শিরোনাম :
গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার! ইজ়রায়েলকে জবাব দিতে সর্বোচ্চ নেতার ফতোয়ার কথাও ভুলতে চায় ইরান, এ বার কি পরমাণু যুদ্ধ?
ভর্তিচ্ছুক রাবি পরীক্ষার্থীদের থেকে মেস মালিকদের অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ

ভর্তিচ্ছুক রাবি পরীক্ষার্থীদের থেকে মেস মালিকদের অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ

ভর্তিচ্ছুক রাবি পরীক্ষার্থীদের থেকে মেস মালিকদের অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ
ভর্তিচ্ছুক রাবি পরীক্ষার্থীদের থেকে মেস মালিকদের অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাবিতে ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীতে ভরে উঠেছে নগরীর বিভিন্ন মেস ও আবাসিক হোটেলগুলো। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা রাবি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি পরীক্ষার্থীদের মেসে অবস্থানের বিষয়ে অর্থের পরিমাণ নির্ধারণ করে দেয়া হলেও তা মানছে না মেস মালিকরা।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও রাজশাহী মেস মালিক সমিতির নির্দেশনা অগ্রাহ্য করে ভর্তিচ্ছুদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে মালিক পক্ষ। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

গত বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দফতরে প্রক্টরিয়াল বডি ও রাজশাহী মেস মালিক সমিতির ভর্তিচ্ছুদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের বিষয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মানবিক বিবেচনায় প্রতিজন ভর্তিচ্ছুর কাছ থেকে সর্বোচ্চ একবার ১শ টাকা নিতে পারবে মেস মালিকরা।

এছাড়া মেস মালিকরা যেন অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতে না পারে সেজন্য মেস এলাকাগুলোতে মেস মালিক সমিতির চারটি মনিটরিং সেল ও একটি হেল্প ডেস্ক কাজ করবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়।

নগরীর বিনোদপুর, কাজলা, তালাইমারি এলাকার কয়েকটি মেসের আবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েকটি মেস প্রশাসন ও মেস মালিক সমিতির নির্দেশ মেনে চলছে। প্রতিজনের কাছে একবার সর্বোচ্চ ১শ টাকা নেয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ মেস মালিক তা মানছেন না।

প্রত্যেক পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকের কাছে থেকে প্রতি রাতের জন্য ১শ টাকা থেকে ৬শ টাকা নিচ্ছে মেস মালিকরা।

শিক্ষার্থীরা বিষয়টি প্রতিবাদ করলে মেস মালিকরা বলছেন, পুলিশ ও মেস মালিক সমিতি তাদের টাকা নিতে বলেছেন।

জানতে চাইলে মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, এ ধরনের কোন নির্দেশনা পুলিশ মেস মালিকদের দেয়নি। তবে নিরাপত্তার জন্য মেসে অবস্থানকারী পরীক্ষার্থীর পরিচয় লিখে রাখার নির্দেশ দিয়েছি।

ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ে পুলিশ কেন বলতে যাবে ? সেটা মেস মালিকদের ব্যাপার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর কাজলা অক্ট্রয় মোড়ে এলাকায় মুরাদ ম্যানসন ছাত্রবাস, সাগর ছাত্রাবাস, তাপস ছাত্রাবাস, বিনোদপুর এলাকার রমেশা ছাত্রী মহল, তালাইমারি এলাকার বিসমিল্লাহ ছাত্রীনিবাস, নুপুর ছাত্রীনিবাস, উপর ভদদ্রা এলাকার শিরিন লজ ছাত্রী নিবাসসহ কয়েকটি মেস পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতি রাতের জন্য ২শ করে টাকা নিচ্ছে। এছাড়া বিনোদপুর এলাকার পাটোয়ারী টাওয়ার ছাত্রীনিবাস, গফুর মঞ্জিল, মাহিন ছাত্রীনিবাস, দৃষ্টি ছাত্রীনিবাস, অপূর্ব ছাত্রীনিবাস, এনএন ছাত্রাবাস, শাহাবুদ্দিন ছাত্রবাস, স্বপ্নীল ছাত্রাবাসসহ বেশ কয়েকটি মেস প্রতি রাতের জন্য ১শ টাকা নেয়া হচ্ছে। বিনোদপুরের ইখওয়ান ছাত্রীনিবাস প্রতি রাতের জন্য ১৫০ টাকা নিচ্ছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, ছাত্রী মেসের মালিকরা সবচেয়ে বেশি অর্থ নিচ্ছে। কারণ ছেলেরা মেস মালিকদের সঙ্গে দেন-দরবার করতে পারলেও মেয়েরা মালিকদের কথার বাইরে যেতে পারে না। মেয়েরা প্রতিবাদ করলে তাদের মেস থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। তাই অধিকাংশ ছাত্রীনিবাসের শিক্ষার্থীরা মালিকদের অতিরিক্ত অর্থ দিতে বাধ্য হচ্ছে।

জানতে চাইলে পাটোয়ারী টাওয়ারের মালিক হাবিবা আক্তার বলেন, কোটি কোটি টাকা দিয়ে মেস বানিয়েছি। সেখানে ১শ টাকার জন্য আমি মরে যাবো? আমি ভর্তি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতিরাতের জন্য ১শ টাকা করে নিচ্ছি। শুনেছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আর মেস মালিক সমিতি কতো টাকা নিতে হবে ঠিক করে দিয়েছে। কিন্তু সমিতি আমাকে এ ব্যাপারে কিছু জানায়নি।

নগরীর উপর ভদ্রা এলাকার শিরিন লজ ছাত্রীনিবাস প্রতি রাতের জন্য ২শ টাকা করে নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ছাত্রীনিবাসের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, ভর্তিচ্ছু রাখার জন্য মেসটির মালিক রাবি প্রশাসন ও মেস মালিক সমিতির নির্ধারিত অর্থের অতিরিক্ত দাবি করেছে। মেসটির মালিক তাদের বলেন, এই সিদ্ধান্ত বড় বড় মেসগুলোর জন্য, তার মেসের জন্য নয়।

এ বিষয়ে জানতে শিরিন লজের মালিক বা মেসের ম্যানেজার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এ দিকে মন্ডলের মোড় এলাকার গফুর মঞ্জিলে ভর্তিচ্ছুদের কাছ থেকে ২শ টাকা নেয়া হচ্ছে। অভিযোগ আছে, মেসে যেসব পরীক্ষার্থীর পরিচিত কেউ নেই, তাদের কাছ থেকে পুরো এক মাসের ভাড়া নেয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে গফুর মঞ্জিলের মালিক অমিত হাসান বলেন, পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে এক মাসের ভাড়া নেয়া হচ্ছে এটা সত্য নয়। অনেকে আগে থেকেই সিট নিয়ে রেখেছেন তাদের কাছ থেকে শুধু অক্টোবর মাসের ভাড়া নেয়া হচ্ছে। এছাড়া পরীক্ষার্থীদের কাছে এক রাত থাকলে ১শ টাকা আর এক রাতের বেশি যত দিন থাক ২শ টাকা নেয়া হচ্ছে।

রাজশাহী মেস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইসমাঈল হোসেন বলেন, আমি আজ সোমবার বিকেলেই রমেশা মহল, পাটোয়ারী টাওয়ারসহ সব মেসে বলে এসেছি যেন ভর্তি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ একবার ১শ টাকার বেশি না নেয়া হয়। কয়েকটি মেসের বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ পেয়েছি। এভাবে এতো বেশি টাকা নেয়া আসলেই অমানবিক কাজ। আমি আবারও তাদের বলবো তারা যেন নির্ধারিত অর্থের বেশি না নেয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, ভর্তি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে মেস মালিকরা অতিরিক্ত অর্থ যেন না নিতে পারে, সেজন্য মালিক সমিতিকে ডেকে কথা বলেছি। তারা আমাদের কথা দিয়েছেন। এমনকি তারা অতিরিক্ত অর্থ নেয়া প্রতিরোধের জন্য মনিটরিং সেল গঠনের কথাও বলেছে। তারপরও মালিকরা তা মানছে না।

তিনি আরো বলেন, এখানে আসলে আমাদের কিছু করার থাকে না। কারণ মেসগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের ব্যক্তিগত মালিকানার প্রতিষ্ঠান। তারপরও আমি মালিক সমিতিকে জানাবো বিষয়টি যেন তারা সমাধান করেন।

প্রসঙ্গত, আগামীকাল ২২ অক্টোবর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ সেশনে ৫৮টি বিভাগ ও দুটি ইন্সটিটিউটে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এবারের ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন জমা পড়েছে তিন লাখ ১৬ হাজার ১২০টি। আবেদন করেছেন এক লাখ ২১ হাজার পরীক্ষার্থী।

মতিহার বার্তা ডট কম – ২১ অক্টোবর ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply