নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা’র ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজকে বহিরাগতরা ছুরিকাঘাতে করেছে। আজ রোববার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ রাবি শাখা ছাত্রলীগের সংগঠনিক সম্পাদক। তার গলায় ছুরিকাঘাত করায় বর্তমানে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতে নেয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় বহিরাগত রুমেল (২৬) নামের একজকে আটক করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। আটককৃত রুমেল নগরীর মতিহার থানাধিন কাজলা এলাকার বাবলুর রশীদের ছেলে।
ছুরিকাঘাতে ঘটনায় তাকে মারধর করে রাবির বঙ্গবন্ধু হলে আটকে পুলিশে খবর দেয় ছাত্রলীগ। পরে পুলিশ গিয়ে বহিরাগত রুমেলকে উদ্ধার করে মতিহার থানায় নিয়ে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রবিবার রাত ৮টার দিকে ইমতিয়াজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানোয়ার হোসেন সারোয়ার বঙ্গবন্ধু হলের পাশে দোকানে দাড়িয়েছিলেন। এ সময় পাঁচ-সাতটি মোটরসাইকেল নিয়ে বহিরাগত কয়েকজন যুবক ওই দোকানের সামনে আসে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে একজন দোকানে দাঁড়িয়ে থাকা ইমতিয়াজের গলায় আচমকা ছুরিকাঘাত করে দৌঁড় দেয়।
এদিকে, পালানোর সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী হামলাকারীদের একজনকে আটক করে বঙ্গবন্ধু হলের অতিথি কক্ষে নিয়ে যায়। এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য, হল প্রাধ্যক্ষ ও পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলেও বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাদের সামনেই আরিফকে বেধড়ক মারধর করেন।
পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তেজনাক হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্বয়ং ঘটনাস্থলে আসেন এবং আরিফকে থানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন। পুলিশি নিরাপত্তায় তাকে হল থেকে বের করার মুহূর্তে আবারও ছাত্রলীগ নেতাকর্মী আরিফের ওপর চড়াও হন এবং তাকে উপুর্যপুরী আঘাত করতে থাকেন। আরিফকে বাঁচাতে গিয়ে সহকারী প্রক্টর শিবলী ইসলাম, আবু সাঈদ মো. নাজমুল হায়দার, মতিহার জোনের ডিসি সাজিদ হোসেন ও মতিহার থানার ওসি (তদন্ত) মাহবুব আলম শরীরে আঘাত পান। পরে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে আরিফকে চিকিৎসার জন্য তৎক্ষণাত রামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘আমরা আরিফকে আটক করে পুলিশে খবর দেই। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে মারধর করে। পরে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে গেছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘আরিফকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’
ওসি মাহবুব আলম বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে দ্রæত ঘটনাস্থলে আসি। আমরা তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আরিফকে মারধর করে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে আমিসহ কয়েকজন শিক্ষক আঘাত পেয়েছেন। আরিফকে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। সুস্থ হওয়ার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্তারিত জানার পর তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা বাধন নামের এক যুবককে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতা মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয়। তবে সেই নেতার পরিচয় জানা যায়নি। এর কিছুক্ষণ পরই ইমতিয়াজকে ছুরিকাঘাতের এ ঘটনা ঘটে।
মতিহার বার্তা ডট কম– ২০ জানুয়ারী ২০১৯
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.