নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে আ.লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে ঘটনা ঘটেছে। আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নগরীর মতিহার থানাধিন বাজে কাজলার ফুলতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় দুইজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
এদের মধ্যে ২৮ নম্বর ওয়ার্ড (পশ্চিম) স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক জুবায়ের হাসান জনি (২৬) এর ডান পায়ে গুলি লেগেছে। তিনি কাজলার ফুলতলা এলাকার আসলামের ছেলে।
অপরজন, একই ওয়ার্ডের যুবলীগের সদস্য, একই এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে সুজন (২৮) তার বাম হাতের কনুই থেকে কজ্বি পর্যন্ত চাপাতির আঘাত রয়েছে।
স্থানীয় একাধিক সূত্র এবং আহতদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সম্মিলিতভাবে বালুর ব্যবসা করার জন্য ২০১০ সালে ফুলতলা ২৮ নম্বর ওয়ার্ড মতিহার থানা (পশ্চিম) আ’লীগের বহিস্কৃত সভাপতি আব্দুস সাত্তার বিভিন্ন জনের কাছে অর্থ আদায় করেন।
সেই অর্থ দিয়ে পরবর্তীতে কেনা হয় ড্রেজার ও বালিবাহি বোর্ড। কিন্তু পরিকল্পিত ভাবে বালুর ব্যবসাটি বন্ধ হয়ে যায়। ব্যাবসায়ে যারা অর্থ দিয়ে বিনিয়োগ করেছিল তারা একাধিক বার সেই অর্থ সাবেক সভাপতি আব্দুস সাত্তারের নিকট ফেরত চাইলেও এতে অসম্মতি জানান তিনি। এ বছর সেই ড্রেজারটি পুনরায় চালু করে ব্যবসা চালানোর পরিকল্পনা করেন আব্দুস সাত্তার। কিন্তু তাতে বাধা দেয় শেয়ারদাররা। পরে মিমাংসার আহ্বান জানালে তিনি মিমাংসা করেননি।
আজ শুক্রবার সকালে রাসিক ২৮ নং পশ্চিম ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক জুবায়ের হাসান জনি(২৬), কর্মী সুজন (২৮)সহ আরও অনেকে গিয়ে ড্রেজারটি ঠিক আছে কিনা দেখতে গেলে তাদের উপর চড়াও হয় আব্দুস সাত্তারের ছেলে টনি এবং ডনিসহ অন্তত ২০ জন।
এ সময় তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি এক পর্যায়ে ড্রেজারে থাকা অবস্থায় জনিকে উদ্দেশ্য করে গুলি ছোড়েন তারা। এতে জনির ডান পায়ে গুলি লাগলে সে ড্রেজার থেকে নিচে পড়ে যায় এবং সুজনকে ধারালো চাপাতি দিয়ে কোপানো হয়। এতে তার বাম হাতের কনুই থেকে কজ্বি পর্যন্ত অংশ ঝুলে যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন স্থানীয়রা। বর্তমানে তারা রামেক হাসপাতালের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধিন রয়েছে।
হাসপাতালে আহতাবস্থায় জুবায়ের হাসান জনি বলেন, ড্রেজার চালু করা নিয়ে বেশ কদিন থেকেই বহিস্কৃত আ.লীগ নেতা আব্দুস সাত্তারের সাথে স্থানীয়দের বিবাদ চলছিল।
আজ শুক্রবার সকালে আমরা ড্রেজার চেক করতে গেছি শুনে আব্দুস সাত্তার তার ছেলে টনি ও ডনিকে পিস্তল দিয়ে পাঠায়। তার সাথে আরও অন্তত ২০ জন এসে আমাদের মারধর করে। এরপর তারা আমাদের উদ্দেশ্যে তিনটি গুলি ছোঁড়ে, যার একটি আমার পায়ে লাগে।
এদিকে শুক্রবার সন্ধা পৌনে ৭টার দিকে মতিহার থানা পুলিশ ও মহানগর গোয়েন্দা শাখা’র ডিবি পুলিশ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথভাবে অভিযান চালায় সাত্তারের বাড়িতে। এ সময় সাত্তাতের বাড়ি থেকে বেশ কিছু ধারালো দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগরীর মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, ড্রেজার ব্যবসা সংক্লান্ত বিষয় নিয়ে এক পক্ষের হামলায় দুইজন আহত হয়েছে। তাদেরকে রামেক হাসপাতালের ৫নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ঘটনার সাথে জড়িতদের আটকে ও অস্ত্র উদ্ধারে সন্ধা পৌনে ৭টার দিকে সাত্তারের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু ধারালো দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। মামলা হবে বলেও জানান ওসি।
মহানগর পুলিশের মুখপাত্র মো. গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, গোলাগুলির ঘটনা শুনেছি। পুরো ঘটনা উদঘাটনে ও অপরাধিদের আটকে মাঠে কাজ করছে পুলিশ।
মতিহার বার্তা ডট কম – ১১ অক্টোবর ২০১৯
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.