বগুড়া প্রতিনিধি: চাকরি পাইয়ে দেয়ার কথা বলে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আহসানুল হাসান লিটন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল শনিবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বাড়ি বগুড়া সদরের বুজরুক মাঝিড়া গ্রামে। প্রতারণার শিকার হয়ে নাটোরের হাসান আলী নামে এক ব্যক্তি বগুড়া সদর থানায় একটি মামলা করেন।
ওই মামলার অপর আসামি গ্রেপ্তার লিটনের স্ত্রী মনি বেগম। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, লিটন প্রথমে ২০১৬ সালের ২০ মার্চ নাটোর জেলার মাটিয়াপাড়া গ্রামের হাসান আলীর কাছ থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ে অফিসে চাকরি দেয়ার নাম করে তিন লাখ টাকা নেয়।
এর আগে হাসান আলীর সাথে লিটনের সাত লাখ ৫০ হাজার টাকায় চাকরি পাইয়ে দেয়ার চুক্তি হয়। সে মোতাবেক হাসান আলী তার পরিচিত রাজশাহীর পুঠিয়া থানার দোমাদী গ্রামের সুকতার আলী, একই গ্রামের কোরবান আলী এবং বাঁশপুকুর গ্রামের তারেক মাহমুদকে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকায় রেলওয়েতে চাকরি হবে বলে।
এরপর তারা আগ্রহী হয়ে গত ২০১৬ সালের ২০ ডিসেম্বর হাসান আলীসহ লিটনের বসতবাড়ি বগুড়ার বুজরুক মাঝিড়া গ্রামে গিয়ে ৪০ লাখ টাকা লিটনকে দেয়। এরপর লিটন গত ২০১৭ সালের ৬ জানুয়ারিতে হাসান আলীকে ফোন দিয়ে বলে তাদের মধ্যে হাসান আলী ও তারেক মাহমুদের রেলওয়েতে চাকরি হয়েছে আপনাদের নিয়োগপত্র নিয়ে যান।
তারপর তারা সেই নিয়োগপত্র নেয়। নিয়োগপত্র অনুযায়ী তাদের ২০১৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কর্মস্থলে যোগদানের কথা। কিন্তু তার আগেই প্রতারক লিটন আবারও হাসান আলীকে ফোন দিয়ে জানায় তাদের যোগদানের তারিখ পরিবর্তন হয়েছে, পরের তারিখ জানিয়ে দেয়া হবে।
এরপর লিটন ২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আবারও হাসান আলীকে ফোন দিয়ে জানায় আপনাদের সবার চাকরি এক সাথে হয়েছে। আপনারা নিয়োগপত্র এসে নিয়ে যান।
পরদিন সে বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি লিটনের বাড়িতে গেলে সে মহসিন আলী, সুকতার আলী, কোরবান আলী ও আশরাফুল ইসলামকে নিয়োগপত্র দেন। তারপর সবাইকে নিয়োগপত্র মোতাবেক নীলফামারী জেলার সৈদপুর রেলওয়ে অফিসে যোগদান করতে বলে।
এরপর তারা অফিসে যোগদান করতে গেলে সেখানকার লোকজন নিয়োগপত্র দেখে তাদের জানায় নিয়োগপত্রগুলো ভুয়া। পরে আহসানুল হক লিটনের সাথে তারা যোগাযোগ করে তাদের টাকা ফিরিয়ে দিতে বললে তালবাহানার এক পর্যায়ে টাকা তাদের ফেরত দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় লিটন।
প্রসঙ্গত, প্রতারক লিটনের সাথে মামলার বাদী হাসান আলীর পরিচয় হয় তার ভগ্নিপতি কোরবান আলীর ভাতিজি জামাই আলফাজের মাধ্যমে।
লিটন নিজেকে রেলের একজন বড় কর্মকর্তা হিসেবে দাবি করেন এবং চাইলেই এই বিভাগের বিভিন্ন পদে চাকরি দিতে পারেন। সেক্ষেত্রে প্রতিজনের জন্য তিনি ৭ লাখ ৫০ হাজার করে টাকা নেন।
এমন কথায় হাসান আলী উদ্বুদ্ধ হয়ে পরিচিত বিভিন্নজনের চাকরির জন্য টাকা তুলে লিটনের হাতে দেন। দীর্ঘদিনেও চাকরি দিতে না পারায় লিটন একজন প্রতারক বিষয়টি পরিষ্কার হয়। বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম বদিউজ্জামান এ প্রতিবেদক-কে বলেন, প্রতারিত ব্যক্তিরা থানায় অভিযোগ দিলে প্রতারক লিটনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার সাত দিনের রিমান্ডের জন্য আদালতে আবেদন করা হবে।
মতিহার বার্তা ডট কম – ১৩ অক্টোবর ২০১৯
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.