শিরোনাম :
প্রেমিকার বাড়ির সামনে বিষপানে প্রেমিকের মৃত্যু; বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য ‘শাড়ি ক্যানসার’ কেন হয়? তার উপসর্গই বা কী? জানালেন চিকিৎসক ডায়াবেটিকেরাও ভাত খেতে পারেন, তবে মানতে হবে কিছু নিয়ম মল্লিকার সঙ্গে চুমু বিতর্ক, মুখ দেখাদেখি বন্ধ কুড়ি বছর, সাক্ষাৎ পেয়ে কী করলেন ইমরান? ক্যাটরিনার জন্যই সলমনের সঙ্গে সম্পর্কে দূরত্ব, ইদে স্বামীকে নিয়ে ভাইজানের বাড়িতে আলিয়া! রাজশাহী মহানগরীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ২৬ ১৬ মাসের মেয়েকে বাড়িতে একা রেখে ছুটি কাটাতে যান মা, না খেয়ে, জল না পেয়ে মৃত্যু! সাজা যাবজ্জীবন রাজশাহীতে ট্রাকে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি, আটক ২ পুঠিয়ায় পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে গ্রেফতার ৩ ঈদের সাথে যুক্ত হওয়া নববর্ষের উচ্ছ্বাসে বিনোদন স্পট পরিপূর্ণ
রাজশাহীতে প্রথম রোজায় বেড়েছে তরমুজের চাহিদা ও দাম

রাজশাহীতে প্রথম রোজায় বেড়েছে তরমুজের চাহিদা ও দাম

রাজশাহীতে প্রথম রোজায় বেড়েছে তরমুজের চাহিদা ও দাম
রাজশাহীতে প্রথম রোজায় বেড়েছে তরমুজের চাহিদা ও দাম

মাসুদ রানা রাব্বানী : ফাল্গুনের শুরু থেকেই রাজশাহী অঞ্চলে দেখা মিলেছিলো ভাপসা গরমের। চৈত্রের প্রথম দিনে রাজশাহীর প্রকৃতিতে কাঠফাটা রোদ ও ভপসা গরমের মাত্রা আরও বেড়েছে। এমন অস্বস্তিময় সময়ে শুরু হয়েছে ইবাদতের মাস রমজান। সারাদিন সিয়াম সাধনার পর ইফতারে রসালো ফল তরমুজে তৃপ্তি মেটাতে অধিকাংশ মানুষই কিনছেন তরমুজ। বাড়তি এ চাহিদার কারণে দামও কিছুটা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা।

রোজার প্রথম দিনেই রাজশাহীতে তরমুজের বেশ চাহিদা লক্ষ্য করা গেছে। রোববার (৩ এপ্রিল) নগরীর তালাইমারি, শালবাগান, সাহেববাজার, লক্ষীপুর, খড়খড়ি ও কোর্ট বাজারের কয়েকটি তরমুজের পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে এমনই দৃশ্য চোখে পড়ে প্রতিবেদকের।

তরমুজ ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, মার্চের শুরুর দিকে রাজশাহীর বাজারে তরমুজ উঠলেও প্রথম দিকে তুরমুজের তেমন চাহিদা ছিল না। কিন্তু আজ (রোববার) মাহে রমজানের প্রথম রোজাতেই এর চাহিদা বেড়েছে দুই থেকে তিন গুন।

ব্যবসায়ীরা জানান, আগে যেখানে দিনে ৪০ থেকে ৫০ টি তরমুজ বিক্রি হতো। কিন্তু আজ দিনের অর্ধেক সময়েই দ্বিগুণ বিক্রি হয়েছে। হয়তোবা ইফতারের আগ মূহুর্ত পর্যন্ত তা বেড়ে তিনগুণে ছাড়াবে। মূলত এই গরমে দিনশেষে ইফতারে তৃপ্তি পেতে লোকজন তরমুজ কিনছেন বেশি। তীব্র গরমে তরমুজ শরীরের জন্য বেশ আনন্দ দায়কও বটে।

রাজশাহীর সবচেয়ে বড় তরমুজের মোকাম নগরীর শালবাগান বাজার। রাজশাহী শহরে প্রায় ২০০টির বেশি খুচরা ও পাইকারি তরমুজ ব্যবসায়ী রয়েছে। এর মধ্যে শালবাগানে পাইকারি তরমুজের আরত রয়েছে ৭টি ও খুচরা দোকান ৮টি। এ বাজারের তরমুজ ব্যবসায়ীরা জানান, রাজশাহীর প্রায় সব মোকামেই তরমুজ আসে বরিশাল ও পটুয়াখালী থেকে। বাজারে বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে বাংলালিংক, হলুদ তরমুজ ও জাপানি জাতের কালো তরমুজ। ছোটবড় হওয়ায় দামের পার্থক্যও রয়েছে তরমুজে। ৫ থেকে ১২ কেজি ওজনের তরমুজের দাম কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। অন্যদিকে ৫ কেজি ওজনের চেয়ে কম তরমুজগুলো কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। বাংলালিংক ও জাপানি কালোজাতের উভয়ের দামই একই হলেও হলুদ তরমুজ গুলো বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি দরে।

এদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ রমজান মাস আসায় তরমুজের ওপর মানুষের চাহিদা বেশি হবে এটা জেনেই বিক্রেতারা ইচ্ছাকৃতভাবেই বাড়িয়েছেন দাম। সপ্তাহ দেড়েক আগেই বড় তরমুজ বিক্রি হচ্ছিল ৪৫ টাকায় আর ছোট তরমুজগুলো ছিল ৪০ টাকায়। এখন এসব তরমুজই বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি দরে।

শালবাগানে তরমুজ কিনতে আসা আরিফুর রহমান নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘রোজার এক সপ্তাহ আগেই বড় তরমুজ কিনেছি ৪০ টাকায়। এখন সেই তরমুজ ৫ টাকা কেজিপ্রতি বেশি কিনতে হচ্ছে।’

সাহেব বাজারে নাতির জন্য তরমুজ কিনতে এসেছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান নামের এক বৃদ্ধ। তিনি বলেন, একসময় এই তরমুজ আমরা পিচ হিসেবে কিনে খেয়েছি। আর এখন কেজিপ্রতি কিনতে হচ্ছে। তরমুজের খোসার ওজনই তো অর্ধেক। সে হিসেবে কেনো এসব ফল কেজি দরে বিক্রি হবে? সরকারের এদিকে নজর দেওয়া উচিৎ।

দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে তরমুজ ব্যবসায়ী আমির হোসেন বলছেন, এক সপ্তাহ আগেও আমরা পাইকারি তরমুজ কিনেছি ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা মন। আর ছোট তরমুজগুলো ছিল ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকায়। কিন্তু এখন সেই তরমুজই মনপ্রতি কিনতে হচ্ছে ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকায়। আমরা যদি কম টাকায় মাল পায় তবে আমরাও কমেই বিক্রি করতে পারবো। কিন্তু দাম বেশি পড়লে তো খরচ অনুসারে সামান্য বাড়াতেই হবে।

তাঁর দাবি, দাম বৃদ্ধির জন্য মূলত মধ্যসত্তভোগীরা দায়ী। তারা কৃষকদের কাছে থেকে কম দামে কিনে হাত বদল করে আমাদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করছেন। আমরা যে দামে কিনতে তার থেকে সব খরচ বাদ দিয়ে দিলে ২ থেকে ৩ টাকা লাভে বিক্রি করছি।

তরমুজের বাজার নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মাসুম আলী বলেন, রাজশাহী অঞ্চলের মধ্যে কোন ব্যবসায়ী যদি সাধারণ একজন ভোক্তার অধিকার ক্ষুন্ন করেন তবে অবশ্যই আমরা তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিবো। তবে কৃষি পণ্য ও বিপনন থেকে তরমুজের কেজিপ্রতি নির্দিষ্ট মূল্য না থাকায় এবিষয়ে নির্ণয় করা আমাদের জন্য জটিল। তবে কেউ বাজার মূল্যের চাইতে অধিক মূল্যে তরমুজ বিক্রি করলে এবং কোনো ভোক্তা যদি অভিযোগ দেন সেক্ষেত্রে আমরা অবশ্যই পদক্ষেপ নিবো।

মতিহার বার্তা / এম আর টি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply