শিরোনাম :
গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার! ইজ়রায়েলকে জবাব দিতে সর্বোচ্চ নেতার ফতোয়ার কথাও ভুলতে চায় ইরান, এ বার কি পরমাণু যুদ্ধ?
‘যুদ্ধ বাধ্য করেছে থামতে, ফিরিয়ে দিয়েছে ভালবাসা’

‘যুদ্ধ বাধ্য করেছে থামতে, ফিরিয়ে দিয়েছে ভালবাসা’

‘যুদ্ধ বাধ্য করেছে থামতে, ফিরিয়ে দিয়েছে ভালবাসা’
‘যুদ্ধ বাধ্য করেছে থামতে, ফিরিয়ে দিয়েছে ভালবাসা’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুদ্ধের সময়ে ইউক্রেনে বিয়ের আইনও বদলেছে। আগে নিয়ম ছিল, বিয়ের এক মাস আগে আবেদন জানাতে হবে।

সিনেমায় যেমন হয়…, মৃত্যু দোরগোড়ায় এসে দাঁড়ালে গোটা জীবনটা ফ্ল্যাশব্যাকের মতো চোখের সামনে দিয়ে বয়ে যায়। ভেসে ওঠে প্রিয়জনের মুখ। ইহর জ়াকাভতস্কিরও তা-ই হয়েছিল। প্রেমিকার মুখটা মনে করে বুক কেঁপে উঠেছিল। যুদ্ধ লেগেছে দেশে। জীবন অনিশ্চিত। ২৪ ফেব্রুয়ারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর দিনটাতেই ইউক্রেনীয় যুগল ঠিক করে ফেলেছিলেন— ‘‘মরতে হলে স্বামী-স্ত্রী হয়েই মরব।’’

দেরি করেননি ইহর। রাতারাতি আংটি কিনে হাঁটু গেড়ে বসে প্রেমিকা ক্যাটরিনা লিটভিনেনকো বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ২৪ বছর বয়সি ইহর ও ২৫ বছরের ক্যাটরিনা এখন স্বামী-স্ত্রী। যুদ্ধের চার মাসে অনেক কিছু ঘটে গিয়েছে। দেশের একাংশ রাশিয়ার দখলে। যুদ্ধের ক্ষত নিয়ে দগদগে ঘা দেশ জুড়ে। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এক-একটি শহর। নববিবাহিত বর-বৌ দেশে থেকে ‘জীবনযুদ্ধ’ চালিয়ে যাচ্ছেন। ইহর বলেন, ‘‘ওর সঙ্গে জীবন কাটাতে চেয়েছিলাম। তাই যেটুকু সময় পেয়েছি, পাচ্ছি… নষ্টকরি না।’’

সময়ের মূল্য বোধহয় মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েই মানুষ টের পায়। পাবলো ও ওকসানা সাবরিয়ার ১৮ বছরের বিবাহিত জীবন। যুদ্ধ শুরুর পরে চেরনিহিভের একটি শতাব্দী প্রাচীন ছোট্ট গির্জায় ফের আজীবন ভালবাসার শপথ নিয়েছেন। পাবলো বলেন, ‘‘ভিতর থেকে তাগিদটা অনুভব করেছিলাম। যুদ্ধ শুরুর আগে জীবন ছিল ক্রমাগত ছুটে চলা। অফিস, কাজকর্ম, এটা-সেটা… সব সময় ব্যস্ততা। যুদ্ধ আমাদের থামতে বাধ্য করেছে। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, যা কিছু গুরুত্বপূর্ণ, তা কালকের জন্য ফেলে রাখা উচিত নয়।’’ বাড়ির নীচে বেসমেন্টে আপাতত ওকসানার একার সংসার। পাবলো রয়েছেন যুদ্ধক্ষেত্রে। হাতে অস্ত্র তুলে নিতে হয়েছে তাঁকে। প্রথমে স্থানীয় স্থলবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। এখন সরাসরি সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়ছেন।

ইহর, পাবলোদের মতো এমন বহু যুবক-যুবতী গত চার মাসে চার হাত এক করেছেন। এঁদের মধ্যে অনেকেই যুদ্ধে লড়ছেন। কেউ কেউযুদ্ধে যাওয়ার আগে বিয়ে সেরে গিয়েছেন। কারও কারও কাছে এই সময়টাতে ভালবাসার সংজ্ঞাই বদলে গিয়েছে। ধ্বংস ও মৃত্যু দেখার পরে বেঁচে থাকা ও ভালবাসা সমার্থক হয়ে গিয়েছে।

যুদ্ধের সময়ে ইউক্রেনে বিয়ের আইনও বদলেছে। আগে নিয়ম ছিল, বিয়ের এক মাস আগে আবেদন জানাতে হবে। এখন দিনের দিন সরকারি নথিভুক্তিকরণের আবেদন জানিয়ে বিয়ে করা যাচ্ছে। এই চার মাসে শুধু কিভেই অন্তত ৪ হাজার যুগল বিয়ে করেছেন। প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে কোনও না কোনও ভালবাসার গল্প।

আরও অনেকের মতো ২২ বছর বয়সি দারিয়া পোনোমারেঙ্কোও দেশ ছেড়ে পোল্যান্ডে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর প্রেমিক ইভহেন নালিভিকোকে ইউক্রেনে থেকে যেতে হয়। সরকারি নিয়ম, ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সি পুরুষদের দেশ ছেড়ে যাওয়া চলবে না। প্রয়োজনে ‘শত্রুদের’ বিরুদ্ধে লড়তে হবে সকলকে। সীমান্ত পেরিয়েও দারিয়া ফিরে আসেন ভালবাসার টানে। এক মাস আলাদা ছিলেন দু’জনে। জীবন অর্থহীন হয়ে ওঠে, স্থির করে ফেলেন বিয়ে করবেন।

দারিয়া বলেন, ‘‘কেউ তো জানি না ক’দিন বাঁচব। কাল কী হবে।’’ বিয়ে করেছেনদারিয়া ও ইভহেন। আত্মীয়, বন্ধুবান্ধব কেউ ছিল না পাশে। বিয়েতে ইউক্রেনের ঐতিহ্যবাহী এমব্রয়ডারি করা শার্ট পরেছিলেন দারিয়া। দেশ, নিজেদের সংস্কৃতিকে ভালবেসে, অনেক মেয়েই বিয়েতে এখনএ পোশাক পরছেন।

আনা কারপেঙ্কো আবার একরোখা মেয়ে। স্পষ্ট কথা, ‘‘জীবন থামতে পারে না।’’ সাত বছরের প্রেম। বিয়ে নিয়ে কত স্বপ্ন ছিল। পুরোটা না হলে কিছুটা তো হতেই হবে। সাদা লিমুজ়িনে চেপে বিয়ে করতে এসেছিলেন তিনি। বললেন, ‘‘জীবন চলবে। এ ভাবেই চলবে… ভালবাসা অবহেলায় ফেলে রেখো না।’’

মতিহার বার্তা/এমআরটি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply