মাসুদ রানা রাব্বানী: কনকনে শীত পড়তে শুরু করেছে রাজশাহীতে। রাজশাহী নগরীর ও আশপাশের এলাকাগুলো মধ্যে জনসমাগম এমন স্থানগুলি রাত ৯টার পর থেকেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। ঘরমুখি হচ্ছে মানুষ।
এরইমধ্যে জমে উঠতে শুরু করেছে রাজশাহী নগরীর ফুটপাতের পোশাক বিক্রির দোকানগুলো। তবে চাপ দেখা যায়নি ব্র্যান্ডের দোকান বা শপিং মলগুলোতে।
রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার আরডিএ মার্কেট, গনকপাড়া মার্কেট, কোট বাজার, কোট সংলগ্ন ফুটপাত, নিউমার্কেট ঘুরে দেখা যায়, গরম কাপড়ের ক্রেতার ঢল না থাকলেও গরম কাপড় কিনতে শুরু করেছে মানুষ। তবে গনক পাড়া এলাকার ফুটপাতের দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, নানা ধরনের শীতের কাপড় উঠেছে সেখানে। বিক্রিও হচ্ছে মোটামোটি। ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকায় এখানে জনসাধারণের আগ্রহও ভালো। প্রয়োজনীয় পোশাক বেশ সহজেই কিনছেন ক্রেতারা।
এসব দোকানে বিভিন্ন দামের ফুলহাতা শার্ট- টি-শার্ট, ট্রাউজার, নারীদের মোটা কাপড়ের টপস আর বিভিন্ন ডিজাইনের কার্ডিগান বা পশমী জামা পাওয়া যাচ্ছে। হাতা কাটা সোয়েটার, লং জ্যাকেট, শাল, মাফলার, উলের মোটা কাপড়, শর্ট ও লং ব্লেজার, জ্যাকেট আর ব্লেজারের মিশ্রণে তৈরি নতুন ধরনের শীতের পোশাকও পাওয়া যাচ্ছে।
একই সঙ্গে আছে কাপড়ের সঙ্গে মিলিয়ে শীতে ব্যবহার উপযোগী জুতা, মোজা ও বাহারি ডিজাইনের কম্বল বিক্রি করছেন দোকানীরা।
ব্র্যান্ডের দোকান বা শপিং মলে গলাকাটা দামের ভয়ে যেতে চান না মধ্যবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্তের অনেকেই। তাদের পছন্দ ফুটপাতের বাজার গুলি। তাছাড়া স্বল্প আয়ের মানুষদের হাতের নাগালের মধ্যে নানা ধরনের পোশাক মেলে ফুটপাতে।
কলোনী থেকে গরম কাপড় কিনতে আসা বিশাল বলেন, যেসব জ্যাকেট ফুটপাতে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় মিলে, দেখতেও ভাল ও রুচিসিল। ওই ধরনের জ্যাকেট থাই দেয়া দোকানে গেলে দ্বিগুন মূল্যেও পাওয়া যায়না। তাহলে বেশি দামের গরম কাপড় কিনে ফুটানি মেরে কি লাব।
করোনা মধ্যে এমনিতেই আয় রোজগার কম। সকল প্রকার নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি। পরিবারের সদস্যদের ভরন পোষন চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই ফুটানি না মেরে নাগালের মধ্যে গনক পাড়া ফুটপাত থেকে স্ত্রী কন্যার জন্য গরম কাপড় কিনলাম। তবে গত বারের চেয়ে এবার দাম দ্বিগুন। ৬০ টাকায় যে কাপড় গত শিতে কিনেছি সেটা এবার ১২০টাকায় কিনতে হলো। তাপরও কিছু করার নাই। শিত থেকে পরিবারের সদস্যদের রক্ষা করতে হবে বলেও জানান তিনি।
নওহাটা থেকে রাজশাহী কোর্টে মামলার কাজে আসা বাবুল নামের এক ব্যক্তি ফুটপাতে মনোযোগ দিয়ে গরম কাপড় কিনছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোর্টের কাজ শেষ তাই ভাবছি ছেলে মেয়েদের জন্য কিছু গরম কাপড় কিনে নিয়ে যাবো। গ্রামে কনকনে শীত পড়েছে। সেজন্য তিনি শীতের কেনাকাটা করছেন।
ফুটপাতের এই বাজার অনেকটা সহজ ও সুবিধাজনক বলে এখানেই সেরে নিচ্ছেন বাজার। তিনি বলেন, মার্কেটে গেলে দরদাম নিয়ে ঝামেলা হয়। বেশির ভাগ সময় আমাদের মতো দাম না জানা লোকদের ঠকতে হয়। এজন্য ফুটপাত থেকেই কিনছেন। এখানে দেখতে সুবিধা, চোখের সামনে খোলা-মেলাভাবে বিক্রি হয়। আবার দামও কম। তবে গত বারের চেয়ে দামটা বেশি। ক্রেতা শিউলী নামের এক নারী বললেন, তার দুই মেয়ের জন্য দুটি উলের গরম কাপড় কিনেছেন। তবে দাম বেশি বলে জানান তিনি।
কোর্ট ফুটপাতে শিতের কাপড় বিক্রেতা লাল মোহাম্মদ বলেন, আমি প্রায় ৩০ বছর যাবত শিতের কাপড়ের ব্যবসা করছি। তবে গতবারের চেয়ে এবার বেল্ট প্রতি ২ থেকে ৩ হাজার টাকা দাম বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। তাই খদ্দেরের কাছে দামটা একটু ধরে নিতে হচ্ছে। একই কথা জানালেন, কাপড় বিক্রেতা বাচ্চু।
মতিহার বার্তা ডট কম- ২৩ নভেম্বর ২০২০
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.