শিরোনাম :
প্রেমিকার বাড়ির সামনে বিষপানে প্রেমিকের মৃত্যু; বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য ‘শাড়ি ক্যানসার’ কেন হয়? তার উপসর্গই বা কী? জানালেন চিকিৎসক ডায়াবেটিকেরাও ভাত খেতে পারেন, তবে মানতে হবে কিছু নিয়ম মল্লিকার সঙ্গে চুমু বিতর্ক, মুখ দেখাদেখি বন্ধ কুড়ি বছর, সাক্ষাৎ পেয়ে কী করলেন ইমরান? ক্যাটরিনার জন্যই সলমনের সঙ্গে সম্পর্কে দূরত্ব, ইদে স্বামীকে নিয়ে ভাইজানের বাড়িতে আলিয়া! রাজশাহী মহানগরীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ২৬ ১৬ মাসের মেয়েকে বাড়িতে একা রেখে ছুটি কাটাতে যান মা, না খেয়ে, জল না পেয়ে মৃত্যু! সাজা যাবজ্জীবন রাজশাহীতে ট্রাকে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি, আটক ২ পুঠিয়ায় পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে গ্রেফতার ৩ ঈদের সাথে যুক্ত হওয়া নববর্ষের উচ্ছ্বাসে বিনোদন স্পট পরিপূর্ণ
রাজশাহীতে তিনগুণ বাড়ছে ওয়াসার পানির দাম

রাজশাহীতে তিনগুণ বাড়ছে ওয়াসার পানির দাম

রাজশাহীতে তিনগুণ বাড়ছে ওয়াসার পানির দাম
রাজশাহীতে তিনগুণ বাড়ছে ওয়াসার পানির দাম

অনলাইন ডেস্ক: পানির দাম তিনগুণ বাড়াচ্ছে রাজশাহী পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন (ওয়াসা) কর্তৃপক্ষ। বর্ধিত এ মূল্য আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে তারা। তবে এক লাফে তিনগুণ পানির দাম বাড়ায় মহানগরীর জনমনে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

রাজশাহী ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি ১ হাজার লিটার পানি উত্তোলন, পরিশোধন ও সরবরাহে ওয়াসার খরচ হয় ৮ টাকা ৯০ পয়সা। এতদিন আবাসিক সংযোগে প্রতি ১ হাজার লিটার পানির দাম ধরা হতো ২ টাকা ২৭ পয়সা। বর্তমানে আবাসিকে তা বাড়িয়ে ধরা হবে ৬ টাকা ৮১ পয়সা।

অন্যদিকে বাণিজ্যিকভাবে হাজার লিটার পানির দাম ৪ টাকা ৫৪ পয়সা। বাড়িয়ে তা ধরা হবে ১৩ টাকা ৬২ পয়সা। এতে আবাসিক ও বাণিজ্যিক উভয়ের ক্ষেত্রেই পানির দাম পুরোপুরি তিনগুণ বাড়ানো হচ্ছে।

আবাসিক ও বাণিজ্যিক যেসব সংযোগে মিটার নেই সেগুলোর ক্ষেত্রে সংযোগ পাইপের ব্যাস ও ভবনের পরিধির ওপর নির্ভর করে মূল্য বাড়ানো হবে। আবাসিকে আধা ইঞ্চি পাইপে নিচতলার জন্য মাসে সর্বনিম্ন ১৫০ টাকা এবং ১০ তলার জন্য ৮২৫ টাকা মূল্য ধরা হবে। এক ইঞ্চি পাইপে নিচতলায় ৩৭৫ টাকা এবং ১০ তলায় ২ হাজার ৭০ টাকা মূল্য নির্ধারিত হবে। দ্বিতীয় তলা থেকে ১০তলা বিশিষ্ট বহুতল ভবনের জন্য পানির বিল আনুপাতিক হারে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

যেকোনো ধরনের আবাসিক ভবনে দেড় ইঞ্চি পাইপে ৫ হাজর ৬২৫ টাকা, ২ ইঞ্চিতে ৭ হাজার ৫০০, ৩ ইঞ্চিতে ৯ হাজার ৩৫০ এবং ৪ ইঞ্চিতে ১১ হাজার ২৫০ টাকা ধরা হয়েছে। বাণিজ্যিক সংযোগের ক্ষেত্রে নিচতলায় আধা ইঞ্চি পাইপে মাসিক ৩০০ টাকা এবং ১০ তলায় ১ হাজার ৬৫০ টাকা মূল্য ধরা হয়েছে। এক ইঞ্চি পাইপে নিচতলায় ৭৫০ টাকা এবং দশতলায় ৪ হাজার ১৪০ টাকা ধরা হয়েছে। দ্বিতীয় থেকে নবম এবং দশতলার ওপরের তলার জন্য বিল বাড়বে আনুপাতিক হারে। বাণিজ্যিকে দেড় ইঞ্চি পাইপের জন্য ১১ হাজার ২৫০ টাকা, ২ ইঞ্চিতে ১৫ হাজার, ৩ ইঞ্চিতে ১৮ হাজার ৭৫০ এবং ৪ ইঞ্চিতে ২২ হাজার ৫০০ টাকা ধরা হয়েছে বলে জানা গেছে ওয়াসা সূত্রে।

সিটি করপোরেশনের পানি সরবরাহ শাখাকে আলাদা করে ২০১০ সালের ১ আগস্ট প্রতিষ্ঠা হয় রাজশাহী ওয়াসা। এখন ১০৩টি গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করে তা পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করছে ওয়াসা। নগরীতে পানির চাহিদা প্রতিদিন ১১ কোটি ৩২ লাখ লিটার। তবে ওয়াসা রাজশাহী নগরীতে ৭১২ কিলোমিটার পাইপলাইনের মাধ্যমে ৯ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করতে পারে।

সম্প্রতি ওয়াসা পানি পরীক্ষা করে দেখেছে, পাইপের পানিতে আছে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া। এ খবর জানাজানি হলে নগরবাসীর মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করে। আবার দীর্ঘদিন ধরে নগরবাসীর অভিযোগ ওয়াসা দুর্গন্ধযুক্ত পয়লা পানি সরবরাহ করছে। ঠিক এমন সময় পানির মূল্য বাড়ানোর সিদ্ধান্তে অসন্তোষ আরও বাড়ছে। এরই মধ্যে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পানির দাম বাড়ানোর বিষয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন।

জানতে চাইলে রাজশাহী প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও বিশিষ্ট সমাজ চিন্তাবিদ গোলাম সারোয়ার জাগো নানা বিধি-নিষেধের কারণে বর্তমানে জনগণ মুখ খুলতে পারছেন না। এ সুযোগে বেশকিছু সরকারি প্রতিষ্ঠান যা ইচ্ছে তাই করছে।

তিনি আরও বলেন, রাজশাহীর পানিতে পাওয়া গেছে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া। আবার দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা পানি আসে পাইপ-লাইনে। এগুলোর সমাধান না করেই মগের মুল্লুকের মতো পানির দাম বাড়াচ্ছে, যা চরম অন্যায় ও অপ্রাসঙ্গিক একটি সিদ্ধান্ত।

এ বিষয়ে নদী ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি অ্যাডভোকেট এনামুল হক বলেন, দেশের বিদ্যমান দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা দূর করলে জনগণের মৌলিক চাহিদাগুলোর ওপর ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ানোর প্রয়োজন হয় না। যদি বাড়াতেই হয় তবে তা সহনীয় ও যৌক্তিক পর্যায়ে করতে হবে। নগরবাসীর বিদ্যমান পানির সমস্যা দূর না করেই হঠকারিতামূলক পানির দাম বাড়ানো মোটেও সমীচীন নয়।

তিনগুণ মূল্য বাড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, সর্বশেষ ২০১৪ সালে পানির মূল্য বাড়ানো হয়েছিল। এর মধ্যেও এ বিষয়ে কয়েক দফায় বিভিন্ন পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। এমনকি রাজশাহী ওয়াসা বোর্ড ও সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়েই পানির দাম বাড়ানো হচ্ছে। এছাড়া আগামীতে যে বড় বড় প্রকল্প আছে যার ব্যয় নির্বাহ করতে গেলে অর্থের প্রয়োজন। এ কারণে উৎপাদন খরচের সঙ্গে সমন্বয় করেই আমাদের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

দুর্গন্ধযুক্ত পানি সমস্যার সমাধান না করেই মূল্য বাড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি অস্বীকার করার সুযোগ নেই যে রাজশাহীর কিছু কিছু এলাকার পানিতে সমস্যা আছে। তবে যেসব এলাকায় এ সমস্যা দেখা দেয় তার খবর পেলেই সঙ্গে সঙ্গেই আমরা পানির লাইন পরিষ্কার করার ব্যবস্থা করে দেই। আগামীতে এসব সমস্যা থাকবে না।

মতিহার বার্তা / ইএবি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply