শিরোনাম :
গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার! ইজ়রায়েলকে জবাব দিতে সর্বোচ্চ নেতার ফতোয়ার কথাও ভুলতে চায় ইরান, এ বার কি পরমাণু যুদ্ধ?
যেসব অভ্যাস জনপ্রিয়তা বাড়ায়

যেসব অভ্যাস জনপ্রিয়তা বাড়ায়

ইসলামীক ডেস্ক মুমিন কখনো নিছক জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্য কোনো কাজ করে না। মুমিনের সব কাজ হয় একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। কিন্তু আল্লাহ যখন কাউকে ভালোবাসতে শুরু করেন, গোটা জগৎ তখন এমনিতেই তার প্রেমে পড়ে যায়। সে আসমান ও জমিনের বাসিন্দাদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ যখন কোনো বান্দাকে ভালোবাসেন তখন তিনি জিবরাঈল (আ.)-কে ডেকে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালোবাসেন, কাজেই তুমিও তাকে ভালোবাস। তখন জিবরাঈল (আ.)-ও তাকে ভালোবাসেন এবং জিবরাঈল (আ.) আকাশের অধিবাসীদের মধ্যে ঘোষণা করে দেন যে আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালোবাসেন। কাজেই তোমরা তাকে ভালোবাস। তখন আকাশের অধিবাসীরা তাকে ভালোবাসতে থাকে। অতঃপর পৃথিবীতেও তাকে সম্মানিত করার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। (বুখারি, হাদিস : ৩২০৯)

মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা হলো তারা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে চায়, একটু প্রশংসা পেতে চায়। এই চাহিদা পূরণ করতে হলে একজন মানুষকে আল্লাহর প্রিয় কাজগুলো করতে হবে। রাসুল (সা.)-এর আদর্শ অনুযায়ী জীবন গড়তে হবে। কোনো ব্যক্তি যখন আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর দেখানো পথে জীবন পরিচালনা করবে, সে এমনিতেই সবার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। আজ আমরা আলোচনা করব এমন কিছু অভ্যাস নিয়ে যেগুলো অর্জন করতে পারলে একজন মানুষ সহজে জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।

হিংসা ত্যাগ করা

মানবচরিত্রের যেসব খারাপ দিক আছে তার মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ মারাত্মক ক্ষতিকারক এবং সংক্রামক। এই হিংসা মানুষের সুখময় ও শান্তিপূর্ণ জীবনকে এলোমেলো করে দেয়। তাই ইসলামে অন্যের প্রতি হিংসা পোষণ করা নিষিদ্ধ। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা অবশ্যই হিংসা পরিহার করবে। কারণ আগুন যেভাবে কাঠকে বা ঘাসকে খেয়ে ফেলে, তেমনি হিংসাও মানুষের নেক আমলকে খেয়ে ফেলে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯০৩)

ভ্রাতৃত্বসুলভ আচরণ

পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ ও ভালোবাসার মাধ্যমে সামাজিক শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় থাকে। এ কারণেই মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে মুমিনদের পরস্পর ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই, সুতরাং তোমরা দুই ভাইয়ের মাঝে মীমাংসা করে দাও।’ (সুরা হুজুরাত, আয়াত : ১০)

এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন আল্লাহ বলবেন, আমার জন্য যারা একে অন্যকে ভালোবেসেছিলে তারা কোথায়? আমি আজ তাদের আমার ছায়ায় আশ্রয় দেব। আজকের এই দিনে আমার ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া নেই।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৫৬৬)

ভালো কাজে সহযোগিতা করা

মহান আল্লাহ প্রত্যেক মুমিনকে সৎ কাজে আদেশ ও অসৎ কাজে বাধা প্রদানের দায়িত্ব দিয়েছেন। কেউ যখন তার জীবনে এই অভ্যাসটি গড়ে তুলতে পারবে, ভালো কাজে আত্মনিয়োগ ও সহযোগিতা করবে, সে এমনিতেই জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। কোরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা তাকওয়া ও ভালো কাজে পরস্পরের সহযোগিতা করো। পাপাচার ও অন্যায় কাজে সহযোগিতা করো না।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত : ২)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিন মুমিনের জন্য আয়না স্বরূপ। মুমিন মুমিনের ভাই। সে তার জমি সংরক্ষণ করে এবং তার অনুপস্থিতিতে তাকে হেফাজত করে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯১৮)

পরোপকার

মানুষের উপকার করা মুমিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। কারণ নিজের স্বার্থকে বড় করে না দেখে অন্যকে প্রাধান্য দেওয়া খুবই কঠিন কাজ। যারা এমন করতে পারবে, তারা অবশ্যই জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। মহান আল্লাহ নিজেই পবিত্র কোরআনে এ ধরনের ব্যক্তিদের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, ‘তারা (আনসাররা) নিজেদের ওপর (মুহাজিরদের) প্রাধান্য দেয়। যদিও নিজেদের প্রয়োজন ও অভাব থাকে।’ (সুরা হাশর, আয়াত : ৯)

কাউকে ছোট বা তুচ্ছ মনে না করা

প্রিয় হওয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে—কাউকে ছোট বা তুচ্ছ মনে না করা বরং হাসিমুখে সবাইকে বরণ করা। তেমনি কোনো কাজকেই ছোট মনে না করা। অনেকে তার অধীন বা পদবিতে ছোট অন্য কর্মচারীদের তুচ্ছ ভাবেন, এটা ব্যক্তিত্বহীনতার পরিচায়ক। একজন মুমিন এমনটি করতে পারে না। একদিন প্রিয় নবী (সা.) সাহাবি হজরত আবু জর (রা.)-কে বলেছেন, ‘কোনো ভালো কাজকে তুচ্ছ মনে করবে না। এমনকি তা যদি তোমার ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করার বিষয়েও হয়। (মুসলিম, হাদিস : ২৬২৬)

সামর্থ্য অনুযায়ী উপঢৌকন দেওয়া

সামর্থ্য অনুযায়ী হাদিয়া দেওয়া রাসুল (সা.)-এর সুন্নত। এতে পারস্পরিক ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) মুমিনদের পারস্পরিক হৃদ্যতার পথনির্দেশ করেছেন এভাবে—‘তোমরা একে অন্যকে হাদিয়া-তোহফা দাও। এতে তোমাদের পারস্পরিক ভালোবাসা সৃষ্টি হবে। (আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৫৯৪)। যখন কোনো মানুষ আল্লাহর জন্য কাউকে ভালোবেসে হাদিয়া দেবে, তখন সে আল্লাহর সন্তুষ্টির পাশাপাশি মানুষের কাছেও প্রিয় হয়ে উঠবে।

সালাম আদান-প্রদান

মুমিনরা পরস্পর দেখা হলেই সালাম আদান-প্রদান করার মাধ্যমে একে অপরের জন্য দোয়া করে। এর  মাধ্যমে পারস্পরিক সম্প্রীতি সৃষ্টি হয়। নেকি অর্জন হয়। এ কারণেই রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা তোমাদের মধ্যে সালামের প্রসার ঘটাও।’ (মুসলিম, হাদিস : ৫৪)। তাই যাঁরা দুনিয়াতে জনপ্রিয় হতে চান এবং মহান আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে চান, তাঁরা উপরোক্ত অভ্যাসগুলো গড়ে তুলতে পারেন। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে উত্তম চরিত্র অর্জনের তাওফিক দান করুক।

মতিহার বার্তা ডট কম –১৯ মার্চ, ২০২০

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply