আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবী থেকে এই মদের মেঘের দূরত্ব ১০ হাজার আলোকবর্ষ। সেখানের এক নক্ষত্রমণ্ডলে না কি মদের সেই বিশাল ভান্ডার রয়েছে।
পৃথিবীর বুকে মদপ্রেমীদের সংখ্যা বিপুল। বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন ধরনের মদ পছন্দ। কেউ হুইস্কিতে চুমুক দিতে পছন্দ করেন, তো কারও পছন্দ বিয়ার, রাম। কারও কারও আবার বিশেষ ব্র্যান্ডের মদ ছাড়া মুখে রোচে না।
শুধু পৃথিবীতে নয়, মহাকাশেও রয়েছে মদের ভান্ডার। মেঘেদের মতো ভেসে বেড়ায় সেই সুরা! যদিও মহাকাশে থাকা সেই মদের মেঘ পৃথিবীর মানুষের নাগালের বাইরে।
বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবী থেকে এই মদের দূরত্ব ১০ হাজার আলোকবর্ষ। অর্থাৎ আজকের প্রযুক্তিতে সেখানে পৌঁছনো কার্যত অসম্ভব। সেখানের এক নক্ষত্রমণ্ডলে নাকি মদের বিশাল ভান্ডার রয়েছে।
তবে দুঃখের বিষয়, মদের মেঘটি পৃথিবী থেকে ৯৩ লক্ষ হাজার কোটি কিমি দূরে। তবে বিজ্ঞানীদের দাবি, এই মেঘের কোথাও কোথাও একাধিক যৌগের ‘ককটেল’ও রয়েছে।
এই ককটেলের মধ্যে কার্বন মনোক্সাইড, হাইড্রোজেন সায়ানাইড এবং অ্যামোনিয়ার মতো ক্ষতিকারক যৌগ রয়েছে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ১৯৯৫ সালে আকুইলা নক্ষত্রমণ্ডলের কাছে আবিষ্কৃত এই মদের মেঘ আমাদের সৌরজগতের ব্যাসের হাজার গুণ বড়।
এই মেঘে এত পরিমাণ ইথাইল অ্যালকোহল রয়েছে, যা লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি বিয়ারের জোগান দিতে পারে।
১০০ কোটি বছর ধরে পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ প্রতি দিন তিন লক্ষ বোতল করে সেই বিয়ার পান করলে তবে সেই বিশাল ভান্ডার ফুরোবে। অর্থাৎ ১০০ কোটি বছরেও শেষ হবে না এই ভান্ডার।
মজার বিষয় হল ওই নক্ষত্রমণ্ডলে আরও একটি মেঘমণ্ডল রয়েছে। এই দ্বিতীয় ‘খনি’তেও রয়েছে কোটি কোটি লিটার মহাজাগতিক মদ।
যদিও সেই মদ পানের অযোগ্য। কারণ সেই মেঘের বেশির ভাগ অংশই বিষাক্ত মিথানল দিয়ে তৈরি হয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন।
মিথানলের এই মেঘ নাকি ৪৬ হাজার কোটি কিমি চওড়া। বিজ্ঞানীরা এই মেঘমণ্ডলের নাম দিয়েছেন স্যাজিটেরিয়াস বি২।
ন্যাশনাল রেডিও অ্যাস্ট্রোনমি অবজারভেটরির অন্যতম শীর্ষ কর্তা ব্যারি টার্নারের মতে, এই মেঘ আরও ভাল ভাবে বুঝতে সাহায্য করতে পারে যে কী ভাবে প্রাণের উদ্ভব হয়েছিল।
মহাকাশে থাকা মদের স্বাদ-গন্ধ কেমন হতে পারে, তারও সম্ভাব্য উত্তর রয়েছে বিজ্ঞানীদের কাছে।
মদের মেঘে ইথাইল ফর্মেট রয়েছে। যা একটি এস্টার। এই এস্টারের গন্ধ র্যাস্পবেরি ফলের মতো।
আবার অনেকের মতে এর গন্ধ রাম-এর মতো। তাই মনে করা হয়, ওই নক্ষত্রমণ্ডলের ওই মদের স্বাদ র্যাস্পবেরি স্বাদযুক্ত রামের মতো হতে পারে।
বিজ্ঞানীদের মতে, স্যাজিটেরিয়াস বি২ মেঘমণ্ডলের তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি থেকে -২৩২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হতে পারে। তাপমাত্রা এবং চাপ কম হওয়ার কারণে এই মেঘে রসায়নিক বিক্রিয়া অত্যন্ত ধীর গতিতে হয়।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.