শিরোনাম :
গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার! ইজ়রায়েলকে জবাব দিতে সর্বোচ্চ নেতার ফতোয়ার কথাও ভুলতে চায় ইরান, এ বার কি পরমাণু যুদ্ধ?
শিক্ষার্থীদের টিফিনের টাকা আত্মসাত করলেন রাজশাহী পিএন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা

শিক্ষার্থীদের টিফিনের টাকা আত্মসাত করলেন রাজশাহী পিএন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা

শিক্ষার্থীদের টিফিনের টাকা আত্মসাত করলেন রাজশাহী পিএন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা
প্রধান শিক্ষিকা পিএন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়

মতিহার বার্তা ডেস্ক: রাজশাহীর সরকারি পিএন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তৌহিদ আরার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে কেনাকাটায় রয়েছে ভয়াবহ দুর্নীতি।

অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষার্থীদের টিফিন না দিয়েও তা রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করেন প্রধান শিক্ষক। এভাবে টিফিনের মোটা অঙ্কের টাকা আত্মসাত করেছেন তিনি। এসব অনিয়মের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ হয়েছে।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ক্রয় কমিটির চাহিদাপত্র ছাড়াই নিজের ইচ্ছেমতো কেনাকাটা করেছেন প্রধান শিক্ষক তৌহিদ আরা। বিলও তোলা হয়েছে। কিন্তু এসব বিলে আছে ব্যাপক অসামঞ্জস্য। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ হলো, শিক্ষার্থীদের টিফিনের টাকা আত্মসাতের। শিক্ষার্থীদের ছুটির দিনেও রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে টিফিনের বিল। অভিযোগপত্রে এমন দুই দিনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগপত্র অনুসন্ধানে দেখা গেছে, একটি বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করে প্রধান শিক্ষক তৌহিদ আরা গেল বছরের ১৫ ও ১৬ মে সৃজনশীল প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, পরিশোধন ও উত্তরপত্র মূল্যায়ন সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের জন্য স্কুলের প্রভাতি এবং দিবাশাখার শিক্ষার্থীদের তৃতীয় পিরিয়ডের পর ছুটির ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু ছুটির এ দুইদিনও শিক্ষার্থীদের টিফিন দেওয়া হয়েছে বলে রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্কুলটির একাধিক শিক্ষক জানান, প্রধান শিক্ষক মাঝে মাঝেই বেতন আদায়, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, পরিশোধন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের বিশেষ বিশেষ দিন সৃষ্টি করে শিক্ষার্থীদের তৃতীয় বা চতুর্থ পিরিয়ডের পর ছুটি দিয়ে দেন। এর ফলে টিফিন সরবরাহের প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু এসব দিনেও টিফিন প্রদান করা হয়েছে বলে রেজিস্ট্রারে স্বাক্ষর করতে শিক্ষকদের বাধ্য করেন। এছাড়া ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজস করে কম দামের খাবার দিয়ে দামি খাবারের সরবরাহ দেখিয়ে টাকা আত্মসাত করেন।

এমনকি নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ছাত্রী জানিয়েছে, যেদিন তিন থেকে চারটি পিরিয়ডের পর স্কুল ছুটি হয়ে যায়- সেদিন টিফিন দেওয়া হয় না।

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কেনাকাটা ও মেরামতে দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ আছে। এর মধ্যে কম্পিউটার মেরামত বাবদ দুটি বিলে ৩৫ হাজার ৩০০ টাকার দুটি বিল প্রায় একই রকমের। এক সপ্তাহের ব্যবধানে স্কুলের ১০টি করে মোট ২০টি কম্পিউটারের সার্ভিসিং দেখানো হয়েছে। এছাড়া দুটি বিলেই কেনা দেখানো হয়েছে একটি করে দুই জিবি র‌্যাম, একটি করে মাদারবোর্ড, দুটি করে পাওয়ার সাপ্লাই এবং একটি করে হার্ডডিস্ক।

চলতি বছরের ১৫ মে প্রথম বিলটি করা হয়েছে ১৪ হাজার ৭০০ টাকার। আর এর এক সপ্তাহের মাথায় ২১ মে দ্বিতীয় বিলটি করা হয়েছে ১৬ হাজার ৭০০ টাকার। দুটি বিলেই শুধু হার্ডডিস্কের দাম ছাড়া বাকি সবগুলো পণ্যের দাম সমপরিমাণ।

স্কুলটির শিক্ষকরা জানান, ১০টি কম্পিউটার মেরামত করার পর এক সপ্তাহের মাথায় আরও ১০টি নষ্ট হবে এবং মেরামতের ক্ষেত্রে একইরকম সামগ্রীর প্রয়োজন পড়বে, এটা অবিশ্বাস্য। তাই বিল দুটি কাল্পনিক এবং ভুয়া।

এসব বিল দিয়েছে ‘পিকজেলস কম্পিউটার’ নামের একটি কম্পিউটার বিক্রি এবং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। ২০টি কম্পিউটার মেরামতের এক সপ্তাহ পর আবার ২৯ মে প্রতিষ্ঠানটির দেওয়া একটি বিলে দেখা যাচ্ছে, পিএন স্কুলের কাছে একটি কম্পিউটারের ইউপিএস বিক্রি করা হয়েছে ৫ হাজার টাকায়। একই বিলে একটি নোটবুক কম্পিউটার বিক্রি দেখানো হয়েছে ৪ হাজার ২০০ টাকায়। অথচ বাজারে ইউপিএসের দাম ৫ হাজারের কম। আর মাত্র ৪ হাজার ২০০ টাকায় কোনো নোটবুক পাওয়া যায় না। নোটবুকের এ বিল হাস্যকর।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, কম্পিউটার সংক্রান্ত সবগুলো বিলই ভুয়া। কোনো কম্পিউটার মেরারতও করা হয়নি, কিছু কেনাও হয়নি। পিকজেলস কম্পিউটারের সঙ্গে যোগসাজস করে ভুয়া বিলে প্রধান শিক্ষক এসব সরকারি অর্থ আত্মসাত করছেন। আর এ জন্য পিকজেলসকে দিতে হয় ৩০ শতাংশ টাকা। এ বিষয়ে কথা বলতে শনিবার পিকজেলসের ফোনে  যোগাযোগ করা হলে কেউ ফোন ধরেননি।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, গবেষণাগারের সরঞ্জামাদি বাবদ এক লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায়। গত ২১ এপ্রিল প্রধান শিক্ষক ভাউচারের মাধ্যমে ৯৯ হাজার ৯৯২ টাকা তোলেন। আসবাবপত্র মেরামত বাবদ এসেছিল আরও এক লাখ টাকা। ২৩ জুন তিনি পুরো টাকাটিই তোলেন। রাসায়নিক দ্রব্য কেনা বাবদ এসেছিল ২০ হাজার টাকা। ২৯ মে সে টাকাও তোলা হয়েছে। এছাড়া ব্যবহার্য দ্রবাদি বাবদ দুটি বিলে ১৯ হাজার ৯৫০ এবং বইপুস্তক বাবদ দুটি বিলে ৩০ হাজার টাকা তোলা হয়েছে। কিন্তু এসবের জন্য নিয়মানুযায়ী কোনো শিক্ষকের চাহিদাপত্র নেওয়া হয়নি। নিজের ইচ্ছেমতো এসব টাকা তুলে খরচ দেখিয়েছেন প্রধান শিক্ষক।

প্রধান শিক্ষক তৌহিদ আরা বলেন, ‘স্কুল পরিচালনার জন্য কেনাকাটা ক্রয় কমিটির মাধ্যমে করা হয়েছে। এর সমস্ত ডকুমেন্ট আমার কাছে আছে। আর টিফিনের টাকা আত্মসাতের অভিযোগও সঠিক না। একটি মহল পরিকল্পিতভাবে আমার সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করছে। সুত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন

মতিহার বার্তা ডট কম – ১২ অক্টোবর ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply