নিজস্ব প্রতিবেদক: হাজী আবুল হোসেন ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির (আর-হ্যাবিট) কম্পিউটার বিভাগের ২য় পর্বের শিক্ষার্থী মো. রাফিউল ইসলাম রাফি (১৮)। প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক মিটিং এ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে পড়ার মানন্নোয়ন বৃদ্ধির দাবি করেছিলেন তিনি। কিন্তু তার কথায় ক্ষিপ্ত হয়ে উপাধক্ষ্য মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন সকলের সামনে শিক্ষার্থী রাফির জন্মদাতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে অপমান করেন।
সকলের সামনে এমন অপমান করায় তা সইতে না পেরে রোববার (৯ জানুয়ারি) দুপুর ২ টার দিকে এয়ারপোর্ট রোডের নওদাপাড়ায় প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন মেসে ফিরে খালি পেটে বিষপান করেন তিনি। সোমবার রাতে (৯ জানুয়ারি) রাফির বিষপান ও হাসপাতালে ভর্তির বিষয়টি রামেক হাসপাতাল পুলিশ বক্সের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) রুহুল আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ওই সময় রাফির অবস্থা খারাপ হওয়ায় তার রুমমেটরা তাকে (রাফি) প্রথমে নওদাপাড়া ইসলামি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে অবস্থা আরও আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ায় সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রামেকে হাসপাতালে দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে রামেক হাসপাতালে স্থানন্তর করেন। পরবর্তীতে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তার শরীর থেকে বিষ পরিষ্কার করা হলেও বর্তমানে তার অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন রামেকের দায়িত্বরত চিকিৎসকেরা।
ছেলের বিষপানের বিষয়টি জানতে চাইলে শিক্ষার্থী রাফির বাবা রবিউল ইসলাম বলেন, বার্ষিক বা মাসিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মিটিং এ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা ও পড়াশোনার মানন্নোয়নের বিষয়ে আলোচনা হয়। এতে আর-হ্যাবিট অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটির বেশকিছু বাইরের গণ্যমান্য শিক্ষক যারা অন্য জেলায় রয়েছেন এবং হেড অফিসে কিছু কর্তাব্যক্তি এ মিটিং এ আসেন। তারা শিক্ষার্থীদের কাছে তাদের সমস্যার কথা জানতে চান। আমার ছেলে সরল মনেই পড়াশোনার মানন্নোয়নসহ প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। এতেই উপস্থিত উপাধক্ষ্য ক্ষিপ্ত হন। ‘এরপর তিনি আমার ছেলেকে জিজ্ঞাসা করেন তোমার বাবা কি করেন? ছেলে উত্তর দেয়- বাবা শিক্ষকতা করেন। তখন তিনি অশ্লীল ও অপমানের সাথেই বলেন তুমি শিক্ষকের ছেলে নও। তুমি শিক্ষকের ছেলে হলে এভাবে কথা বলতে না। তোমার বাবা যিনি শিক্ষক তুমি তার ছেলে না….. এভাবে সকলের সামনে অনেক অপমানমূলক কথাবার্তা বলে। এমনকি উপস্থিত অন্যান্য শিক্ষকরাও তার সাথে খারাপ আচরণ করে। এতে ছেলে খুব লজ্জা পায় এবং সে তার মেসে ফিরে আসে। মেসে ফিরে এসে ফেসবুকে একটি স্ট্যাস্টাস দেয় এবং ২ টা কিংবা আড়াইটার দিকে খালি পেটে বিষ পান করে বলে জানিয়েছে তার সাথের অন্যান্যরা’Ñ বলে প্রতিবেদককে জানান রাফি বাবা রবিউল ইসলাম।
এঘটনার পর কলেজ থেকে রোববার তিনজন শিক্ষক বিকেলে আসেন দেখা করতে। আজ সোমবার সন্ধায় এসেছিলেন উপাধক্ষ্য আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ কয়েকজন। এসেই তিনি রাফির বাবাকে জানান, আমার সামান্য কথার প্রেক্ষিতে রাফি এমন কান্ড করবে আমি ভাবতেও পারিনি। আমাকে দেখে যদি রাফির শরীর আরও খারাপ যেনো না হয় তাই আসিনি।
আইনি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন কিনা জানতে চাইলে রাফির বাবা বলেন, এখন ছেলের সুস্থতার বিষয়ে চিন্তিত। বিপদ এখনো কাটেনি। কোনো অঘটন ঘটলে বা ছেলের কিছু হলে সেটি দেখা যাবে। এখন শুধু ছেলের সুস্থতা কামনা করছি।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির উপাধক্ষ্য মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনকে তার মোবাইলের দুটি নাম্বারে একাধিকবার কল করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
মতিহার বার্তা / ইএবি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.