নিজস্ব প্রতিবেদক: মানুষ মানুষের জন্য ভুপেন হাজারিকার এই গানের মতোই সত্য হলো রাজশাহী মহানগরীর এক শারীরিক প্রতিবন্ধী মেধাবী রাবি শিক্ষার্থী মোসাঃ রাজিয়া সুলতানা রুমকির জীবনে।
রাজশাহী মহানগরীর আ’লীগ নেতার সুদৃষ্টিতে নতুন জীবনের দ্বার প্রান্তে শারীরিক প্রতিবন্ধী মেধাবী শিক্ষার্থী রুমকি। তার লেখাপড়ার সকল দায়িত্ব নিলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ডাবলু সরকার।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে নগরীর পাঠানপাড়াস্থ রুমকির নিজ বাড়ীতে গিয়ে পরিবারের সাথে কথা বলে তার সমস্ত লেখা পড়ার দায়িত্ব নেন ডাবলু সরকার।
এসময় রাজিয়া সুলতানা রুমকির হাতে তাৎক্ষণিক নগদ অর্থ সহায়তা প্রদানও করেন ডাবলু।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ৯ নং ওয়ার্ড আ’লীগ সভাপতি মোঃ আশরাফ উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন, নগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক মোঃ সাইফুল ইসলাম সানি, ৯ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগ সভাপতি রাফিউল ইসলাম হিমেল ও ছাত্রলীগ কর্মী ইসমাইল হোসেন ইভেন প্রমূখ।
এদিকে রুমকির মা নাজনীন বেগম জানান, আমার মেয়ের শারীরিক প্রতিবন্ধী মেধাবী মেয়েটির দায়িত্ব রাজশাহী মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ডাবলু সরকার নেওয়ায় আমি খুব খুশি হয়েছি। আমি ডাবলু সরকারের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া কামনা করছি।
শারীরিক প্রতিবন্ধী মেধাবী ছাত্রী মোসাঃ রাজিয়া সুলতানা রুমকি রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানাধীন পাঠানপাড়া এলাকার পিকআপ ভ্যান চালক মোঃ খন্দকার হফিজুর রহমান ও নাজনীন বেগমের কণ্যা।
দুই ভাই বোনের মধ্যে রুমকি বড়। রুমকি জন্মলগ্ন থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। কোমর থেকেই তার দুই পা অকেজো। হুইল চেয়ারে বসেই জীবন যাপন করতে হয় তাকে।
শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে দীর্ঘ সংগ্রাম শেষে ভর্তি হয়েছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০১৮-১৯ সেশনে আরবি বিভাগের প্রথম বর্ষে।
কিন্তু আরবি বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলা ভবনের তৃতীয় তলায় হওয়ায় নিচতলা থেকে তিনতলা ওঠে ক্লাস করা রুমকির পক্ষে মোটেও সম্ভব হয়ে উঠছিল না। প্রতিদিন সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে ক্লাস করা দুষ্কর হওয়ার কথা রাবি প্রশাসনকে জানান।
অবশেষে গত রবিবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) রুমকিকে বাংলা বিভাগে ভর্তি করা হয়। বাংলা বিভাগে ভর্তি সুযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুস সোবাহান।
বাংলা বিভাগে ভর্তি হওয়ার বিষয়টি শুনে শারীরিক প্রতিবন্ধী মোসাঃ রাজিয়া সুলতানা রুমকি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, হুইল চেয়ারে ২০১৫ সালে মাধ্যমিকে বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ৪.৩৯ এবং ২০১৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে সরকারী মহিলা কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে ৪.০৮ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।
এরপর পিকআপ ভ্যান চালক বাবা আর গৃহিণী মায়ের অকুণ্ঠ সমর্থন আর শত সংগ্রাম শেষে ২০১৮-১৯ সেশনে রাবির আরবি বিভাগে ভর্তি হয় রাজিয়া। কিন্তু আরবি বিভাগ তিন তলা হওয়ায় তার কষ্ট শুনে বাংলা বিভাগে ভর্তি নেয় রাবি প্রশাসন।
মতিহার বার্তা ডট কম-০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.