শিরোনাম :
প্রেমিকার বাড়ির সামনে বিষপানে প্রেমিকের মৃত্যু; বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য ‘শাড়ি ক্যানসার’ কেন হয়? তার উপসর্গই বা কী? জানালেন চিকিৎসক ডায়াবেটিকেরাও ভাত খেতে পারেন, তবে মানতে হবে কিছু নিয়ম মল্লিকার সঙ্গে চুমু বিতর্ক, মুখ দেখাদেখি বন্ধ কুড়ি বছর, সাক্ষাৎ পেয়ে কী করলেন ইমরান? ক্যাটরিনার জন্যই সলমনের সঙ্গে সম্পর্কে দূরত্ব, ইদে স্বামীকে নিয়ে ভাইজানের বাড়িতে আলিয়া! রাজশাহী মহানগরীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ২৬ ১৬ মাসের মেয়েকে বাড়িতে একা রেখে ছুটি কাটাতে যান মা, না খেয়ে, জল না পেয়ে মৃত্যু! সাজা যাবজ্জীবন রাজশাহীতে ট্রাকে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি, আটক ২ পুঠিয়ায় পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে গ্রেফতার ৩ ঈদের সাথে যুক্ত হওয়া নববর্ষের উচ্ছ্বাসে বিনোদন স্পট পরিপূর্ণ
মাদক কারবারিদের আতঙ্কে চার গ্রামের মানুষ

মাদক কারবারিদের আতঙ্কে চার গ্রামের মানুষ

মাদক কারবারিদের আতঙ্কে চার গ্রামের মানুষ
মাদক কারবারিদের আতঙ্কে চার গ্রামের মানুষ

অনলাইন ডেস্ক: টাঙ্গাইলের মির্জাপুর পৌর এলাকার চার গ্রামে চলছে রমরমা মাদক ব্যবসা। আর এসব নিয়ন্ত্রণ করছেন চিহ্নিত চার মাদক কারবারি। এলাকার কেউ প্রতিবাদ করলে তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করা হয়। এছাড়া ভাড়া করা মাদকসেবী সন্ত্রাসীদের দিয়ে নানা ধরনের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

ভয়ে এখন কেউ আর প্রতিবাদ করছেন না। চার মাদক ব্যবসায়ীর জন্য অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। অপ্রতিরোধ্য এই চার মাদক কারবারিকে থামাবে কে এমন প্রশ্ন এখন তাদের।
মাদক ব্যবসীরা মির্জাপুর পৌর এলাকার মুসলিম পাড়া, পাহাড়পুর, হিন্দু অধ্যাষিত মির্জাপুর সাহাপাড়া, বাবুবাজার, সরিষাদাইড়, ঘোষপাড়া ও আন্ধরা গ্রামকে বেছে নিয়েছে। আর মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় বেড়েছে ছিনতাই, চুরি, চাঁদাবাজিসহ অন্যান্য অপরাধ। মারাত্নক হুমকির মুখে পড়েছে পারিবারিক ও সামাজিক জীবন। মাদক ব্যবসায়ীরা চিহ্নিত হলেও ধরাছোয়ার বাইরে থাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে ওই এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে।

বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, পৌরসভার মুসলিম পাড়া ও মির্জাপুর সাহাাপাড়া, বাবুবাজার, সরিষাদাইড়, আন্ধরা ও পাহাড়পুর গ্রামে দেদারসে মাদক বিক্রি হচ্ছে। সাহাপাড়া বাবুবাজারের ইলেকটিক সামগ্রী ব্যবসায়ী মুসলিম পাড়া গ্রামের মৃত. নুরুল হকের ছেলে রিপন মিয়া, বাবুবাজার এলাকার মৃত পূর্ণেন্দ্র সাহার ছেলে চন্দন সাহা, পাহাড়পুড় দূর্গাপুর গ্রামের গৌর সরকারের ছেলে দুলাল সরকার এসব এলাকায় মাদক বিক্রি করছে। এছাড়া দেওহাটা গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পে থাকা শীতল মনিদাসের ছেলে সজিব মনিদাস বাবুবাজার এলাকায় সেলুনে কাজ করে। সজিব কাজের ফাকে গাঁজা ও ইয়াবা টেবলেট বিক্রি করে বলে স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেছেন।

তারা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মদ, গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবা এনে নিজ বাড়িতে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রেখে এসব বিক্রি করছেন। ওই এলাকায় এখন হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক। সঙ্গদোষে স্কুল কলেজের ছাত্রসহ এলাকার উঠতি বয়সের যুব সমাজ ক্রমান্বয়ে মাদক সেবনে ঝুকছে বলে অভিযোগ রয়েছে। নেশার টাকা জোগাড় করতে তারা বাবা-মাকে নির্যাতনসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। মাদকের করাল গ্রাস থেকে যুব সমাজকে রক্ষার দাবি জানিয়েছে এলাকাাবসী।

তারা যুব সমাজকে মাদকের করাল গ্রাস থেকে রক্ষার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। থানা পুলিশ লোক দেখানো অভিযান চালালেও অজ্ঞাত কারণে তাদের গ্রেপ্তার করতে পারছে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, মাদক বিক্রেতারা নিয়মিত তাদের হুমকি দিয়ে থাকেন। এছাড়া সন্ধার পর তারা নিজেরাই মাদক সেবন করে ব্যবসায়ীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। ভয়ে অনেক ব্যবসায়ী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ফেলে অন্যত্র আশ্রয় নেন। রাতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বাড়ি যেতেও ভয় কাজ করে।

এছাড়া মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করে বলে এলাকায় প্রচার করে। এই কথা বলার পর ভয়ে আর কিছু বলা যায় না। প্রতিবাদ করে আবার কোনো বিপদে পড়তে হয়। মাদক সহজলভ্যতার কারণে তাঁদের সন্তানেরা কখন মাদকের দিকে ঝুঁকে পড়ে, সারাক্ষণ সেই আশঙ্কায় থাকতে হচ্ছে বলে জানান তারা। গত দুই দিন ওই এলাকার ব্যবসায়ী ও স্থানীয় অন্তত ২০ জন অভিভাবকের সঙ্গে কথা বললে সবাই এই আশঙ্কার কথা জানান।

সরিষাদাইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মুক্তি সাহা জানান, গত রবিবার রাতে চোরের দল কক্ষের জানালা ভেঙ্গে কম্পিউটারের একটি প্রিন্টারসহ মালামাল চুরি করে নিয়েছে।

সাহাপাড়া বাবুবাজারের ব্যবসায়ী বিপ্লব কুমার সরকার ও শ্রীদিপ সাহা জানান, মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসে হুমকি প্রদর্শন করে। লোকলজ্জার ভয়ে দোকান থেকে পালিয়ে থাকতে হয়। বিষয়টি তারা ওয়ার্ড কাউন্সিলর তাপস সাহা ও পৌরসভার সাবেক মেয়র মুক্তিযোদ্ধা শহীদুর রহমানকে জানিয়েছেন।

পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র তাপস সাহা জানান, চিহ্নিত কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীর কারণে পৌরসভার ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের যুব সমাজ হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া সাহাপাড়া বাবুবাজারের ব্যবসায়ীদের প্রতিনিয়ত হুমকিও দিচ্ছেন তারা।

মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম জানান, মাদক বিক্রেতাদের গ্রেপ্তারে প্রতিদিন পুলিশের অভিযান চলছে। চলতি মাসে কমপক্ষে শতাধিক মাদক বিক্রেতা ও সেবনকারীকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের সোর্স পরিচয় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এসব কাজ যারা করছে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply