রাস্তায় ৩ ফিট উচ্চতায় বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে।

ভুক্তভুগি নাসিমা জানান, ২০/২৫ বছর থেকে এই দিক দিয়ে আমরা স্বাভাবিক ভাবে চলাচল করে আসছি। কিন্তু হঠাৎ করে প্রতিবেশী সাজদার রহমান ইটের প্রাচীর নির্মান করে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এখন আমরা অনেক কষ্টে বাড়ি থেকে যাতায়াত করি। এভাবে চলাচল করতে গিয়ে আমার অসুস্থ মা (৮৫) কয়েকবার দুর্ঘটনার শিকারও হয়েছেন। তিনি অভিযোগ করে এ প্রতিবেদকের নিকট বলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তার পরেও আমার বিচারের আসায় সবার দ্বারে দ্বারে ঘুরে কোন সুরাহা পাচ্ছিনা।

নাসিমার স্বামী শিক্ষক জাহাঙ্গির আলম জানান, নির্মাণাধীন প্রাচীরের পিছনের দিকে সরকারী ভাবে চলাচলের রাস্তা আছে। প্রতিবেশী সাজদার তার লোকবল নিয়ে রাতারাতি বাড়ির সামনে ইটের প্রাচীর তুলে তাদের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ ওই জায়গা দিয়ে গত পঁচিশ বৎসর যাবৎ আমরা চলাচল করছিলাম।

তিনি আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ, থানা ও ইউএনও’র দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু কারও কথাকেই তিনি কর্নপাত করছেননা। এ বিষয়ে বাঘা পৌর মেয়র আব্দুর রাজ্জাক তাকে লিখিত ভাবে প্রাচীর অপসারনের জন্য নির্দেশ দিলেও দীর্ঘ নয় মাস ধরে নতুন-নতুন তারিখ দিয়ে বিচারের নামে কাল ক্ষেপণ করছেন। উপরন্ত তিন দিন আগে সাজদার রহমান মেয়রের নির্দেশ উপেক্ষা করে লোকজন নিয়ে নির্মাণাধীন ইটের প্রাচীর বৃদ্ধির চেষ্টা করেন। এ সময় থানায় বিষয়টি অবগত করলে পুলিশ প্রাচীর বৃদ্ধি বন্ধ করে দেয় এবং বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখে রাস্তা দেবার জন্য নির্দেশ দেয়। কিন্তু পুলিশের কথা উপেক্ষা করে তিনি আবারও প্রাচীর বৃদ্ধির চেষ্টা করে যাচ্ছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে প্রাচীর নির্মানকারি সাজদার বলেন, আমার জায়গায় আমি প্রাচীর দিয়েছি। কাউকে রাস্তার জন্য ব্যবহার করতে দিবো বলে আমি জমি ক্রয় করিনি । তিনি আরও বলেন, তাদের জমি আর আমার জমির মালিকানা দাগ খতিয়ান সম্পুর্ন ভিন্ন। সুতরাং তাকে রাস্তা দেবার কোন প্রশ্নই আসেনা। বরং তারা জোর পূর্বক আমার প্রাচীরের একটু অংশ ভেঙ্গে আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

এবিষয়ে বাঘা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা রয়েজুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা জীবনবাজি রেখে দেশ স্বাধীন করেছে। আর সেই স্বাধিন দেশে যদি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের চলাচলের রাস্তার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সাথে এমন আচরণ অন্যায় এবং অমানবিক। তিনি অচিরেই এই অসহায় দম্পত্তির চলাচলের রাস্তা বের করে দেয়ার জন্য পৌর মেয়রসহ প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।

এবিষয়ে বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজ্জাদ রহমান বলেন, কারও বাড়ির সামনে প্রাচীর নির্মাণ করে চলাচল বন্ধ করার বিষয়টি অমানবিক। প্রাচীর নির্মাণ কারীকে বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখে সমঝোতা করে রাস্তা দেবার জন্য বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাঘা পৌর মেয়র রাজ্জাক বলেন, প্রাচীর অপসারনের জন্য প্রাচীর নির্মানকারিকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি প্রাচীর অপসারন করেন নি। এ বিষয়ে শিঘ্রই ম্যাজিষ্ট্রেটের সরনাপর্ণ হয়ে পরবর্তি ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

মতিহার বার্তা / ইএবি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply