নিজস্ব প্রতিবেদক: খানা খন্দে আর গর্তে ভরা কোর্ট স্টেশনের রাস্তাটি এখন ভিআইপি সড়ক বললে ভূল হবে না। এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি এখন চার লেনের অত্যাধুনিক রাস্তা। সড়কের মাঝ স্থানে তৈরী ডিভাইডারে সংযুক্ত করা হয়েছে লোহার তৈরী গ্রিল। সেই গ্রিলের মধ্যে লাগানো হয়েছে পরিবেশ বান্ধব গাছ। সব মিলে সবুজে ঘেরা রাজশাহী মহানগরী কোর্ট হড়গ্রাম বাজার থেকে কোর্ট স্টেশন পর্যন্ত রাস্তাটি এই এলাকার মানুষের জিবনমান উন্নয়নে ব্যপক অবদান রাখছে।
অপরদিকে এলাকার ও সড়কের উন্নয়নের ফলে কোর্ট অঞ্চলে অনেক বহুতল ভবন গড়ে ওঠেছে। কোর্টের এই চার লেনের সড়কটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার আরেকটি কারন হলো, সড়কটি গিয়ে বাইপাস মহাসড়কে ও কোর্ট স্টেশন গিয়ে মিলিত হয়েছে। এছাড়া র্যাব-৫, এর সদর দপ্তরে যাতায়াতের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে সড়কটি।
গত ৫বছর আগেও খানা খন্দে ভরা রাস্তাটি অত্যাধুনিক সড়কে রুপান্তরিত হলেও সড়কটিতে পথচারীদের ভোগান্তি কমেনি। এই ভোগান্তির একমাত্র কারন হিসেবে সড়কের উপর অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বাজারটির কথা বলছেন সাধারণ পথচারী ও যানবাহনে চলাচলকারীরা।
সড়কের উপর সবজি বিক্রেতা মোঃ আবুল করিম , চা দোকানী জাহাঙ্গীর, পিয়াজ, মরিচ, আলু বিক্রেতা মোঃ আলতাব হোসেন, গরুর মাংস ব্যবসায়ী বকুল, বিভিন্ন ধরনের শুটকি মাছ বিক্রেতা আরিফ সহ একাধিক দোকানীর সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা সড়কে বসে ব্যবসা করলেও প্রতিদিন তাদের ইজার দিতে হয়। তবে বাজারে স্থান অন্যত্র নির্ধারন করা হলে তারা সেখানেই বসে ব্যবসা করবেন। তারা আরও বলেন, আমরা সড়কের ব্যবসায়ীরা জাকির হাজিকে দোকান প্রতি দৈনিক ১৫ টাকা ২০টাকা হারে খাজনা দেই।
সড়কের উপর বসা ব্যবসায়ীদের কাছে খাজনা আদায়ের বিষয়ে মুঠো ফোনে ফোন দিয়ে জানতে চাইলে, জাকির হাজি বলেন, আমি হড়গ্রাম কাঁচা বাজারের বৈধ ইজারাদার। রাসিক থেকে ইজারা নিয়ে খাজনা আদায় করি। সড়কের উপর খাজনা নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, জায়গা নাই তো ব্যবসায়ীরা কোথায় ব্যবসা করবে ? রাসিক মেয়রের সাথে কথা চলছে। তিনি একটি নিদিষ্ট স্থান বরাদ্দ দিবেন আশা করছি। জায়গা পেলে কাঁচা বাজার সড়ক থেকে সরানো হবে।
না পেলে ? এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, দুইশত ব্যবসায়ী যাবে কোথায়? তাদের তো আমি বেকার করতে পারিনা এই বলে ফোন কেটে দেন ইজারাদার।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে কথা হয় রাসিকের এক কর্মকর্তার সাথে। ইজারার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাস্তা যানবাহন চলাচলের জন্য, বাজার বা দোকানপাট বসিয়ে কেনা-বেচা করার জন্য নয়। তাছাড়া রাস্তা কখনো ইজারা হয়না।
একাধিক পথচারীদের অভিযোগ, কোর্ট স্টেশনের চার লেনের রোডের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ রোডের দুই পাশের রাস্তার ৫০% রোড দখল করে প্রায় ২শাতাধিক দোকানী বসে ব্যবসা করে। এটা রিতিমতো এক ধরনের অরাজকতা ? দীর্ঘ কয়েক বছর পরে রোডটিতে আধুনিকতার ছোয়া লেগেছে ঠিকই। কিন্তু সচেতনাতা শূণ্যের কোঠায়।
কোর্ট থেকে ৩মিনিটের মধ্যে কোর্ট স্টেশনে পৌঁছানো যাবে এই রোড দিয়ে। অথচো ১৫/২০ মিনিট যানজটে পড়ে থাকতে হয়। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দীর্ঘ সময় যানজট লেগেই থাকে সড়কটিতে।
পথচারী বিশিষ্ট ঠিকাদার সোহেল জুবেরী সুজন বলেন, সড়কটি এই এলাকার মানুষের দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশা ছিলো। বিগত বিএনপি সরকারের আমলে অনেক তদবির দৌঁড়ঝাঁপ করেও ভাঙ্গাচোরা এই রাস্তাটি সংস্কারের উদ্দ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর কোর্ট অঞ্চলের বাসিন্দাদের দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশা পূরুণ করেছেন রাসিক সফল মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। কিন্তু সড়কটি থেকে যানজট নিরাসনে কাঁচা বাজার উচ্ছেদের কোন বিকল্প নাই। এই রাস্তাটিতে পথচারীদের ভোগান্তি নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা যাতে বেকার হয়ে না পড়ে সেই বিষয়টি মাথায় রেখে ব্যবসায়ীদের নতুন স্থান বরাদ্দের জন্য রাসিক মেয়র মহোদয়ের সূদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.