শিরোনাম :
গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার! ইজ়রায়েলকে জবাব দিতে সর্বোচ্চ নেতার ফতোয়ার কথাও ভুলতে চায় ইরান, এ বার কি পরমাণু যুদ্ধ?
ছাত্রদল থেকে আসা ভ্যানচালকের ছেলে ‘টেন্ডার মানিক’ এখন কোটিপতি

ছাত্রদল থেকে আসা ভ্যানচালকের ছেলে ‘টেন্ডার মানিক’ এখন কোটিপতি

ছাত্রদল থেকে আসা ভ্যানচালকের ছেলে ‘টেন্ডার মানিক’ এখন কোটিপতি
ছাত্রদল থেকে আসা ভ্যানচালকের ছেলে ‘টেন্ডার মানিক’ এখন কোটিপতি

বিশেষ প্রতিবেদক : মোহাইমিনুল ইসলাম মানিক। ছাত্রদলের নেতা ছিলেন রাজশাহী ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড সার্ভে ইনস্টিটিউট শাখার। বিএনপিকর্মী বাবা মনোয়ার ছিলেন ভ্যানচালক। কিন্তু ক্ষমতার পালাবদলের সাথে  সাথে  বদলে দল বদল করে ফেলেন মানিকও।  বর্তমানে তিনি মতিহার থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক।  সার্ভেয়ার পদে চাকরি করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। রুয়েটে বড় বড় কাজের ঠিকাদারী করেন বেনামে। এখন  সেই মানিকই বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক। নির্মাণ করেন আলিশান বাড়িও।  রাজশাহীতে তিনি টেন্ডার মানিক নামেই পরিচিত।

মতিহার থানা আওয়ামী লীগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা ইউনির্ভাসাল জানিয়েছেন, রাবিতে চাকরি করলেও তিনি দিনের বেশী সময় কাটান রুয়েটে। অভিযোগ রয়েছে, সরকারি আইনের ব্যতয় ঘটিয়ে ঠিকাদারি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন মোহাইমিনুল ইসলাম মানিক । যদিও সরকারি চাকুরি বিধি ১৯৭৯ এর ১৭ ধারায় বলা আছে, কোন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে সরকারি কার্য ব্যতীত অন্য কোন ব্যবসায় জড়িত হতে অথবা অন্য কোন চাকরি বা কাজ গ্রহণ করতে পারবেন না।

রাজশাহী নগরীর মেহেরচন্ডি এলাকার বিএনপি কর্মী মনোয়ার হোসেনের ছেলে মানিক রাজশাহী সার্ভে কলেজের ছাত্রদলের নেতা ছিলেন। তিনি বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বলের ঘনিষ্ঠ। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর মানিক তৎকালিন মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের হাত ধরে ছাত্রলীগে ভিড়েন। এর পর তিনি বাগিয়ে নেন মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির পদ।

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতার আর্শীবাদে অনেক ত্যাগী আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীকে পেছনে ফেলে রাতারাতি টেন্ডার মানিক হয়ে যান মতিহার থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

মানিক, হারুন ও মুফতি রনি (ছবিতে ডান থেকে)

রুয়েটের প্রকৌশল শাখার একটি সূত্র জানাচ্ছে, বর্তমানে টেন্ডার মানিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে নিজেই রুয়েটের প্রায় ৭২ লাখ টাকার ছয়টি কাজ করছেন। এর মধ্যে রয়েছে আইকন এন্টারপ্রাইজের নামে ৩৫ লাখ ১৮ হাজার, মেসার্স জনি ট্রেডার্সের নামে ছয় লাখ ২৬ হাজার, মেসার্স মাবরুকা ট্রেডার্সের ১২ লাখ ৭৩ হাজার, বসুন্ধরা এন্টারপ্রাইজের নামে ১১ লাখ ৭০ হাজার ও মুক্তার হোসেনের নামে পাঁচ লাখ ৮২ হাজার টাকার। টেন্ডার ছাড়াই কোটেশনের মাধ্যমে এ কাজগুলো হাতিয়েছেন টেন্ডার মানিক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রুয়েটের এক ঠিকাদার জানান, টেন্ডার মানিকের পার্টনার রয়েছেন রুয়েটের দুই কর্মকর্তা। এরা হলেন, রুয়েটের গবেষনা ও সম্প্রসারণ বিভাগের সহকারি রেজিষ্টার ও অফিসার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুফতি মো: রনি এবং রুয়েটের সহকারি প্রকৌশলী, রুয়েট অফিসার্স সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও রুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক হারুন-অর-রশিদ।

রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে রুয়েটর বর্তমান প্রশাসন কে জিম্মি করে রুয়েটের এই দুই কর্মকর্তা টেন্ডার আহবান ছাড়াই সরকারি নিয়ম নীতি লঙ্ঘন করে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে টেন্ডার মানিকের সঙ্গে কোটি কোটি টাকার কাজ করছেন বলেও অভিযোগ। রুয়েটের এই সিন্ডিকেটটি চাকুরীর পাশাপাশি বিভিন্ন ঠিকদারের বিভিন্ন নামের লাইসেন্স ব্যবহার করে প্রভাব খাটিয়ে কোটি কোটি টাকার কাজ হাতিয়ে নিচ্ছে।

রুয়েটের প্রধান ফটকের নির্মাণ কাজ করেছেন মানিক

সম্প্রতি রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ ও উপকরণের জন্য ৩৪০ কোটি ১৩ লাখ টাকার একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পেয়েছে। একনেক সভায় “রুয়েট অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প” নামের এই উন্নয়ন প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়।

এই প্রকল্পের আওতায় রুয়েটের তিনটি একাডেমিক ভবন, একটি প্রশাসনিক ভবন, একটি ইনস্টিটিউট ভবন, একটি করে ছাত্র-ছাত্রী হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল পাঁচতলা পর্যন্ত সম্প্রসারণ, একটি শিক্ষক কোয়ার্টার, একটি শিক্ষক ডরমেটরি, একটি অফিসার্স কোয়ার্টার, একটি স্টাফ কোয়ার্টার, মেডিক্যাল সেন্টার ভবন ও উপাচার্যের বাসভন নির্মাণ করা হবে।

এই প্রকল্পের আওতায় ১৩ টি ভবন নির্মাণ করা হবে য়ার ১১ টি হবে ১০ তলা বিশিষ্ট। রুয়েটের এই ব্যাপক উন্নয়ন কাজ সরকারি নিয়ম নীতি লঙ্ঘন করে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে হাতিয়ে নিতে বিভিন্ন ভাবে তৎপরতায় রয়েছেন টেন্ডার মানিকের নেতৃত্বে এই প্রভাবশালী টেন্ডার সিন্ডিকেট।

এ বিষয়ে মোহাইমিনুল ইসলাম মানিক ইউনির্ভাসাল২৪নিউজকে বলেন, ‘আমার নামে কোনো ঠিকাদারী লাইসেন্স নেই। আমি কোনো ঠিকাদারি কাজের সঙ্গেও জড়িত নই। তবে চাকরির আগে বিএমডিএতে  ঠিকাদার জাকারিয়া নামে এক ঠিকাদারের সঙ্গে কাজ করতাম।  আর হারুন-অর-রশিদ বলেন, কোনো অনিয়মের সঙ্গে আমি জড়িত নই। ঠিকাদার কাজও আমি করি না। এগুলো রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র  দাবি করে  তিনি বলেন, প্রতিপক্ষ অহেতুক ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। সূত্র: ইউনির্ভাসাল২৪নিউজ।

মতিহার বার্তা ডট কম – ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply